Gujarat 3 Feet Doctor: অসম্ভব বলে কিছু নেই। যা দেখা যায়, যা শোনা যায় সবই সম্ভব। ইচ্ছে থাকলে সবই করা যায়, করতে পারে মানুষ। ইচ্ছে, সংকল্প আর কঠিন পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে সমস্ত লড়াই জিতে নেওয়া যায়। গুজরাতের গণেশ বড়ইয়া যেন এই কথাগুলিকেই সত্য প্রমাণ করলেন। উচ্চতার কারণে সুযোগ মিলছিল না ডাক্তারি পড়ার। কিন্তু তাই বলে হাল ছেড়ে দেননি তিনি। আইনি লড়াই লড়ে নিজের অধিকার জিতে নিয়েছেন গণেশ। এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করে আজ গুজরাটের একটি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. গণেশ বড়ইয়া (Dr Ganesh Baraiya)।
মাত্র তিন ফুট উচ্চতা গণেশ বড়ইয়ার আর তাই তাঁকে প্রথমে মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ডাক্তারি পড়তে দেয়নি। ২৩ বছরের গণেশকে এমবিবিএস পড়তে দেয়নি মেডিকেল কাউন্সিল কারণ উচ্চতা কম থাকার কারণে তিনি নাকি আপদকালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন না। এই সিদ্ধান্তে পিছু হটেননি ডা. গণেশ বড়ইয়া। স্কুলের অধ্যক্ষ, তারপর ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর এবং পরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তদবির করেন তিনি। তাঁকে যাতে মেডিকেল পড়তে দেওয়া হয় সে ব্যাপারে এ ছিল তাঁর অধিকার আদায়ের লড়াই। আর এই লড়াইতে ভয় না পেয়ে গুজরাত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন গণেশ বড়ইয়া (Dr. Ganesh Baraiya)।
মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গুজরাত হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন গণেশ বড়ইয়া। কিন্তু দু'মাস মামলা চলার পর হাইকোর্টে হেরে যান গণেশ (Dr Ganesh Baraiya)। কিন্তু তাতেও তাঁকে দমানো যায়নি। সাহস হারাননি গণেশ। হাইকোর্টে হারলেও তারপর একই দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেন তিনি। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায় জীবনের ভাগ্য বদলে দেয় গণেশের। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মেডিকেল কাউন্সিলের আদেশ খর্ব হয়ে যায়, ২০১৯ সালে এমবিবিএস পড়তে ভর্তি হন গুজরাতের গণেশ বড়ইয়া। বর্তমানে তিনি এখন গুজরাতের ভাবনগরের সরকারি হাসপাতালে ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করছেন।
সংবাদসংস্থা এএনআইকে এক সাক্ষাৎকারে ডা. গণেশ বড়ইয়া (Dr. Ganesh Baraiya) জানান, 'দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দেওয়ার পরে আমি নিট পরীক্ষায় পাশ করেছি। কিন্তু আমার উচ্চতা কম হওয়ার কারণে মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া আমার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে কারণ আমি নাকি আপদকালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারব না। তারপর আমি আমার স্কুলের অধ্যক্ষ ড. দলপত ভাই কাটারিয়া এবং রেভাশিস সরভইয়ার সঙ্গে কথা বলি যে এই বিষয়ে ঠিক কী কী করা যায়। তাঁর কথা শুনেই আমরা ধীরে ধীরে গুজরাতের হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করি। আমাদের সঙ্গে আরও দুজন প্রতিবন্ধী প্রার্থী ছিলেন। আমরা হাইকোর্টে হেরে গিয়েছিলাম, আর তাই সুপ্রিম কোর্টে ফের পিটিশন দাখিল করেছি।'
ডা. গণেশ বড়ইয়া (Dr Ganesh Baraiya) আরও বলেন, '২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট আমাকে মেডিকেল পড়ার অনুমতি দেয়। কিন্তু যেহেতু ২০১৮ সালে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল, তাই ২০১৯ সালে আমি এমবিবিএসে ভর্তি হই। আর সেই বছরই সরকারি মেডিকেল কলেজ গুজরাতের ভাবনগরে ভর্তি হই আমি। এভাবেই শুরু হয় আমার এমবিবিএসের পথে যাত্রা।'