ইসলামাবাদ: দাঁতের ব্যথা, বড় ব্যথা! যে না ভুগেছেন, তার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। তবে এই ব্যথা যে হাতির মতো প্রাণীকেও কাবু করতে পারে, তার প্রমাণ মধুবালা। আশার কথা একটাই। বছরের পর বছর যন্ত্রণায় কাতরানোর পর অবশেষে যন্ত্রণামুক্তি হয়েছে পাকিস্তানের বাসিন্দা ১৬ বছরের হস্তিনীর। 


কী ভাবে মুক্তি?
করাচিতে আরও তিনটি আফ্রিকান হাতির সঙ্গেই চিকিৎসা চলছিল মধুবালা। ব্যামো বড় কম কষ্টকর নয়। একটা দাঁত ভেঙে গিয়েছিল। সেখান থেকেই মাঝেমধ্যে সংক্রমণ। বড় কষ্ট পাচ্ছিল সে। ২০২১ সালে সিন্ধ হাইকোর্ট 'ফোর পজ' নামে একটি পশুকল্য়াণ সংগঠনকে ওই চারজনের শুশ্রুষা করার অনুমতি দেয়। সেই শুরু। তবে যন্ত্রণামুক্তি এল অভিনব পথে। একেবারে অভিনব অভিযান বলা চলে।  এ জন্য 'সিডেশন' বা ঘোর তৈরি করা হয় তার মধ্যে। তার পর দস্তুরমতো অপারেশন। তবে এই অপারেশনেই আসল কেরামতি। মধুবালা কিন্তু গোটা সময়টা দাঁড়িয়ে ছিল। টেপ দিয়ে তার চোখ বন্ধ করে দেওয়া হয়, ঘোরের চোটে যাতে সে পড়ে না যায় সে জন্য পা গুলোকে লাগোয়া গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হয়। এবার সংক্রমিত দাঁত তুলে ফেলার পালা।


দন্ত উৎপাটন...
কিন্তু এতো মানুষের দাঁত নয়। পেল্লায় হস্তিনীর দাঁত তুলতে বড়সড় যন্ত্র আনতে হয়েছিল 'ফোর পজ'-র চিকিৎসকদের। তার পরও একসঙ্গে পুরো দাঁতটা ওঠেনি। টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে বেরোয়। একটাই নিশ্চিন্তি ছিল। ঘোরের মধ্যে থাকায় কোনও বাঁধা দেয়নি ১৬ বছরের হস্তিনী। ৫-৬ ঘণ্টার অপারেশন নির্বিঘ্নেই হয়েছে। তবে অপারেশনের আগে বেশ কিছু প্রস্তুতি নিতে হয়। যেমন এন্ডোস্কোপি করে দেখে নেওয়া হয়, ভেঙে যাওয়া দাঁতের কতটা অংশ মুখের ভিতর রয়েছে। দেখা যায়, ওই অংশের মাপ ১২ ইঞ্চিরও বেশি। তাই সবটা একসঙ্গে বের করা যায়নি। তবে করাচি চিড়িয়াখানার যে ভাবে গোটা অভিযান চলেছে, তাতে সকলেই খুব বেশি। আপাতত অপারেশন-পরবর্তী চিকিৎসা চলছে মধুবালার। শুধু একটাই চিন্তা। এখনও দাঁতের 'রুট'-টা রয়ে গিয়েছে। তবে আশা করা যায়, যে ভাবে ফ্লাশ করা হচ্ছে, তাতে দ্রুত ক্ষত শুকিয়ে যাবে।


দাঁড়িয়ে কেন?
চিকিৎসকদল জানালেন, হস্তিনীকে পুরোপুরি অ্যানাস্থেশিয়া করলে তা প্রাণঘাতী হতে পারত। সবটা ভেবেই তাঁকে দাঁড় করিয়ে সিডেশন দেওয়া হয়। আপাতত সাফল্যে খুশি তারা। এখন মধুবালার সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠার অপেক্ষা।


আরও পড়ুন:মমতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্রত্যাগ, সস্ত্রীক আত্মসমর্পণ KLO নেতা কৈলাসের