কিভ: ফের রাশিয়ার (Russia Ukraine Conflict) বিরুদ্ধে নাগরিক অপহরণের অভিযোগ তুলল ইউক্রেন। তাদের দাবি, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গত একমাসে ৪ লক্ষ ২ হাজার ইউক্রেনীয়কে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়েছে রাশিয়া। সকলকে পণবন্দি করে রাখা হয়েছে, যাতে তাঁদের হাতিয়ার করে ইউক্রেনকে মাথানত করতে বাধ্য করা যায়। ইউক্রেনের ন্যায়পালিকা ল্যুদমিলা ডেনিসোভা জানিয়েছেন, রাশিয়ার হাতে বন্দি ইউক্রেনীয় নাগরিকদের মধ্যে ৮৪ হাজার শিশু রয়েছে। বন্দি ইউক্রেনীয়রা (Ukrainian Citizens) নামমাত্র খাবার এবং জল পাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ইউক্রেনীয় নাগরিক যাঁরা এই মুহূর্তে রাশিয়ায় রয়েছেন, তার একটি পরিসংখ্যান দিয়েছে ক্রেমলিনও, যার সঙ্গে কিভের পরিসংখ্যানের বিশেষ ফারাক নেই। তবে রাশিয়ার দাবি, ওই সমস্ত ইউক্রেনীয় নাগরিক স্বেচ্ছায় ইউক্রেন ছেড়ে রাশিয়া চলে গিয়েছেন।


এর আগে, সম্প্রতি কিভের তরফে জানানো হয় যে,, রুশ সেনা (Russian Army) প্রায় ২ হাজার ৫০০ ইক্রেনীয় শিশুকে অপহরণ করেছে। শুধু তাই নয়, উদ্ধারকার্যের নামে নিরীহ ইউক্রেনীয় নাগরিকদের অজ্ঞাত জায়গায় ধরে নিয়ে গিয়ে, দাসত্বের শৃঙ্খলে বেঁধে ফেলা হচ্ছে বলেও দাবি ইউক্রেনের। দেশের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেনো দাবি করেন যে, শুধুমাত্র ১৯ মার্চই জোরপূর্বক পূর্ব ডনেৎস্ক থেকে ২ হাজার ৩৮৯ শিশুকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আন্তর্জাতিক মানবিকতা আইন অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে নিরীহ নাগরিকদের অপহরণ অপরাধযোগ্য কাজ বলে রাশিয়াকে স্মরণ করিয়ে দেন ওলেগ। তাঁর বক্তব্য, “অভিভাবকের নিরাপদ ছত্রছায়া থেকে আমাদের ছেলেমেয়েদের বঞ্চিত করছে রাশিয়া। রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে তাদের জীবনকে ঝুকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”


রাশিয়া যুদ্ধাপরাধী!


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia Ukraine War) ইতিমধ্যেই একমাস পার করে ফেলেছে।  যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে দফায় দফায় দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হলেও, এখনও সমাধান সূত্রে এসে উপনীত হতে পারেনি তারা। তার মধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধের মামলা দায়েরের দাবি উঠছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী বলে উল্লেখ করেছিলেন। এ বার আমেরিকা-সহ বাকি জি-৭ দেশগুলি (G-7 Countries), যার মধ্যে রয়েছে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানিস ইতালি, জাপান, ব্রিটেন—রাশিয়ার বিরুদ্ধে তদন্তে সায় জানিয়েছে। 


সেই নিয়ে জি-৭ দেশগুলির তরফে সম্প্রতি একটি বিবৃতি জারি করা হয়, তাতে বলা হয়, ‘‘’রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণপত্র জড়ো করতে একযোগে কাজ করব আমরা। মারিউপোল এবং ইউক্রেনের অন্য শহরগুলি যে ভাবে বন্ধ করে রেখেছে রাশিয়া, মানবিক সাহায্যটুকুও পৌঁছতে দিচ্ছে না রুশ সেনা, তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে ইউক্রেনের অন্য শহরের সঙ্গে মারিউপোলের সংযোগ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে রুশ সেনাকে। মারিউপোল-সহ অন্যত্র মানবিক সাহায্য পৌঁছতে দিতে হবে।’’


রাশিয়াকে আড়াল করা নিয়ে চিনকে হুঁশিয়ারি আমেরিকার


এরই মধ্যে চিনকে ফের হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। রাশিয়াকে আড়াল করার চেষ্টা করলে, তাদেরও ফল ভুগতে হবে বলে জানিয়েছে তারা। এই নিয়ে গত সপ্তাহেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বাইডেন। তাতে সাফ জানিয়ে দেন তিনি যে, অর্থনৈতিক দিক থেকে বিচার করলে চিনের ভবিষ্য়ৎ পশ্চিমি দেশগুলির সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে। তাই রাশিয়াকে আড়াল না করে পশ্চিমি দেশগুলির সঙ্গে রাশিয়ার নিন্দায় সরব হতে হবে।