মুম্বই: খোঁপা আর এলোচুলের বিবাদের কথা লিখেছিলেন কবি। মাথায় টাক পড়লে, খোঁপা বা এলোচুল, দু'টির কোনওটিই থাকবে না লিখেছিলেন। বাস্তব জীবনে সত্যি সত্যিই শুধুমাত্র টাক মাথা পড়ে রইল। বলা নেই, কওয়া নেই, গায়েব হয়ে গেল চুল। একজন বা দু'জন নন, তিন-তিনটি গ্রামে গণ হারে টাক পড়তে শুরু করল মহারাষ্ট্রে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে এক সপ্তাহের মধ্যে মাথা ফাঁকা হয়ে গেল বহু মানুষের। ছেলে, বুড়ো কেউ রক্ষা পেল না। (Maharashtra News)
মহারাষ্ট্রে বুলঢানায় মাথা টাক হয়ে যাওয়ার মহামারি দেখা গিয়েছে কার্যত। মাত্র একসপ্তাহের মধ্যে মাথা ফাঁকা হয়ে গিয়েছে তিন গ্রামের বহু বাসিন্দার। টাক পড়া অস্বাভাবিক না হলেও, সাত দিনে গণ হারে এমন টাক পড়ার ঘটনা বেনজির। ফলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। ডাক্তার-বদ্যি কিছুই বাকি রাখছেন না টাকমাথার লোকজন। কিন্তু কারণ বোধগম্য হচ্ছে না কারও। (Maharashtra Villagers Sudden Baldness)
গণহারে মাথা টাক হয়ে যেতে দেখে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, যা কানে পৌঁছয় স্থানীয় প্রশাসনের। সেই মতো টাকমাথা লোকজনদের পরীক্ষা করে দেখা হয়। খতিয়ে দেখা হয় পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিও। আর তাতেই চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে। গণহারে এত মানুষের মাথা ফাঁকা হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে দূষণ এবং কৃষিতে ব্যবহৃত সারে মজুত রাসায়নিককে দায়ী করলেন বিশেষজ্ঞরা।
গণহারে টাক পড়ে যাওয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখতে গিয়ে টাকমাথাদের চুল এবং ত্বকের নমুনা সংগ্রহ করেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। গবেষণা হয় পুকুরের জল নিয়েও। আর তাতেই দেখা যায়, মাথা ফাঁকা হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে জলদূষণ এবং সারের ভূমিকা রয়েছে। বড়গাঁও, কালওয়াড় হিঙ্গনা গ্রামেই মূলত গণহারে টাক পড়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে মাথা। এমনি হাত ছোঁয়ালেও চুল উঠে আসছে বলে দাবি করেন। কিছু মানুষজন জানান, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই মাথায় টাক পড়ে যায় তাঁদের।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ওই তিন গ্রামে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা পৌঁছে যান। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, প্রায় ৫০ জনের মধ্যে এই সমস্যা পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু আগামী দিনে টাকমাথাদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, দূষিত জলই এই সমস্যার মূল কারণ। জমির সার জলে মিশেই এই বিপদ দেখা দিয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। আপাতত গ্রামবাসীদের চুল এবং ত্বকের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে। আপাতত গ্রামবাসীদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে বহু মানুষই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি, জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক দীপালী রহেকর জানান, নমুনা সংগ্রহ করা হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই সঠিক কারণ বোঝা সম্ভব হবে।