ইসলামাবাদ: পুলওয়ামা সন্ত্রাসে জইশ-ই-মহম্মদের হাত থাকার দাবির স্বপক্ষে ভারত ডসিয়ার বা তথ্যপঞ্জির দেওয়ার পরও আরও তথ্যপ্রমাণ চাইল পাকিস্তান। ইসলামাবাদের বক্তব্য, ভারতের ডসিয়ারের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ‘প্রাথমিক তদন্তে’ পাওয়া তথ্য ভারতকে দেওয়া হয়েছে। জঙ্গি ঘাঁটি আছে বলে ভারতের ডসিয়ারে যে ২২টি ‘নির্দিষ্ট এলাকার’ উল্লেখ রয়েছে, সেখানে তল্লাসি চালিয়ে কিছুই মেলেনি বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। আবেদন এলে তারা ওইসব জায়গা ঘুরে দেখার অনুমতি দিতে আগ্রহী বলে জানানো হয়েছে পাক বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে। তারা বলেছে, ধৃত ৫৪ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, তবে পুলওয়ামাকাণ্ডে তাদের যুক্ত থাকার কোনও বিস্তারিত প্রমাণ এখনও মেলেনি। একইভাবে ভারতের উল্লেখ করা ২২টি নির্দিষ্ট এলাকায় অভিযান চালিয়েও দেখা গিয়েছে, কোথাও কোনও সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি নেই। অনুরোধ এলে পাকিস্তান এসব এলাকায় যাওয়ার অনুমতি দিতে রাজি।
পাকিস্তান সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি মাফিক তাদের প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্য, সেইসঙ্গে একগুচ্ছ প্রশ্নও ভারতকে দিয়েছে বলে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে। বলেছে, ইসলামাবাদের কূটনৈতিক মহলকেও এ নিয়ে অবহিত করা হয়েছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় জইশ যোগ, পাকিস্তানে জইশের ঘাঁটি ও তার নেতাদের থাকার তথ্যপ্রমাণ সম্পর্কে ২৭ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লির পাকিস্তানি অস্থায়ী হাইকমিশনারকে বিস্তারিত, সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ দেয় ভারত। পাক বিদেশমন্ত্রকের দাবি, ওই তথ্যপঞ্জি পেয়েই পাকিস্তান তদন্ত টিম তৈরি করে, তদন্তের ব্যাপারে বেশ কিছু লোককে আটক করে, ভারতের নথিপত্রের মূল ভিত যে সোস্যাল মিডিয়া কনটেন্ট, তার টেকনিক্যাল দিকের ওপর কাজ শুরু করে। ভারতের ডসিয়ারটি ৯১ পৃষ্ঠার, ৬টি ভাগে। এর মধ্যে শুধু দ্বিতীয় ও তৃতীয় অংশটি পুলওয়ামা নাশকতা সংক্রান্ত। বাকিগুলিতে আছে সাধারণত, যেসব অভিযোগ তোলা হয়, সেসব। পাকিস্তান জোর দিয়েছে শুধু পুলওয়ামা হামলা সংক্রান্ত অংশের ওপর।
পাক বিদেশমন্ত্রকের দাবি, তদন্ত প্রক্রিয়ায় ভারতের দেওয়া তথ্যের সব দিক বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হয়। আদিল দারের পুলওয়ামা নাশকতার দায় স্বীকারোক্তির ভিডিও, সেটি ও পুলওয়ামা হামলার সমর্থনে বার্তা ছড়াতে যেসব হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম নম্বর ব্যবহার করা হয়, সেগুলি পরীক্ষা করা হয়েছে। একটি নিষিদ্ধ সংগঠনের ৯০ জনের তালিকা, সন্ত্রাসবাদের ট্রেনিং চলে বলে অভিযোগ, এমন ২২টি জায়গার তালিকাও খতিয়ে দেখা হয়।
ভারতের দেওয়া জিএসএম ফোন নম্বরের কনট্যাক্ট ও কার্যকলাপের বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করতে সার্ভিস প্রোভাউডারদের আবেদন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পাক বিদেশমন্ত্রক। হোয়াটসঅ্যাপ থেকে সহায়তার আবেদনও পেশ করা হয়েছে মার্কিন সরকারের কাছে। ভারতের কাছে যে বাড়তি তথ্য চাওয়া হয়েছে, সেগুলি তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে জরুরি বলে জানিয়েছে তারা।