নয়াদিল্লি : কর্মক্ষেত্রে উত্তুঙ্গ চাপ। কাজের চাপে হারিয়ে যাওয়া পারিবারিক জীবন। ক্রমাগতই হারাচ্ছে কাজ ও জীবনের সামঞ্জস্য । এর জেরে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। নানা শারীরিক , মানসিক ব্যাধি থেকে পরিবার ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে এর জেরে। তালিকা হচ্ছে লম্বা। আর এবার সপ্তাহে ৮৪ ঘণ্টা কাদের কথা বলে বিতর্কে জড়ালেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিইও।
সম্প্রতি তিনি একটি জব-পোস্টে জানিয়েছিলেন, তাঁর সংস্থা AI startup Greptile এ কাজের শর্ত হল, সপ্তাহে ৮৪ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। সেখানে work-life balance বলে কোনও বিষয় থাকবে না। এমন কর্ম সংষ্কৃতিই চান ওই স্টার্ট আপ - সংস্থার প্রধান। দক্ষ গুপ্তা নামে ওই ব্যক্তির পোস্ট মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। নেটিজেনরা কমেন্ট বক্সে উগরে দেন ক্ষোভ। সম্প্রতি দক্ষ দাবি করেছেন, এই পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পরই তাঁর ই-মেলের ইনবক্স উপচে পড়েছে। যে মেলগুলি তিনি পেয়েছেন তার ২০ শতাংশই হল প্রাণনাশের হুমকি। আর ৮০ শতাংশ মেল চাকরির আবেদন।
দক্ষ গুপ্তা নিজেই জানিয়েছেন, বেশির ভাগ প্রতিক্রিয়াই নেতিবাচক। তাঁর কোম্পানিতে কাজ করতে গেলে সকাল ৯ টা থেকে রাত ১১ টা অবধি কাজ করতে হবে। শনিবারেও কাজে চাপ কম নয়। কাজ করতে হবে ১৪ ঘণ্টাই। কোনও কোনও সময় রবিবারও কাজ করতে হবে। তিনি পরিষ্কার বলে দেন তাঁর কোম্পানির পরিবেশ প্রচণ্ড চাপের। সেখানে কম কাজ করেন যাঁরা, তাঁদের বরদাস্ত করা হয় না। তাই 'পুয়র ওয়ার্ক'-এর কোনও জায়গা নেই সেখানে।
তাই দক্ষ গুপ্তা আবেদনকারীদের ইন্টারভিউয়ের শুরুতেই বলে দেন, তাঁর অফিসে no work-life balance ! তিনি এও বলেন, প্রথমেই একথা বলে দিতে তাঁরও ভাল লাগে না। তবে তিনি মনে করেন, প্রথম থেকেই স্বচ্ছ থাকা ভাল। একজন কাজে যোগ দিয়ে এমন পরিবেশ টের পেল, সেটা ঠিক নয় । তিনি বলেন, কোম্পানি পুরনো হলে তাঁরা আরও বয়স্ক, আরও অভিজ্ঞ লোকদের নিয়োগ করবে। তাঁরা হয়ত সপ্তাহে ১০০ ঘণ্টা কাজ করতে পারবে না।
দক্ষ গুপ্তার এই পোস্ট তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। অনেকেই এমন ভাবা চিন্তার তীব্র নিন্দা করে। নেটিজেনরা একে 'বিষাক্ত কাজের পরিবেশ' এবং 'ভয়ানক মানসিকতার' পরিচয় নিন্দা করেছেন। কেউ কেউ আবার সিইওর বক্তব্যের স্বচ্ছতার প্রশংসা করেছেন। কারও কারও মতে, পারিশ্রমিক যথেষ্ট না হলে, এ ধরনের কাজের শর্ত ও পরিবেশ, দাসত্বের সামিল।