মুম্বই: মধ্যরাতে পড়শির দরজায় টোকা দিয়ে বিপাকে এক ব্য়ক্তি। অসদাচারণের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। জরিমানা করা হয়েছিল মোটা টাকা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। কিন্তু সেখানেও স্বস্তি পেলেন না তিনি। জরিমানার নির্দেশ বাতিল করা তো দূর, ওই ব্যক্তির আচরণ অসঙ্গত বলে জানিয়ে দিল আদালত। (Bombay High Court)
বুধবার বম্বে হাইকোর্ট এই মন্তব্য করেছে। অভিযুক্ত CISF কনস্টেবলকে জরিমানা দিতে হবে বলে যে নির্দেশ দিয়েছিলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, সেই নির্দেশ খারিজ করতে রাজি হয়নি আদালত। বিচারপতি নিতিন জামদার এবং এসএস সতায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানান, কর্তা বাড়িতে নেই। একা মহিলা ছ'বছরের কন্যাকে নিয়ে রয়েছেন। সব জেনেও মাঝরাতে পড়শির দরজায় হাজির হন ওই ব্যক্তি। পেট খারাপের কথা জানিয়ে লেবু চান। এই ধরনের অজুহাত অত্যন্ত ছেঁদো। অসদাচরণ করেছেন উনি। (Viral News)
অভিযুক্ত যে আচরণ করেছেন, তা একজন CISF কর্মীর হিসেবে একেবারে শোভনীয় বলে জানায় আদালত। আদালত জানিয়েছে, বাড়ির কর্তা অভিযুক্তের সহকর্মী। তিনি যে বাড়িতে নেই, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী ডিউটিতে মোতায়েন রয়েছেন, তা বিলক্ষণ জানতেন। তার পরও মাঝরাতে পড়শির স্ত্রীর দরজায় টোকা দেন উনি।
আরও পড়ুন: Manoj Tigga: হনুমান মন্দিরে প্রণাম করে কালী মন্দিরে পূজা দিলেন মনোজ টিগ্গা | ABP Ananda LIVE
অভিযুক্তি CISF কর্মী অরবিন্দ কুমারের বিরুদ্ধে পড়শির সঙ্গে অসদাচারণের অভিযোগ ওঠে। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত টানাপোড়েন চলে সেই নিয়ে। শেষ পর্যন্ত অসদাচারণের জন্য অরবিন্দকে জরিমানা করেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অরবিন্দ। কিন্তু স্বস্তি মিলল না। অরবিন্দ সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ওই রাতে পড়শির দরজায় হাজির হননি বলে জানাল আদালত।
অভিযোগ, ২০২১ সালের ১৯ এপ্রিল মধ্য রাতে পড়শির দরজায় টোকা দেন অরবিন্দ। ওই বাড়ির মহিলা তখন একা ছিলেন। অত রাতে অরবিন্দকে দেখে ভয় পেয়ে যান তিনি। অরবিন্দকে চলে যেতে বলেন তিনি। সতর্ক করেন বার বার। বেশ খানিক ক্ষণ তর্ক-বিতর্কের পর অরবিন্দ পড়শির দরজা থেকে সরে যান। এর পর CISF-এর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান ওই মহিলা। অরবিন্দের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয় সেই নিয়ে।
তদন্ত শুরু হলে জানা যায়, ওই রাতে সঠিক আচরণ করেননি অরবিন্দ। মত্ত অবস্থায় ওই মহিলার দরজায় হাজির হন তিনি। বার বার চলে যেতে বললেও, সরেননি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন অরবিন্দ। জানান, পেটের সমস্যা ছিল তাঁর। তাই লেবু চাইতে গিয়েছিলেন পড়শির কাছে। যদি তাঁর যুক্তি ধোপে টেকেনি। শাস্তিস্বরূপ তিন বছরের জন্য তাঁর বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়। জানানো হয়, তিন বছর বেতনবৃদ্ধি হবে না তাঁর। পাশাপাশি, অসদাচারণের জন্য় জরিমানাও করা হয় তাঁকে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অরবিন্দ। অরবিন্দের দাবি ছিল, যে সম পড়শির দরজায় হাজির হন তিনি, ডিউটিতে ছিলেন না। যদিও আদালত তাঁর এই যুক্তিও খারিজ করে দেয়। জানানো হয়, সেন্ট্রাল সিভিল সার্ভিস আচরণবিধি অনুযায়ী, এমন কিছু করা উচিত নয়, যা সরকারি কর্মীর ভাবমূর্তির সঙ্গে খাপ খায় না।