কাবুল: তালিবান শাসনের নাগপাশ থেকে বাঁচতে কাবুল থেকে হাজার হাজার মানুষের পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খলার ছবি প্রকাশ্যে এসেছিল। সবচেয়ে উদ্বেগে রয়েছেন মহিলারা। যদিও তালিবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য এনমুল্লাহ সামানগনির মন্তব্য, ইসলামির আমিরশাহি মহিলাদের নিগ্রহ চায় না। তবে ইসলাম ধর্ম মেনেই মহিলাদের অধিকার বিবেচনা করা হবে বলে জানান হয়।
ঠিক কী জানান হয়েছিল?
‘‘নয়া তালিবানি শাসনে মহিলাদের উপর অত্যাচার চলুক, আমরা চাই না। সব কিছু পরিচালিত হয় শরিয়তের আইন অনুসারে। তার মধ্যে থেকে যদি মহিলারা প্রশাসন ও সরকারে অংশ নিতে চান তাঁদের স্বাগত। আমরা সমস্ত বৃত্তের প্রতিনিধিকে প্রশাসনে চাইছি। এই দেশ চলবে পুরোপুরি শরিয়তের আইন মেনে। ’’
যদিও তালিবানি এই মন্তব্য ভালভাবে নেয়নি মহিলারা। দু'দশক আগের তালিবানি শাসনের স্মৃতি অনেকের পটে টাটকা। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত তালিবানি শাসনে চরম নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন মহিলারা। মেয়েদের স্কুলে বা বাড়ির বাইরে কাজ করা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, তাদেরকে শরীরের সমস্ত ঢাকা বোরখা পরতে হত। বাড়ির বাইরে কোনও পুরুষ আত্মীয়র সঙ্গ ছাড়া বেরোনো নিষিদ্ধ ছিল মহিলাদের।
আবদুল গফফর খানের দৌহিত্রী ও অল ইন্ডিয়া পাখতুন জিরগা ই হিন্দের প্রেসিডেন্ট ইয়াসমিন নিগর খান যেমন বলেছেন, "তালিবানদের বিশ্বাস করা যাবে না। ওরা এখন এক কথা বলবে। পরের দিন তার অন্যটা করবে। আমরা শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাকি বিশ্বের কাছে আবেদন করতে পারি যে, যেভাবে তাঁরা সিরিয়া, প্যালেস্তাইন ও অন্য যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের যত্ন নিয়েছেন, সেভাবেই আফগানিস্তানেরও দেখভাল করা হোক।"
মঙ্গলবারই সমগ্র আফগানিস্তানে ‘সাধারণ ক্ষমা’র ঘোষণা করে মহিলাদের তাদের সরকারে যোগ দিতে বলেছে তালিবান। এদিকে, আফগানিস্তানে মহিলা ও মেয়েদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গ্যুটারেস।তিনি ট্যুইট করে বলেছেন, মহিলা ও মেয়েদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিবরণে আমি খুবই উদ্বিগ্ন।
পাশাপাশি, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি, বিশেষ করে নারী ও ছোট মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেন নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী মালালা ইউসুফজাই। আফগান তালিবান দখল করতেই যে পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে সেখানে অবিলম্বে বিশ্বের নেতাদের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এমন আর্জিই জানিয়েছেন তিনি।