রাষ্ট্রপুঞ্জ: আভাস ছিলই। সেটাই সত্যি হল। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশে কাশ্মীর নিয়ে লম্বা-চওড়া বক্তব্য পেশ করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরতে গিয়ে ভারতের সমালোচনা করলেন তিনি। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার জন্য ভারতের বিরোধিতা করে তাঁর দাবি, সেখানে একবার কারফিউ উঠলে রক্তগঙ্গা বইবে। একইসঙ্গে ফের দিলেন পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি।
এদিন ইমরান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি কি ভেবে দেখেছেন, কারফিউ প্রত্যাহার হলে কী হবে কাশ্মীরে? আপনি মনে করেন কাশ্মীরের মানুষ এই বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের বিষয়টি মেনে নেবে? সেখানে হাজার হাজার ছেলেকে আটক করা হয়েছে। কারফিউ উঠলে তারা রাস্তায় নামবে। তখন সেনা তাদের গুলি করবে। এখ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে, ভারতীয় সেনা পেলেট-গান ব্যবহার করছে। তবে, কারফিউ ওঠার পর যদি পুলওয়ামার মত আরেকটা হামলা হয়, তাহলে পাকিস্তানকেই দোষারোপ করা হবে।
ইমরানের হুঁশিয়ারি, কাশ্মীরে ভারতের পদক্ষেপের ফলে মুসলিমদের মধ্যে মৌলবাদ বৃদ্ধি পাবে। যার জেরে অনেকেই হাতে অস্ত্র তুলে নেবে। বলেন, ভারতে কয়েক কোটি মুসলিম বসবাস করেন। মোদি, আপনি কি জানেন, ওরা কী ভাবছে? রক্ত বইলে, সেখানে মুসলিমদের মধ্যে মৌলবাদ বৃদ্ধি পাবে। যুবা মুসলিমরা মৌলবাদে আকৃষ্ট হবে। হাতে অস্ত্র তুলে নেবে।
এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আক্রমণ করেন ইমরান। বলেন, পুলওয়ামা যখন হয়েছিল, তখন ভারত পাকিস্তানের দিকেই আঙুল তুলেছিল। আমরা প্রমাণ চেয়েছিলাম। বদলে তারা যুদ্ধবিমান পাঠাল। ইমরানের দাবি, মোদির নির্বাচনী প্রচার পুরোটাই মিথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। মোদিকে উদ্ধৃত করে ইমরান এদিন বলেন ভোটের সময় মোদি বলেছিলেন, আমি পাকিস্তানকে শিক্ষা দিয়েছি। ইমরানের দাবি, এটা মিথ্যে ছাড়া আর কিছুই নয়।
ইমরান আরও দাবি করেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) অ্যাডল্ফ হিটলার ও বেনিতো মুসোলিনীর দ্বারা অনুপ্রাণিত। ইমরান বলেন, আরএসএস মুসলিমদের হত্যায় বিশ্বাসী। আরএসএস-এর গুন্ডারা শয়ে শয়ে মুসলিম হত্যা করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি দম্ভে অন্ধ হয়েছেন।
এদিন ফের একবার পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দেন ইমরান খান। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানকে যদি তার দেশের আকারের চারগুণ বড় একটি দেশের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে হয়, তাহলে আমরা কী করব? আমি এই প্রশ্নটা নিজেকে বহুবার করেছি। আমি জানি, আমাকে লড়াই করতে হবে। কিন্তু, ভেবে দেখুন, কী পরিণতি হবে যখ দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র একে অপরের সঙ্গে লড়বে? আন্তর্জাতিক মহলকে তিনি সবচেয়ে খারাপ পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকার পরামর্শও দেন ইমরান।