দিঘা: প্রবল গতিতে ধেয়ে আসছে ইয়াস। সকাল থেকেই দাপট দেখাতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড়। দিঘায় শুরু হয়েছে প্রবল জলোচ্ছাস। উত্তাল সমুদ্র। দিঘাতে গার্ডওয়াল টপকে ঢুকছে সমুদ্রের জল। হু হু করে জল ঢুকছে মন্দারমণিতে। প্লাবিত হয়েছে তাজপুরও। একইসঙ্গে মন্দারমণির হোটেলেও ঢুকেছে জল। জল ঢুকছে সমুদ্র সংলগ্ন দোকানগুলিতে। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা সম্পূর্ণ খালি করতে কোমরবেধে নামে প্রশাসন। হলদিয়ায় নদীতে বৃদ্ধি হয়েছে জলস্তর। মঙ্গলবার সন্ধেয় নামানো হয়েছে সেনা। 


দিঘার সমুদ্রের ভয়াল রূপ দেখা যায় এদিন। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বোল্ডার টপকে রাস্তায় চলে আসছে ঢেউ। প্রবল বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। সঙ্গে বৃষ্টি। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ গার্ডওয়াল টপকে দিঘা শহরে জল ঢুকতে শুরু করে। কার্যত জলের তলায় আশপাশের দোকানগুলো। জলে ভাসছে মোটরবাইক।


আগেই দিঘা ও আশপাশের এলাকা থেকে বাসিন্দা ও স্থানীয় হোটেল থেকে সমস্ত কর্মীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। ঝোড়ো হাওয়ার দাপট দেখা যায়  দিঘার কাছে রামনগর ২ নম্বর ব্লকের সতিলাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১১৬-র বি জাতীয় সড়কে গাছ উপড়ে বিপত্তি। দ্রুত এলাকায় পৌঁছে গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ শুরু করে এনডিআরএফ।


মন্দারমণিতে প্রভাব দেখাতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। আশপাশের হোটেলগুলোতে জল ঢুকে যায়। রাস্তা টপকে গ্রামগুলোতেও জল ঢুকতে শুরু করেছে। প্রবল ঝোড়ো হাওয়ায় উড়ে গিয়েছে বেশ কিছু বাড়ির চাল। বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত।


ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব হলদিয়াতেও। হলদি নদীতে জলোচ্ছ্বাস। জল ঢুকতে শুরু করেছে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে। বাঁধ ভেঙে নদী তীরবর্তী এলাকায় জল ঢোকার আশঙ্কা। দোকান বেঁধে রাখছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সব মিলিয়ে ভেঙেছে ৫১টি বাঁধ।


নির্ধারিত সময়ের আগেই ওড়িশার বালেশ্বরে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সকাল সোয়া ৯টা নাগাদ শুরু হয় ল্যান্ড ফল। ৩ ঘণ্টা ধরে এই ল্যান্ড ফল চলবে। ল্যান্ড ফলের সময় সাইক্লোনের আই অংশটি ঢুকতে শুরু করে স্থলভাগে। এই মাঝের অংশটি ঢোকার সময় ঝড়ের বেগ ও বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমে যায়। টেল অংশটি অতিক্রম করে যাওয়ার সময় ফের ঝড়ের দাপট বাড়বে। বাড়বে বৃষ্টি।আজ সকালে সাইক্লোনের ক্লাউড ওয়াল ঢুকতে শুরু করায় ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডব শুরু হয়। সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। দিঘায় সকাল সাড়ে ৬টায় ইয়াসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার। আছড়ে পড়ার আগেই প্রভাব দেখাতে শুরু করেছে ইয়াস। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় শুরু হয় বৃষ্টি। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়াতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।