নয়াদিল্লি: পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে অবসাদের আলাদা প্রভাব যে দেখা যায়, সে বিষয়ে আগেই বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু কী কারণে এরকম হয়, সেটা এতদিন জানা যায়নি। এবার হয়তো সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হবে। কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অন্তত তেমনই বলছে।
একটি সাময়িকপত্রে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘অবসাদে ভুগছেন এমন বেশ কয়েকজন ব্যক্তির মৃত্যুর সময় মস্তিষ্কের অবস্থা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পুরুষ ও মহিলাদের মস্তিষ্কের যে অংশে অবসাদের প্রভাব পড়ে, তা আলাদা দিকে অবস্থিত। এর ফলেই পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে অবসাদের আলাদা প্রভাব পড়ে। তাছাড়া মহিলাদের মস্তিষ্কে বিশেষ একটি বায়োমার্কারের সন্ধানও পাওয়া গিয়েছে, যেটি অবসাদের জন্য দায়ী।’
লাভাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক দলের প্রধান ক্যারলিন মেনার্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে অবসাদের ধরন অনেকটাই আলাদা। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে দ্বিগুণ অবসাদ দেখা যায়। মহিলাদের মধ্যে অবসাদের উপসর্গও আলাদা। অবসাদে পুরুষদের মধ্যে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, মহিলাদের মধ্যে সেই প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। এর কারণ খুঁজে বের করাই বিজ্ঞানীদের প্রধান লক্ষ্য ছিল।’
অধ্যাপক মেনার্ড আরও জানিয়েছেন, ‘মৃত্যুর সময় অবসাদে ভোগা মহিলাদের মস্তিষ্ক পরীক্ষ করে দেখা গিয়েছে, ক্লডিন-৫ নামে একটি প্রোটিনের অভাবেই মস্তিষ্কের একটি বিশেষ অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে এই প্রোটিন পুরুষদের মস্তিষ্কের যে অংশে থাকে, মহিলাদের মস্তিষ্কের সেই অংশে থাকে না। অবসাদের ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলাদের মস্তিষ্কে এটা অন্যতম প্রধান পার্থক্য। এর ফলে মেজাজ, উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ এবং আত্ম উপলদ্ধিও আলাদা হয়।’
অধ্যাপক মেনার্ড অবশ্য বলেছেন, এখনই পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে অবসাদের পার্থক্যের বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। তারপরেই নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যাবে।