বেজিং: চিনের শেনঝেনে কমিউনিস্ট পার্টির একটি বৈঠকে বক্তৃতা দেওয়ার সময় চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বারবার কাশতে থাকা সবার নজর কেড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই করোনা আবহে তিনি সুস্থ আছেন কিনা। বিশেষ করে চিনা সংবাদমাধ্যম বারবার যেভাবে জিনপিংয়ের কাশির ভিডিও কেটে দিয়েছে, তাতে অনেকের মনেই দানা বেঁধেছে কুটিল সন্দেহ।

বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আনে হংকংয়ের একটি সংবাদমাধ্যম। তারা খবর করে, জিনপিং শেনঝেনের বৈঠকে বিশ্রীভাবে কাশছিলেন আর জল খাচ্ছিলেন। ভিডিওতেও দেখা যাচ্ছে, জিনপিং যতবার কাশছেন ততবারই ক্যামেরা ঘুরিয়ে দিচ্ছে চিনা সংবাদমাধ্যম। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্টের কাশির শব্দ ধামাচাপা দিতে পারেনি তারা। সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, চিন থেকে যে ভাইরাসের সূত্রপাত, সেই করোনায় জিনপিং নিজেও কি আক্রান্ত হলেন?


অনেকে আবার বলছেন, বেজিংয়ের উচিত, তাদের প্রেসিডেন্টের শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রকাশ্যে সব কিছু জানানো। এতে তাদের ভাবমূর্তির হয়তো কিছুটা উন্নতি হবে। আর তা ছাড়া জিনপিংয়ের যদি করোনা হয়ও, তিনি তো প্রথম নন, যিনি এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনা হয়েছে, ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ব্রাজিলের জেয়ার বোলসোনারোও বাদ যাননি। বলিভিয়া, গুয়াতেমালা, হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্টের করোনা হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছেন আর্মেনিয়া ও রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তাঁরা কেউ রোগ গোপন করেননি। তাহলে জিনপিংয়ের ক্ষেত্রে এত লুকোচুরি কীসের।

কিন্তু স্বচ্ছভাবে সব খবর প্রকাশ্যে আনার ব্যাপারে চিনের খুব একটা সুনাম নেই। চিনের ইউহানে যখন প্রথম করোনা শুরু হয়, তখন রহস্যময়ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন জিনপিং। একবার নয়, দুবার মানুষের চোখের আড়ালে চলে যান তিনি। তারপর তাঁকে দেখা গেল মাস্ক ছাড়া। চিন থেকে করোনা উধাও হয়েছে প্রমাণ করতে লকডাউন তুলে দিলেন তিনি, পুল পার্টিও করতে দিলেন। সম্ভবত এ সবেরই ফলশ্রুতি তাঁর নিজেরই ওই কাশি। শেনঝেনের বৈঠকে তাঁর পাশাপাশি আবার বসে ছিল চিনা কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হাসপাতাল থেকে হোয়াইট হাউস ফিরে গিয়েই মাস্ক খুলে ফেলায় তাঁকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। কিন্তু চিনে কারও প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করার ক্ষমতা নেই। বরং সকলের দাবি, চিন করোনাকে হারিয়ে দিয়েছে। যদিও খোদ প্রেসিডেন্টের এই অস্বাভাবিক কাশি সব চেষ্টায় জল ঢেলে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।