ইয়াঙ্গন: মায়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে চলছে আন্দোলন। এই আন্দোলন দমন করার লক্ষ্যে পাল্টা আগ্রাসনের পথ নিয়েছে সামরিকবাহিনী। আন্দোলনকারীদের উপর দমন-পীড়ন চলছে। গতকাল সামরিকবাহিনীর আগ্রাসনে অন্তত ৩৮ জন আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান হওয়ার পর একদিনে এটাই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা। মায়ানমারে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রানার বার্গানার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে।


আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গতকাল আন্দোলনকারীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় নিরাপত্তাবাহিনী। আন্দোলনকারীরা পালানোর চেষ্টা করলে তাঁদের তাড়া করে মারা হয়। এমনকী, একটি অ্যাম্বুল্যান্সের চালককেও নৃশংসভাবে মারা হয়।


মায়ানমারে এর আগেও সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে। তারপর গণতন্ত্র ফিরলেও, ফের সামরিক অভ্যুত্থানে গণতন্ত্র বিপন্ন। আটক করা হয়েছে নোবেলজয়ী আউং সান সু চি-কে। সামরিকবহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। আন্দোলন দমন করার লক্ষ্যে কয়েকশো মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাংবাদিকদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। গত শনিবার আটক করা হয় অন্তত আটজন সাংবাদিককে।


মায়ানমারে গণতন্ত্রের উপর এরকম আঘাতের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে আন্তর্জাতিক মহল। রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মায়ানমারে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ দূত নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, ‘আমি রোজ মায়ানমারের মানুষের কাছ থেকে অন্তত ২,০০০ বার্তা পাচ্ছি। মায়ানমারের সাধারণ মানুষ চরম সমস্যায় আছেন। তাঁরা আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ চাইছেন।’


মায়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন দ্য অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনসের সদস্য দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীরা। তাঁরা একযোগে হিংসা বন্ধ করা এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধানের জন্য বার্তা দিয়েছেন। মায়ানমারও এই গোষ্ঠীর সদস্য। তবে অন্য দেশগুলি গণতন্ত্র ফেরানোর পক্ষেই মতপ্রকাশ করেছে।


গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পরেই আটক করা হয় সু চি এবং তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির আরও অনেক নেতাকে। এরপরেই মায়ানমারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউ মিন্ট এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। সামরিকবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নির্বাচনে জালিয়াতি করা হয়েছে।