নয়াদিল্লি: ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেও, সঙ্কুলান করতে রাশিয়া হিমশিম খাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছিল বেশ কিছু দিন ধরেই (Russia Ukraine War)। বিগত সাত মাস ধরে চলে আসা সেই গুঞ্জনে এ বার সিলমোহর পড়ল। রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে কার্যত ছিন্নভিন্ন করে নিজেদের এলাকা পুনরুদ্ধার ইউক্রেনীয় বাহিনী। দেশের পূর্ব দিকে দক্ষ হাতে রুশ বাহিনীর মোকাবিলা করছেই তারা। সোমবার দক্ষিণে নাপার নদীর তীর থেকেই রুশ বাহিনীকে পিঠটান দিতে বাধ্য করল তারা। খেরসনের দক্ষিণ অংশ এখন পুরোপুরি ইউক্রেনীয় বাহিনীর (Ukrainian Army) নিয়ন্ত্রণে বলে জানা গিয়েছে। 


ইউক্রেনীয় বাহিনীর সামনে ছত্রভঙ্গ রুশ সেনা!


যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের লুগানস্ক, ডনেৎস্ক, খেরসন এবং জাপোরঝিয়া অঞ্চলকে এতদিন দখল করে রেখেছিল রুশ সেনা (Russian Troops)। ওই চার অঞ্চলকে সম্প্রতি আনুষ্ঠানিক ভাবে নিজেদের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে তারা। তার পর এক সপ্তাহও কাটেনি। খেরসনের দক্ষিণ অংশ পুনরুদ্ধার করল ইউক্রেনীয় বাহিনী। সামনে থেকে মোকাবিলায় তাদের কাছে পরাস্ত হয়ে রুশ বাহিনী পিছু হটেছে বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, নিপার নদী হয়ে ওই অঞ্চল দিয়েই রুশ বাহিনীর যুদ্ধের রসদ ইউক্রেনে ঢুকছিল। কিন্তু ওই এলাকা এই মুহূর্তে যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী, তাতে রুশ সেনা ধারেকাছে ঘেঁষতে পারবে না বলে মত কূটনীতিকদের। 


এ নিয়ে কিভের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে, দেশের সংবাদমাধ্যমে যে ছবি উঠে এসেছে, তাতে ওই এলাকায় ইউক্রেনীয় পতাকা উড়তে দেখা গিয়েছে। নিপার নদীর পশ্চিম তীর হয়ে ইউক্রেনের ট্যাঙ্ক খেরসনের বেশ খানিকটা ভিতরে ঢুকে এসেছে এবং ওই এলাকার পর পর বেশ কিছু গ্রামে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছে বলে রুশ বাহিনী সূত্রেও ইঙ্গিত মিলেছে। 


আরও পড়ুন: বাড়িতে গলার নলি কাটা অবস্থায় পড়ে দেহ, কাশ্মীরে রহস্যমৃত্যু ডিজি-কারার, শাহি-সফরের মাঝেই উদ্বেগের ছায়া


যুদ্ধের সূচনাপর্ব থেকেই খেরসনে মরিয়া লড়াই চালাচ্ছিল দুই দেশই। তার আগে, খারকিভেও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মোকাবিলা করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় রাশিয়াকে। উত্তর-পূর্বে এখনও যুযুধান দুই পক্ষ কার্যত মুখোমুখি অবস্থান করছে। সেই আবহে খেরসনের বিস্তীর্ণ এলাকা পুনরুদ্ধার করতে পেরে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে ইউক্রেনও।, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাশিয়ার। খেরসনে তাদের মোতায়েন করা নেতা ভ্লাদিমির সারদো দেশের এক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘যে খবর পাচ্ছি, তা উদ্বেগজনক। তবে বলা যেতে পারে যে, ইউক্রেন আমাদের প্রতিরক্ষাবলয় ভেদ করতে সক্ষম হয়েছে। নিপার নদী বরাবর দাদচেনি এলাকায় সফলতা পেয়েছে ওরা। কিছু জায়গা এখন ওদের নিয়ন্ত্রণে।’’


দীর্ঘ সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে যুদ্ধ


সাত মাস পেরিয়ে গিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। প্রভূত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দু'পক্ষেরই। কিন্তু এখনো মুঠো শিথিল করতে নারাজ রাশিয়া। বরং সম্প্রতি ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে পাকাপাকি ভাবে নিজেদের ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা করে তারা। শুক্রবার সেই মতো আনুষ্ঠানিকতাও সারা হয়। তাদের দাবি ছিল, লুগানস্ক, ডনেৎস্ক, খেরসন এবং জাপোরঝিয়া অঞ্চলে গণভোট করিয়েছে তারা। তাতে বাসিন্দারা রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্তিতেই সায় দেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ আন্তর্জাতিক মহল যদিও মস্কোর এই দাবিকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে। তার পরই খেরসনের বিস্তীর্ণ এলাকা পুনরুদ্ধার করল ইউক্রেনীয় বাহিনী।