ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে, খিং নিন ওয়াই নামে ওই শারীরশিক্ষার প্রশিক্ষক তাঁর ওয়ার্ক আউটের কাজে ব্যস্ত, আর তাঁর পিছনেই মায়ানমারের ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের অ্যাসেম্বলি-গামী রাস্তার নিরাপত্তা সংক্রান্ত চেক পয়েন্টের দিকে এগিয়ে চলেছে সেনার কালো এসইউভি, সাঁজোয়া গাড়ি।
তাঁর পিছনেই দেশের ক্ষমতার এই পালাবদলের এই নাটকীয় ঘটনা চলছে। অথচ এ বিষয়ে তখনও বিন্দুবিসর্গ জানা নেই তাঁর। নিজের কাজেই ব্যস্ত তিনি। কালো ও নিয়ন সবুজ অ্যাথলিটের পোশাক পরে নিবিষ্ট মনে দৈনন্দিন অনুশীলন করছেন তিনি। প্রেক্ষাপটে বাজছে একটি ইন্দোনেশিয় গান। এরইমধ্যে দেখা যাচ্ছে সামরিক গাড়িগুলির যাওয়ার পথ প্রশ্বস্ত করতে ছুটে যাচ্ছেন এক নিরাপত্তা কর্মী।
এই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে। এক ট্যুইটার ইউজারের মন্তব্য এই সময়ের সবচেয়ে প্রতীকী ভিডিও এটি। গত সোমবার খিং মিনিট তিনেকের এই ভিডিওটি তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন।
খিং পরে ওই একই জায়গায় তাঁর অন্যান্য অনুশীলনের ভিডিও আপলোড করেন। খিং জানিয়েছেন, অ্যাসেম্বলির বাইরে নাচের ভিডিও তিনি ১১ মাস ধরে রেকর্ড করছেন।
সোমবার সামরিক বাহিনী দেশের শাসনভার গ্রহণ করার পর মায়ানমারের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির তৈরি হয়। সেনা জানিয়েছে, তারা এক বছরের জন্য দেশের শাসনের ভার গ্রহণ করেছে। স্টেট কাউন্সেলর সু চি ও শাসক দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের আটক করা হয়েছে।
মায়ানমারের এই সামরিক অভ্যূত্থানের নিন্দা করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন নেতা।
সামরিক বাহিনীর মালিকানাধীন মিয়াওয়াড্ডি টিভি জানিয়েছে, কমান্ডার-ইন-চিফ সিনিয়র জেনারেল মিন আং এইচলেইং আগামী এক বছর দেশের শাসনের দায়িত্বে পালন করবেন। এতে আরও বলা হয়েছে, গত নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতারণার যে দাবি সামরিক বাহিনী করেছিল, সে বিষয়ে সরকার কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এজন্য শাসনভার নিজেদের হাতে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে সামরিক বাহিনী। ওই নির্বাচনে সুচির শাসক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। করোনাভাইরাস অতিমারী মধ্যেও সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজনের ঘটনাতেও অসন্তোষ ব্যক্ত করেছে সামরিক বাহিনী।
মায়ানমারে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান নয়। এক দশক আগে সেনা শাসন ছিল সেদেশে। প্রায় ৫০ বছর মিলিটারি শাসন ছিল দেশে। এর আগে ১৯৮৯ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে প্রায় ১৫ বছর আটক করে রাখা হয়েছিল সু চিকে। ২০১০ সালে তিনি ছাড়া পাওয়ার পর ২০১৫ সালে মায়ানমারে আয়োজিত ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে তাঁর দল।