কলম্বো: প্রত্যাশা ছিলই। ঘটলও তেমনই। চূড়ান্ত ডামাডোলের মধ্যেই শেষ হল শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।  শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka Crisis) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে (Ranil Wickremesinghe)। ১৩৪টি ভোট পড়ে তাঁর সমর্থনে। ফলে বিরাট ব্যবধানে জয়ী হলেন তিনি। রনিলের প্রতিদ্বন্দ্বী দুল্লাস আলহাপেরুমার সমর্থনে ৮২টি ভোট পড়ে। বামপন্থী নেতা আনুরা কুমার দিসনায়ক মাত্র তিনটি ভোট পান। ভোটাভুটিতে শ্রীলঙ্কার ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে মোট ২১৯টি ভোট বৈধ বলে বিবেচিত হয়। বাতিল হয় চারটি ভোট (Sri Lanka President)।


গোতাবায়া-ঘনিষ্ঠ রনিলই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট


এর আগে, মোট ছয়বার শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন রনিল। গদিচ্যূত গোতাবায়া রাজাপক্ষের শ্রীলঙ্কা পদুজন পেরামুনা দলের সমর্থনেই জয়ী হলেন রনিল,যা নিয়ে দেশের একটি বড় অংশের মানুষ আপত্তি তুলে আসছিলেন। কারণ রাজাপক্ষ পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত রনিল। ক্ষমতা হাতে পেয়ে রাজাপক্ষ পরিবারের হয়ে তিনিই কড়া হাতে বিদ্রোহ দমনে উদ্যত হবেন বলে আশঙ্কা করছেন বিরোধী শিবিরের নেতা এবং আন্দোলনকারীরা।


অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব হাতে পেয়ে যে ভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেনতিনি, তাতেও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকে। তাই বিপদ বুঝে গোতাবায়া দেশ ছাড়লেও, শ্রীলঙ্কার রাজনীতি এখনও তাঁর পরিবারের ছায়া এবং প্রভাব থেকে মুক্ত হল না বলে মত রাজাপক্ষ বিরোধীদের। রনিলের জয়ের পর এ দিন বিক্ষোভকারীদেরও অসন্তোষ প্রকাশ করতে যায়। তবে সকলকে একসঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন রনিল।



আরও পড়ুন: Indian Passport: তিন ধাপ উঠলেও, ভারতীয় পাসপোর্ট 'দুর্বল'-ই, গুরুত্বের নিরিখে ৮৭তম স্থানে


ভোটাভুটি শুরু হওয়ার আগে এ দিন রনিলের সমর্থনে কথা বলতে দেখা যায় বিরোধী শিবিরের সাংসদ ধর্মলিঙ্গম সিতাড়থানকে। বিক্ষোভ চলাকালীন ভিড়ের হাতে তাঁদের অনেকেই হেনস্থার শিকার হন। তাই কড়া হাতে রনিল পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন বলে জানান তিনি। জয়লাভের পর জাতির উদ্দেশে বার্তা দেন রনিল। তিনি বলেন, "দেশ অত্যন্ত সঙ্কটজনক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সামনে পাহাড়প্রমাণ চ্যালেঞ্জ আমাদের। পারস্পরিক সহযোগিতায়, একজোট হয়ে তার মোকাবিলা করতে হবে।"


রনিলের হাতে স্থিতাবস্থা ফিরবে শ্রীলঙ্কায়


দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর, গত ১৪ জুলাই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করেন গোতাবায়া রাজাপক্ষ। তার পর রনিল এবং পার্লামেন্টের স্পিকার মহিন্দা ইয়াপা আবেওয়ার্দেনার মধ্যে কোনও একজনই অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব নিতে পারেন বলে শোনা যায়। শেষ মেশ অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন রনিলই। এর আগে সর্বদলীয় সরকার গঠনে বিরোধীদের ডাক দিয়েছিলেন রনিল। তাতে খানিকটা নিমরাজি হলেও, বিরোধীদের তরফে সর্বাত্মক সাড়া মেলেনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি কোন পথে এগোন, তা-ই এখন দেখার। তবে বর্তমানে রনিলের সামনে দেশে স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।