নয়াদিল্লি: নেপালের (Nepal) বেসরকারি টেলিকমিউনিকেশন সংস্থা, এনসেল (Ncell) মাউন্ট এভারেস্টে ৫ হাজার ২০০ মিটার উচ্চতায় বিশ্বের সর্বোচ্চ সেল ফোন টাওয়ার তৈরি করতে চলেছে। এই টাওয়ার অতি দ্রুত ফোর জি (4G) সংযোগ দেবে। এমনই জানা গেছে বুধবার ।


এভারেস্ট অঞ্চলে বছরে প্রায় ৬০ হাজার ট্রেকার এবং পর্বতারোহী আসেন। বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পৌঁছনোর উদ্দেশে একাধিক পর্যটক আসেন। ফলে এটি নেপালের পর্যটন শিল্পের একটি উচ্চ রাজস্ব উৎপাদনকারী অংশ।


কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?


এভারেস্ট অঞ্চলের অন্তত পাঁচটি স্থানে এই সংস্থা 'বেস ট্রান্সিভার স্টেশন' (base transceiver stations) খাড়া করবে। এগুলি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৮৩০ মিটার থেকে ৫,২০৪ মিটার উচ্চতার মধ্যে অবস্থান করবে। পার্বত্য এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও ভাল করার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


এক সংবাদ পত্রকে টেলিকমিউনিকেশন সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, 'যদি সবকিছু আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়, তাহলে এই বছরের শেষ ত্রৈমাসিকের মধ্যে আমাদের ফোর জি পরিষেবা লাইভ করে দেওয়া হবে।'


প্রতিবেদন অনুযায়ী, 'এলাকায় উচ্চ-গতির মোবাইল ব্রডব্যান্ড অ্যাক্সেস পর্যটন সহ একাধিক ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। ফোর জি অ্যাক্সেসের মাধ্যমে, এভারেস্ট অঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার লোকেরা উচ্চ-গতির মোবাইল সংযোগের সঙ্গে আরও সুযোগ সুবিধা নিতে পারবেন। পর্যটকরা এই অঞ্চলে তাঁদের ভ্রমণের উত্তেজনা ভাগ করে নিতে পারবেন তাঁদের প্রিয়জনেদের সঙ্গে যুক্ত থেকে।'


এনসেলের মতে, একটি প্রাথমিক রিপোর্টে দেখানো হয়েছে যে এভারেস্ট চূড়ায় অর্থাৎ ৮,৮৪৮.৮৬ মিটারেও ফোর জি সংযোগ পাওয়া যেতে পারে। তাদের দাবি, একবার পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা সফল হলেই আসল রেজাল্ট বোঝা যাবে। এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে ইতিমধ্যেই ফোর জি পরিষেবা রয়েছে কিন্তু কোনও সঠিক পরিকাঠামো নেই। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাগরমাথা বা এভারেস্ট অঞ্চল ভৌগোলিকভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় উন্নত ইন্টারনেট পরিষেবা বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (disaster risk management) সহায়তা করবে।


আরও পড়ুন: Kailash Mansarovar Yatra : নেপাল-চিনের ঘুরপথ নয়, এবার উত্তরাখণ্ড হয়ে সরাসরি মানস সরোবর যাত্রা


কমবে পর্বতারোহীদের খরচ


এভারেস্ট পর্বতারোহীদের গাইড এবং সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তার পরিমাণের উপর নির্ভর করে মাথা পিছু ৩৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার ডলার খরচ করতে হয়। ক্লাইম্বিং পারমিটের ১১ হাজার ডলার খরচ অন্তর্ভুক্ত করে এই পরিমাণ।


নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আং শেরিং শেরপার কথায়, 'আগেকার দিনে, পর্বতারোহী ও ট্রেকাররা নিজেদের সঙ্গে স্যাটেলাইট ফোন রাখতেন, যেগুলি দামী এবং নিয়ে যাওয়ার জন্য পারমিটও লাগে। বেশ সমস্যার ব্যাপার সেটা।'


ফোর জি পরিষেবার মাধ্যমে, শৃঙ্গ পর্যন্ত যোগাযোগ উন্নত করা হবে। শুধুমাত্র বিদেশীরাই নন, এই স্কিম থেকে উপকৃত হবেন দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের স্থানীয়রাও। শেরপার কথায়, 'নিঃসন্দেহে এই খবর অত্যন্ত আনন্দের'।