Russia-Ukraine War: এতদিন যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সেটাই সত্য হল। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সামরিক অভিযানের নির্দেশের পর প্রতিবেশী ইউক্রেনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী।  ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সব বিভিন্ন জায়গায় জোরদার ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ শানিয়েছে রাশিয়া। এদিনই ইউক্রেনের ভেতরে ঢুকে পড়ে রুশ বাহিনী। আন্তর্জাতিক মহলে আলাপ-আলোচনা, কূটনৈতিক দৌত্য ব্যর্থ করে এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ চালিয়েছে। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সহ বিভিন্ন জায়গায় বায়ুসেনা ঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান নিশানা করেছে রুশ বাহিনী। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা বাহিনী এই ঘটনায় দ্বিতীয়বার আপৎকালীন বৈঠক ডেকেছে। ভারতের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষবে শান্তির আর্জি জানানো হয়েছে। ইউক্রেনের সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা বলেছে, রুশ বাহিনী প্রতিবেশি বেলারুশ থেকে তাদের দেশে হামলা চালিয়েছে। সংস্থার দাবি, রুশ বাহিনী প্রতিবেশী বেলারুশ থেকে কামানের গোলা নিক্ষেপ করছে। ইউক্রেনের বাহিনী পাল্টা গোলাগুলি চালাচ্ছে। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,  তারা ইউক্রেনের বিমানবন্দর ও অন্যান্য সামরিক সম্পত্তিকে নিশানা করেছে। জনবসতি এলাকায় কোনও হামলা চালানো হচ্ছে না।


কী পদক্ষেপ নিতে পারে ন্যাটো?
এরইমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, আমেরিকা ও ন্যাটোর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে। আমেরিকা ও তার সহযোগী দেশগুলি ইতিমধ্যেই রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, পরিস্থিতি যথেষ্ট গুরুতর। ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ সারা বিশ্বকেই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। রুশ আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকা ও ন্যাটোর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, তা আজ সন্ধের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে।


ন্যাটো প্রধান জেন্স স্টোলটেনবার্গ ন্যাটো অ্যাম্বাসাডরদের একটি বৈঠক ডেকেছেন ইউক্রেন সংক্রান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের সীমান্তের সঙ্গে রয়েছে ন্যাটোর বেশ কয়েকটি দেশ।  বৃহস্পতিবার সকালের এই বৈঠক ইউক্রেনের পরিস্থিতি ও রাশিয়ার বিনাপ্ররোচনায় আক্রমণ সংক্রান্ত ফলশ্রুতি মোকাবিলায় ন্যাটোর এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। ন্যাটো প্রধান ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে রুশ হানার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, আলাপ আলোচনা ও কূটনীতির পথে সমস্যার সমাধানের নিরলস প্রচেষ্টার পরও রাশিয়া আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছে। একইসঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ন্যাটো সদস্যদের সুরক্ষা ও আত্মরক্ষার জন্য জোট সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রস্তুত। 


তিনি রাশিয়ার এই আক্রমণকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ও ইউরো-আটলান্টিক সিকিউরিটির পক্ষে বিপজ্জনক হিসেবে অভিহিত করেছেন। অবিলম্বে অভিযান বন্ধ করতে রাশিয়াকে বলেছেন তিনি।


যুদ্ধের প্রভাব কী হতে পারে?
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই লড়াইয়ের প্রভাব সারাবিশ্বেই পড়বে। এর সুগভীর প্রভাব পড়বে পশ্চিমী দেশগুলির ক্ষেত্রে। রাশিয়াকে কোনওভাবে থামানোর চেষ্টা এখনও করা হবে। সেইসঙ্গে আমেরিকা বা ন্যাটো এই যুদ্ধে সরাসরি ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিবর্তে পরোক্ষভাবে সামরিক সাহায্য দিতে পারে। 


কেন রাশিয়া হামলা করেছে
রাশিয়ার বক্তব্য, ইউক্রেনে বিদ্রোহী নেতারা ইউক্রেনের আগ্রাসন থেকে বাঁচার জন্য রাশিয়ার সেনা সহায়তা চেয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেছেন, বিদ্রোহী নেতারা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে চিঠি লিখে বলেছেন যে, ইউক্রেন সেনার গোলাগুলিতে অনেক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। ইউক্রেনের বিদ্রোহী অঞ্চলগুলির স্বাধীনতা পুতিনের স্বীকৃতি দান এবং মিত্রতার সন্ধি স্বাক্ষরের পর ঘটেছে। যদিও আমেরিকা রাশিয়ার এই দাবিকে ভুয়ো বলে খারিক করে দিয়েছে।