আজকের ঘটনা নয়। ১৯৯১ সালে মার্কিন গায়িকা এবং গীতিকার পাম রেনল্ডসের সঙ্গেই ঘটেছিল এই ঘটনা। আর তাঁর এই ঘটনার মধ্য দিয়েই মৃত্যু পরবর্তী জীবনের রহস্যের প্রতি আরও আকৃষ্ট হয়েছে বিশ্ববাসী। মস্তিষ্কের এক বিরল অস্ত্রোপচারের সময় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পাম রেনল্ডসকে ‘ক্লিনিক্যালি ডেড’ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরেই তাঁর প্রাণ ফিরে আসে। আর তারপরে তিনি জানান মৃত্যুর পরে এক উজ্জ্বল আলোর সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি, মৃত আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করেন পাম, এতদিন স্বর্গ বলে যা ভাবতেন তা চোখের সামনে দেখতে পান তিনি। আর তাঁর এই বর্ণনা পেশাদার চিকিৎসকদের হতভম্ব করে দেয়। তারপর থেকেই চিকিৎসক মহলে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে পরকালের অস্তিত্ব সম্পর্কে বিতর্ক শুরু হয়।

১৯৯১ সালে গায়িকা ও গীতিকার পাম রেনল্ডসের মস্তিষ্কের অ্যানুইরিজমের কারণে জটিল অস্ত্রোপচার দরকার হয়েছিল। এক্ষেত্রে তাঁর শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনা হয়েছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, রক্ত অপসারণ করে সাময়িকভাবে হৃৎপিণ্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘হাইপোথার্মিক কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’।

আর এই সময়েই সেই মহিলা ‘মৃত’ ছিলেন বলে দাবি করেছিলেন চিকিৎসকেরা। তাঁর মস্তিষ্ক ও শরীরে কোনও কার্যকলাপ ছিল না। তবে অস্ত্রোপচারের পরে জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পরে পাম রেনল্ডস একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন। পাম ডাক্তারদের জানান যে অস্ত্রোপচারের সময় তিনি সচেতন ছিলেন এবং অপারেশন থিয়েটারে যা কিছু ঘটছে তা তিনি শুনতে পাচ্ছিলেন। তিনি ডাক্তারদের কথোপকথন ও ব্যবহৃত অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে বর্ণনাও করেছিলেন। এছাড়াও তিনি দাবি করেন যে তিনি দেখেছিলেন যে নিজের শরীরের উপর দিয়ে তিনি যেন ভেসে বেড়াচ্ছিলেন। আর উপর থেকে সম্পূর্ণ অপারেশনটি দেখছেন তিনি।

পাম বর্ণনা করেছেন যে অস্ত্রোপচারের সময় একটি উজ্জ্বল আলো তাঁকে তাঁর দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। আর তিনি যখন এই আলোর দিকে এগোচ্ছিলেন, সেই সময় পাম নিজের মৃত আত্মীয়দের দেখতে পান, তারা পামকে ডাকছিলেন। কিন্তু এক রহস্যময় ছায়া তাঁকে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়। অবশেষে তিনি নিজের শরীরে ফিরে আসেন। এই বর্ণনা বিভ্রান্ত করে দিয়েছিল চিকিৎসকদের। অপারেশনের প্রধান নিউরোসার্জন ডা. মাইকেল সাবম পাম রেনল্ডসের এই দাবিগুলি তদন্ত করেছেন, এবং জানিয়েছেন যে তিনি যে সময় অজ্ঞান ছিলেন সম্পূর্ণরূপে কিন্তু তারপরেও তিনি সঠিকভাবে সমস্ত যন্ত্রপাতি ও অপারেশন থিয়েটারের বর্ণনা দিয়েছেন।