কিভ: ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার ফাঁস চেপে বসেছে গলায়। যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের মোকাবিলা করতে গিয়েও বিধ্বস্ত রাশিয়া (Russia Ukraine Crisis)। এক হাজার, দু’হাজার নয়, সাড়ে তিন সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধে ১৪ হাজার ৭০০ রুশ সৈনিক (Russian Army) প্রাণ হারিয়েছেন বলে এ বার দাবি করল ইউক্রেনীয় সরকার।  এ ছাড়াও সামরিক ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি তাদের।


রবিবার যুদ্ধের ২৫তম দিনে রাশিয়ার কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার একটি আনুমানিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করে ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রক। তাতে দাবি করা হয় যে, ২৫ দিন ব্যাপী যুদ্ধে প্রায় ১৪ হাজার ৭০০ রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে।  রুশ সেনার হাতে থাকা ভিন্ন ধরনের ১ হাজার ৪৮৭টি সাঁজোয়া গাড়ি ধ্বংস করে দিয়েছে ইউক্রেনীয় সেনা।


এ ছাড়াও, যুদ্ধে রাশিয়ার তরফে ব্যবহৃত ৯৬টি বিমান, ১১৮টি হেলিকপ্টার, ৪৭৬টি ট্যাঙ্ক, রুশ সেনার জন্য মজুত ৬০টি জলের ট্যাঙ্ক, ২১টি ড্রোন, ১২টি বিশেষ ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জাম, ২৩০টি কামান, ৭৪টি মাল্টিপল লঞ্চ রকেট প্রযুক্তি, ৯৪৭টি গাড়ি, তিনটি রণতরী এবং ৪৪টি যুদ্ধবিমান ধ্বংসকারী প্রযুক্তি ধ্বংস  করে দেওয়া হয়েছে।


এ দিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির (Volodymyr Zelenskyy) এক উপদেষ্টা ভিডিও বার্তায় জানান, মুখোমুখি যুদ্ধে ইউক্রেনীয় সেনার সামনে কার্যত স্থবির  অবস্থান রুশ সেনার। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো সরঞ্জাম এবং অস্ত্রশস্ত্রই নেই তাদের হাতে।  তার জন্যই রাশিয়ার তরফে রকেট হানার তীব্রতা আগের তুলনায় কমে গিয়েছে।





আরও পড়ুন: Russia-Ukraine Crisis: ইউক্রেনের অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংস করতে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার রাশিয়ার


যদিও রকেট হানার গতি কমালেও ইউক্রেনের একাধিক শহরে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। এমনকি মিখাইলো, পোডোলিয়াকের মতো শহরের বিরুদ্ধে ‘কিনঝল’-এর  মতো হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রও প্রয়োগ করেছে তারা।  এ প্রসঙ্গে জেলেনস্কির উপদেষ্টার বক্তব্য, “শান্তিপূর্ণ অবস্থান ছিল ওই দুই শহরের। সেখানেও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রাশিয়া।”


গত তিন দিনে দু’বার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগের কথা স্বীকার করেছে রাশিয়া।  মিকোলাইভে একটি তেলের ডিপো ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। এ ছাড়াও, মারিউপোল আর্ট স্কুল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে কি না ৪০০-র বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে কয়েকশো নাগরিককে রুশ সেনা রীতিমতো ধরে নিয়ে গিয়েছে বলেও দাবি কিভের।


রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। ঘর ছেড়ে পড়শি দেশে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও যদিও দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা প্রক্রিয়া জারি। অন্যতম মধ্যস্থতাকারী তুরস্কের দাবি, আলোচনা মোটামুটি গুটিয়েই এসেছে। কারণ একাধিক বিষয়ে একমত রয়েছে দুই দেশের। শুধু কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত এখনও ঝুলে রয়েছে।