নয়া দিল্লি: মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জারি করা বন্যা সতর্কতা অনুসারে, যমুনা নদীর জল বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায়, যমুনার জল বিপদসীমা অতিক্রম করে, পুরনো রেলওয়ে সেতুতে (ORB) ২০৪.৫৬ মিটারে পৌঁছে। এর আগে, সকাল ৯টায়, জলস্তর ২০৪.৫৮ মিটারে ছিল। 

বন্যা সতর্কতায় বলা হয়েছে, "যেহেতু ORB-এর জলস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং ২০৫.৩৬ মিটারে পৌঁছাতে পারে, তাই সমস্ত আধিকারিকদের তাদের নিজ নিজ এলাকায় সতর্ক থাকার এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নদীর বাঁধের পাশে বসবাসকারী লোকদের সতর্ক করা হবে এবং তাদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হবে।" 

সরকারিভাবে এও জানান হয়েছে, 'উজিরাবাদ ব্যারেজ থেকে প্রতি ঘন্টায় প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ার কারণেই জলস্তর বৃদ্ধির মূল কারণ। জলস্তর আরও বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে তবে আজ সন্ধ্যা নাগাদ এটি বিপদসীমার নীচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে'। উল্লেখ্য, পুরনো রেলওয়ে সেতু নদীর প্রবাহ এবং সম্ভাব্য বন্যার ঝুঁকি ট্র্যাক করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।

ব্যারেজ থেকে ছেড়ে দেওয়া জল সাধারণত দিল্লিতে পৌঁছতে ৪৮ থেকে ৫০ ঘন্টা সময় নেয়। এমনকি কম জল নিষ্কাশনের ফলেও দিল্লিতে জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সতর্কতা চিহ্নের কাছাকাছি। 

গত ২৪ ঘণ্টায় হরিয়ানায় ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে হাতিকুণ্ড ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে অতিরিক্ত জল। তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে দিল্লিতে যমুনার জলস্তরে। দ্রুত গতিতে বাড়ছে নদীর জল। স্থানীয় প্রশাসন ও সেচ দপ্তর জানাচ্ছে, প্রতি ঘণ্টায় জলস্তর কিছুটা করে বাড়ছে, যা আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।

২০২৩ সালের জুলাই মাসে ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়েছিল দিল্লির একাধিক নিচু এলাকা – যমুনা বাজার, রাজঘাট, সিভিল লাইন্স সহ একাধিক অঞ্চল। এবছর এখনও পর্যন্ত সেই স্তরের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি না হলেও আতঙ্কে রয়েছেন বাসিন্দারা। 

দিল্লির পাশাপাশি ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়েছে উত্তরপ্রদেশের একাধিক জেলা। প্রয়াগরাজে গঙ্গা ও যমুনা, অযোধ্যায় সরযূ, বান্দা এবং এটাওয়ায় চম্বল – প্রায় সব ক’টি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। প্রশাসনের তরফে বহু এলাকায় জারি হয়েছে সতর্কতা।