বাল্টিমোর: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে ৫৭ বছরের এক ব্যক্তির দেহে শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হল। এই প্রথম শূকরের হৃৎপিণ্ডে জিনগত বদল করে কোনও মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হল।


ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড মেডিসিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। ডেভিড বেনেট নামে এই ব্যক্তি এখন ভাল আছেন। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ডেভিডের হৃৎপিণ্ডে সমস্যা ছিল। এখন শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না। ডেভিডের শারীরিক অবস্থা যা ছিল, তাতে প্রচলিত হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যেত না। সেই কারণেই শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটা না করলে ডেভিডকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হত না।’


অস্ত্রোপচারের আগে ডেভিড বলেন, ‘আমার সামনে দুটো রাস্তা আছে, হয় মৃত্যুকে আহ্বান জানাতে হবে, না হলে শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করতে হবে। আমি জানি, এটা অন্ধকারে গুলি চালানোর মতো। কিন্তু এছাড়া আমার কাছে অন্য কোনও উপায় নেই।’


ডেভিডের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গত ৩১ ডিসেম্বর জরুরি ভিত্তিতে শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনে অনুমোদন দেয়। তারপরেই অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি শুরু করে দেন চিকিৎসকরা। শেষপর্যন্ত অস্ত্রোপচার করা হল। আপাতত বেশ কয়েকদিন ডেভিডকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁর শরীরে কোনওরকম জটিলতা তৈরি হচ্ছে কি না, সেদিকে নজর রাখা হবে।


চিকিৎসক বার্টলি গ্রিফিথ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘বহু মানুষ হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায়। তাঁদের জন্য অন্য কোনও মানুষের হৃৎপিণ্ড পাওয়া সত্যিই সমস্যার। এত অঙ্গদাতা পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা সতর্কভাবেই এগোচ্ছি, তবে আমার আশা, বিশ্বে এই প্রথম মানবদেহে শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন ভবিষ্যতে রোগীদের সামনে এক নতুন পথ খুলে দেবে।’


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১,০৬,৬৫৭ জন রোগীর অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা দরকার। কিন্তু দাতা পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে না পেরে গড়ে ১৭ জনের মৃত্যু হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মানবদেহে শূকরের অঙ্গ প্রতিস্থাপনের খবর অনেকের কাছেই আশার আলো।