নয়াদিল্লি: দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জাঁকিয়ে বসেছে সন্ত্রাসবাদ। রাজপথে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সভা করছে জঙ্গি নেতারা। কিন্তু নিশ্চুপ ইসলামাবাদ। আর এর অবশ্যম্ভাবী ফল,  গোটা দুনিয়ায় এবার একঘরে হয়ে পড়তে চলেছে তারা। সে দেশের সংবাদমাধ্যম এই ভাষাতেই সতর্ক করেছে নওয়াজ শরিফ সরকারকে।

পাক সংবাদপত্র ‘দ্য নেশন’ এমনিতে সরকারপক্ষ ও সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কিন্তু এই কাগজেরই সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, পাকিস্তানের তথাকথিত কৌশলগত সঙ্গী চিন পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাক সরকারের ব্যবস্থা না নেওয়া নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছে। সরকারের এখন উচিত, সমস্ত জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, দেশের মাটিতে জঙ্গিবাদ সহ্য করা হবে না বলে তাদের বারবার দেওয়া প্রতিশ্রুতি কাজে করে দেখানো।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রিকসের মঞ্চে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসের পথপ্রদর্শক বলে যে আক্রমণ করেছেন, সে বিষয়েও উল্লেখ করা হয়েছে ওই সম্পাদকীয়তে। বলা হয়েছে, মোদীর বিবৃতিতে স্পষ্ট, আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে একঘরে করতে দিল্লি ঠিক কতটা সক্রিয়। সার্ক বৈঠক বয়কট করা থেকে পাক শিল্পীদের কাজ করা 'বন্ধ' করা-সমস্ত আন্তর্জাতিক আঙিনায় পাকিস্তানকে দুর্বল করতে চেষ্টার ত্রুটি করছে না মোদী সরকার। যদি সত্যিই ইসলামাবাদ একঘরে হয়ে পড়ে, তাহলে তার ফল ভয়াবহ হবে, পাকিস্তান তা নিশ্চয়ই চায় না।

পাক সরকার ও সে দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ শানিয়ে সংবাদপত্রটি বলেছে, পাকিস্তানের অন্তত এইটুকু স্বীকার করার শিষ্টতা দেখানো উচিত ছিল, যে, কোন জঙ্গি ভাল, কোন জঙ্গি খারাপ-তা তারা জানে না। তাদের বক্তব্য, দিনকয়েক আগে নওয়াজের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগেরই এক নেতা এমন কয়েকজন জঙ্গির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন, যাদের পাকিস্তান স্পনসর করে বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে দিল্লি।

কাগজটি লিখেছে, এই মুহূর্তে পাকিস্তানকে বুঝতে হবে, তাদের জাতীয় স্বার্থেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। অন্য একটি সংবাদপত্র ডন-এ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া নিয়ে পাক সরকার ও সেনার মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্বের যে খবর প্রকাশিত হয়, সে ব্যাপারেও উল্লেখ করেছে তারা। বলেছে, ওই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার বদলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে হেনস্থার চূড়ান্ত করে প্রশাসন। অথচ প্রশাসন ও সেনা যতই দাবি করুক, তাঁর প্রকাশিত খবরটি কোনওভাবেই ‘জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক’ ছিল না।

এর আগে ঠিক গত সপ্তাহেই দ্য নেশন প্রশ্ন করে, পাঠানকোট হামলার মাস্টারমাইন্ড মাসুদ আজহার ও মুম্বই হামলার চক্রী হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন।