লেলিনগ্রাদ: স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আগুণ লেগে গিয়েছিল। বিপদের মুখে  চিৎকার করে অন্যদের সতর্ক করেছিল পোষা কুকুর ম্যাটিলদা। আদরের ওই পোষ্যের চিৎকারে প্রাণে বেঁচেছেন চার বয়স্ক রোগী। কিন্তু এভাবে অন্যদের প্রাণরক্ষা করতে গিয়ে তার শরীরে বেশিরভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছে। সে সন্তানসম্ভবা। ফলে ম্যাটিলদার জন্য এখন উদ্বিগ্ন মানুষজন থেকে পশুপ্রেমী সংগঠন। তার চিকিৎসার খরচ জোটাতে চলছে অর্থ সংগ্রহের কাজ।


ম্যাটিলদা আর পাঁচজনের সঙ্গে মিলেমিশে, হেসেখেলে থাকত। বড় আদরের। কেউ আবার আদর করেই কুকুরটিকে ডাকতেন মটইয়া বলে। তার কর্তব্যবোধও প্রখর। সেদিনই রাশিয়ার লেলিনগ্রাদে একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আগুন লেগেছিল। ম্যাটিলদা তারস্বরে চিৎকার করে সতর্ক করে দিয়েছিল। আগুন গ্রাস করার আগেই অ্যাম্বুল্যান্স এসে বিপদগ্রস্ত চারজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আসে দমকলও। কিন্তু আগুন নেভাতে ব্যস্ত দমকলকর্মীরা ভুলে গিয়েছিলেন ওই কুকুরটির কথা। আগুনের খবর পেতেই ঘণ্টাখানের পর সেখানে হাজির হন এক সাংবাদিক। টেলিভিশনের চ্যানেলের ওই সাংবাদিকের চোখে পড়ে, কুকুরটি আগুনে পুড়ে গিয়েছে। যন্ত্রণায় ছটফট করছে। এই খবর সম্প্রচারিত হতেই পিটার্সবার্গের পশুপ্রেমী সংগঠন ও সমাজকর্মী আলেক্সজান্ডার ও এলিনা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তারা কুকুরটিকে উদ্ধার করে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। আগুনে দেহের বেশ কিছু অংশ পুড়ে গিয়েছে। ম্যাটিলদার মুখ, ঘাড়, তলপেট গুরুতরভাবে পুড়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করতে গিয়েই জানতে পারেন ম্যাটিলদা সন্তানসম্ভবা। ফলে চিকিৎসকরা আরও ভাল করে খুটিয়ে দেখেন তাকে। এক চিকিৎসক জানিয়েছেন ম্যাটিলদা সন্তানেরা সুস্থ রয়েছে। তাদের কোনও ক্ষতি হয়নি। এমনকি আগামী সপ্তাহে ম্যাটিলদা তাদের জন্ম দিতে পারবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন ওই চিকিৎসক। কুকুরটির চিকিৎসার খরচ জোটাতে টাকা তুলতেও শুরু করেছেন স্থানীয় মানুষজন। যে ক্লিনিকে ম্যাটিলদার চিকিৎসা চলছে তারাও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিদিন তার অবস্থার কথা জানাচ্ছেন। চিকিৎসায় সে কেমন সাড়া দিচ্ছে, কেমন আছে, খাওয়াদাওয়া করছে কিনা এমন নানান আপডেট থাকছে ম্যাটিলদার ’মেডিক্যাল বুলেটিন‘-এ।

সকলের এখন একটাই প্রার্থনা, তাড়াতাড়ি ভাল হয়ে উঠুক ম্যাটিলদার। সামনেই যে তার আরও এক গুরু দায়িত্ব। সন্তানের জন্ম দিতে চলেছে। নতুন প্রাণের জন্ম দিতে চলেছে। মায়ের দায়িত্ব যে পালন করতেই হবে ম্যাটিলদাকে।