কলম্বো : অর্থনৈতিক সঙ্কট। আমদানির জন্য ডলারের অভাব। নেই প্রিন্টিং পেপার। এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা বাতিল করল শ্রীলঙ্কা সরকার। লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষা বাতিলে দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা।


শিক্ষা দফতর জানাচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় কাগজের মারাত্মক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাই সোমবার থেকে যে টার্ম টেস্ট নেওয়ার কথা ছিল আগামী এক সপ্তাহের জন্য, তা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এই প্রথম এই হারে আর্থিক সঙ্কট দেখা গেল এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে।


পশ্চিম প্রদেশের শিক্ষা বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, প্রিন্টাররা বৈদেশিক মুদ্রা সুরক্ষিত করতে অপারগ, তাই প্রয়োজনীয় কাগজ এবং কালি আমদানি করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের তরফে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়।


সরকারি সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, প্রায় ৪৫ লক্ষ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশের আপাতত পরীক্ষা স্থগিত থাকছে। উল্লেখ্য, বছরের শেষে ছাত্রদের পরবর্তী গ্রেডে উন্নীত করা হবে কি না তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য টার্ম টেস্ট একটি ধারাবাহিক মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার অংশ। 


অত্যাবশ্যকীয় আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ঘাটতির কারণে অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধেরও সঙ্কট রয়েছে। ২ কোটি ২০ লক্ষ নগদের সঙ্কট পড়া দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি এই সপ্তাহে ঘোষণা করেছে যে, ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক ঋণের সমস্যার সমাধান করতে এবং রিজার্ভ বাড়াতে আইএমএফের দ্বারস্থ হবে তারা।


গত বুধবার বেলআউটের (আর্থিকভাবে ভেঙে পড়া ঠেকাতে সহায়তা প্রদান) বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবয় রাজাপক্ষে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে নিউ ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট-এর প্রার্থী তথা রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘের ডেপুটি সজিত প্রেমদাসাকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন গোতাবয়। তাঁর নেতৃত্বেই দেশ থেকে নির্মূল হয়েছিল তামিল টাইগার্স-রা। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিপক্ষকে দুরমুশ করে বিপুলভাবে জয়ী হন গোতাবয়। শ্রীলঙ্কা সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোতাবয়কে তাঁর পরিবারের সদস্যরাই ‘টার্মিনেটর’ বলেন।