কিভ: যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দুঃখ, দুর্দশার ছবি তুলে আনাই কাজ ছিল তাঁর। সেই যুদ্ধ ক্ষেত্রেই প্রাণ গেল আন্তর্জাতিক পুরস্কার জয়ী মার্কিন সাংবাদিক ব্রেন্ট রেনল্ডের (Brent Renaud)। ইউক্রেনে যুদ্ধের ছবি তুলতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। আমেরিকার ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ সংবাদপত্রে কর্মরত ছিলেন ব্রেন্ট। তবে ইউক্রেনে নিজের তাগিদেই তিনি যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করতে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।


স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,  ব্রেন্ট-সহ তিন জন একটি গাড়িতে চেপে বেরিয়েছিলেন। সেই গাড়িটিকে লক্ষ্য করে আচমকাই মুহুর্মুহু গুলিবৃষ্টি শুরু হয়। তাতে ঘাড়ে গুলি লাগে ব্রেন্টের। সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু হয় তাঁর। অন্য এক সাংবাদিকও গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের সঙ্গে গাড়িতে থাকা এক ইউক্রেনীয় নাগরিকও আহত হয়েছেন। রুশ বাহিনীর গুলিতেই ব্রেন্টের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি ইউক্রেন সরকারের। কিন্তু কোন পরিস্থিতিতে গুলি চলছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।


ইউক্রেনের (Russia Ukraine War) রাজধানী কিভে রবিবার মৃত্যু হয় ব্রেন্টের। তাঁর সহযোগী এন্য এক সাংবাদিকও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন তিনি। এই মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।  ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর কর্মী হিসেবে তাঁর পরিচয়পত্র হাতে পান কিভের সেনা আধিকারিকরা। যদিও মার্কিন সংবাদপত্রের দাবি, বর্তমানে তাঁদের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন না ব্রেন্ট। ওই পরিচয়পত্রও কয়েক বছর আগের, যখন তিনি তাদের কর্মী ছিলেন।


কিভের পুলিশ আধিকারিক আন্দ্রি নেবিতোভ প্রথম ব্রেন্টের পরিচয়পত্রের ছবি নেটমাধ্যমে প্রকাশ করেন। তাতে দেখা যায়, ব্রেন্টের জন্মের তারিখ-সহ, ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর কর্মী হিসেবে তাঁর পরিচয় লেখা রয়েছে। ইরপিনে কর্মরত এক স্বাস্থ্যকর্মী দানিলো শআপোলাভ জানান, দুই সাংবাদিকই গুলিবিদ্ধ হন। কিন্তু ঘটনাস্থলেই মারা যান ব্রেন্ট।


তবে শুধু চিত্রসাংবাদিকই নন, চিত্রনির্মাতা হিসেবেও পরিচিত মুখ ছিলেন ব্রেন্ট। যুদ্ধক্ষেত্রে মানবিক সঙ্কটই ক্যামেরাবন্দি করতেন তিনি। তার জন্য ‘পিবডি’ এবং ‘দুপয়েন্ট’ পুরস্কারও জেতেন তিনি। বিগত দু’দশক ধরে চিত্র সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ব্রেন্ট।


উল্লেখ্য,এ  দিনই ইউক্রেনে আক্রমণের তীব্র বাড়িয়েছে রাশিয়া। পোল্যান্ড সীমান্তের কাছে ইউক্রেনীয় সেনা এবং ন্যাটোর একটি যৌথ প্রশিক্ষণ শিবিরে তারা বোমাবর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তাতে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহত কমপক্ষে ১৩০। কিভের কাছে শরণার্থীদের কনভয় লক্ষ্য করেও গোলাবর্ষণের অভিযোগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে। তাতে এক শিশু-সহ সাত ইউক্রেনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।