লখনউ: শেষমেষ প্রকাশ্যে প্যান্ডেল করে দুর্গাপুজো করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনের। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় উত্তরপ্রদেশের বিজেপি পরিচালিত প্রশাসন ঘরের ভিতরে দেবী দুর্গার আরাধনার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু এবার প্রকাশ্যে দুর্গাপুজো করা যাবে বলে জানাল তারা। তবে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে প্যান্ডেলে পুজো করতে হবে। পরতে হবে মাস্ক, মেনে চলতে হবে স্যানিটাইজেশন বিধি। পুজো কমিটিগুলিকে যে গাইডলাইন পাঠিয়েছে প্রশাসন, তাতে এটা স্পষ্ট করা হয়েছে।
প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বদলে খুশি দু্র্গাপুজো কমিটিগুলি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে পুজোর আয়োজন শুরু করে দিয়ে দিয়েছে। জানকিপুরম এলাকার দুর্গাপুজো কমিটির প্রতিনিধি আনন্দ ব্যানার্জিকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা বলেছে, এক পক্ষকালেরও কম সময় রয়েছে। বৃহস্পতিবার পুরো রাতটা আমাদের পুজোর আয়োজনের পরিকল্পনা করতেই কেটেছে। দুর্গাপুজোর আয়োজনের অনুমতি দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।
আগে রাজ্যের বিজেপি সরকার চলতি কোভিড-১৯ অতিমারীর আবহে কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলার শর্তে প্রকাশ্য়ে রামলীলা উত্সব পালনে অনুমতি দিয়েছিল, বলেছিল, কোনও নির্দিষ্ট অনুষ্ঠান করতে হলে ১০০-র বেশি লোকের জমায়েত হওয়া চলবে না। এ নিয়ে বাঙালি সমাজে অসন্তোষ ঘনায়।
কেন্দ্রীয় সরকারের আনলক-৫ গাইডলাইন জারি হওয়ার পরই প্রকাশ্যে দুর্গাপুজোয় ছাড়পত্র দিল যোগী সরকার। গাইডলাইন অনুসারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, সামাজিক, শিক্ষাবিষয়ক, খেলাধুলো, বিনোদনমূলক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ও অন্যান্য জমায়েত ইতিমধ্যেই অনুমোদন করা হয়েছে। এধরনের যে কোনও জমায়েতে সর্বোচ্চ ১০০ লোক থাকতে পারবেন। তবে এমন অনুষ্ঠান হতে পারবে শুধুমাত্র কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরেই।
রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকার সরকারগুলিকে কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরে ১৫ অক্টোবরের পর থেকে ১০০ বেশি লোকের জমায়েতে অনুমোদন প্রদানে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হল, বদ্ধ জায়গায় প্রেক্ষাগৃহের মোট লোক ধারণ ক্ষমতার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঢুকতে পারবে। ২০০ জনের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা, থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা রাখা, হ্যান্ডওয়াশ বা স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক হয়েছে।
বেঙ্গলি ক্লাবের এক শীর্ষকর্তা বলেন, দুর্গাপুজোয় রাজ্য সরকারের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। অবশেষে অনিশ্চয়তা কাটল। আমরা ছোট মূর্তি বসাব, সব গাইডলাইন মেনে পুজো হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শহরের সবচেয়ে প্রাচীন পুজো কমিটি। ১০০ বছরের ওপর পুজো করছি। শতাব্দী প্রাচীন প্রথায় ছেদ টানা কঠিন ছিল। এই দুর্গাপুজোয় দেবীর কাছে একটাই প্রার্থনা হবে, দেশ থেকে চিরতরে মুছে যাক বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া মারণ ভাইরাস।