চেন্নাই: প্রথমে ব্লেড দিয়ে শরীরে বারবার আঘাত। ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার পরে গায়ে আগুন দিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে তরুণীকে। এমনই নারকীয় ঘটনা ঘটেছে তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে। জন্মদিনের সন্ধেয় এরমকই ভয়াবহ ভাবে খুন হয়েছেন এক তরুণী। সেটাও তাঁর ছোটবেলার বন্ধুর হাতে।


নিহত তরুণীর নাম আর নন্দিনী। তিনি পেশায় সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার (Software Engineer) ছিলেন। বছর চব্বিশের এই তরুণীকে নারকীয় ভাবে হত্যা করেছে তাঁরই ছোটবেলার বন্ধু। অভিযুক্তের নাম ভেত্রিমারান। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত লিঙ্গ পরিবর্তনের মাধ্যমে নারী থেকে পুরুষ হওয়ার পর এই নাম নিয়েছে। অভিযুক্তর আসল নাম পান্ডি মহেশ্বরী। পুলিশ সূত্রের খবর, জন্মদিনের পার্টির নাম করে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে বছর চব্বিশের ওই তরুণীকে।


চেন্নাইয়ের (Chennai) দক্ষিণপ্রান্তের থালাম্বুর নামের একটি জায়গায় এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। নিহত আর নন্দিনী মাদুরাইয়ের (Madurai) বাসিন্দা। সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার ওই তরুণী তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে চেন্নাইয়ে থাকতেন। স্থানীয় পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, নিহত ও অভিযুক্ত দুজনে বন্ধু ছিলেন। চেন্নাইয়ে তাঁরা একসঙ্গে থাকতেন। এখনও পর্যন্ত যা প্রমাণ মিলেছে তাতে পুলিশের দাবি কোনওরকম যৌন নির্যাতনের চিহ্ন দেখা যায়নি। অভিযুক্ত আগেও কোনওরকম হিংসাত্মক ঘটনা ঘটিয়েছিল কিনা, তা এখনও জানা যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে-একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর এমনটাই।


এখনও পর্যন্ত যা তদন্ত হয়েছে তাতে উঠে এসেছে একটি ভয়ানক তথ্য। মাদুরাইতে এই দুজন একসঙ্গেই পড়তেন। দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। এরই মধ্যে লিঙ্গ পরিবর্তন (sex change) করেন অভিযুক্ত, তারপরেও তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। কিছু সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, অভিযুক্তের তরফে সম্পর্কের প্রস্তাব পেলেও তাতে রাজি হচ্ছিলেন না আর নন্দিনী। এরই মধ্যে কাজের জায়গায় কারও সঙ্গে কোনওরকম সম্পর্ক তৈরি হচ্ছিল আর নন্দিনীর। তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে অভিযুক্ত (Jilted Lover)। সন্দেহ করা হচ্ছে, তখনই খুনের ফন্দি আঁটে অভিযুক্ত।


নন্দিনীর জন্মদিনের দিন তাঁর সঙ্গে দেখা করে অভিযুক্ত। সেই সময়েই কোনও এক নির্জন জায়গায় গিয়ে নির্মম ভাবে খুন করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আহত তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশকে ডাকে। সেই সময় প্রায় মরোমরো নন্দিনীর থেকে অভিযুক্তের নম্বর পেয়ে তাকে ডেকে আনা হয়। কিছু সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, একেবারে স্বাভাবিক অবস্থায় এসে পুলিশের সঙ্গে নন্দিনীকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে ওই অভিযুক্ত, তারপরেই বেপাত্তা হয়ে যায়। এর মধ্যেই শনিবার মারা যান তরুণী। তদন্তে নেমে বেশ কিছু সন্দেহ হওয়ার অভিযুক্তর খোঁজ করে পুলিশ, রবিবার তাকে ধরা হয়। তারপর তদন্ত এগোতেই সামনে এসে যায় ভয়াবহ এই খুনের ঘটনা। 


আরও পড়ুন: বড়দিনের সন্ধ্যায় সোনার দোকানে লুঠ, পালানোর সময় শ্যুটআউট