কলকাতা: মনের ইচ্ছেটাই সব। সেখানে যে বয়স কোনও বাধা হতে পারে না, তা দেখিয়ে দিলেন এক নবতিপর শিক্ষিকা। সুদীর্ঘ সময় কর্মক্ষেত্রে কাটিয়ে বেশিরভাগ মানুষ চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন নিজের মত করে বাকি দিন যাপন করার। সেই অবসর যাপনে কাজ কম, উপভোগ যেন বেশি হয়, পরিকল্পনা থাকে এমনটাই। কিন্তু ৯৩ বছর বয়সী প্রফেসর চিলুকুরি সানথাম্মা মানুষের এই ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করেছেন। 


নব্বই পেরনো শিক্ষিকার (Teachers Day) কাছে বয়স একটি শব্দ মাত্র এবং অবসর একটি বিদেশি ধারণাসম। প্রফেসর চিলুকুরি সানথাম্মা শিক্ষকতার প্রতি নিজের আবেগ পূরণ করতে এমন কিছু করেন, যা শুনে অবাক হতে হয়। ৯৩ বছর বয়সি সানথাম্মা ক্রাচের সাহায্যে হাঁটেন। তা সত্ত্বেও, তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতে প্রতিদিন বিশাখাপত্তনম থেকে ভিজিয়ানগরম পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার আসেন। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের সেঞ্চুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপিকা। গত ৬ দশক ধরে তিনি এখানে অধ্যাপনা করছেন। এর পাশাপাশি সানথাম্মা বিশ্বের অন্যতম প্রবীণ অধ্যাপক। (Teachers Day Special) 


শিক্ষাদান অনেকের কাছে আবেগ। তাদের উদ্দেশ্য ছাত্রছাত্রীদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা। নিজেদের জ্ঞানের আলো তাদের মধ্যে প্রস্ফুটিত করে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতকে উজ্জ্বল করে তোলা। আর এই কাজে ব্রতী মানুষজনের কাছে অবসর নামক শব্দটার কোনো দামই নেই। তেমনই একজনের সাথে আপনাদের পরিচয় করাতে চলেছি যার নাম অধ্যাপক চিলুকুড়ি সান্তম্মা। (education) 


আরও পড়ুন, 'চলে যেতে হবে, কিন্তু যাওয়ার আগে কিছু করে যাব', এজলাসেই মন্তব্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের


অধ্যাপিকার কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠা দেখে শিক্ষার্থীরা মুগ্ধ। তাই কোনওভাবেই চিলুকুরি সানথাম্মার ক্লাস মিস করতে চান না। সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা অধীর আগ্রহে তাঁর ক্লাসের জন্য অপেক্ষা করে। প্রফেসর সানথাম্মা কখনওই নিজের ক্লাসে দেরী করে আসেননি। শিক্ষার্থীরা অধ্যাপিকার শৃঙ্খলা, নিষ্ঠা এবং প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাসী। অধ্যাপক সানথাম্মার জ্ঞান ভান্ডার দেখে শিক্ষার্থীরা তাঁকে 'এনসাইক্লোপিডিয়া' বলে ডাকেন।


এক সংবাদমধ্যমে সাক্ষাৎকারে তিনি জানান যে, বয়স তার কাছে কেবলই একটা সংখ্যা। তিনি বলেন, “আমার মা ভাঞ্জকসাম্মা ১০৪ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। আমাদের সবার স্বাস্থ্য নির্ভর করে মনের উপর। স্বাস্থ্যই সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমি নিজেকে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে তুলনা করতে পারি না তবে আমি বিশ্বাস করি আমি এখানে একটি উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছি, যা হল জীবনের শেষ অবধি আমি যা শিখেছি তা শিখিয়ে যাবো।”