কলকাতা: স্কুল থেকে ফিরছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। আর সেই ফেরার পথেই ওঁত পেতে বসে ছিল বাঘ। গাছের উপর চড়ে বসে থাকা সেই বাঘ সরাসরি ঝাঁপিয়ে পড়ে ১৭ বছরের স্কুল পড়ুয়ার উপর। প্রথম কামড় ঘাড়ে ও পরের কামড় মাথায় বসায়। কিন্তু তার পরেও কাবু করতে পারেননি সাহসী নাবালককে। একটু সুযোগ পেতেই সোজা বাঘের জিভ ধরে টান মারে ছেলেটি। আর সেই টানেই কুপোকাত হয়ে যান বাঘ বাহাদুর। লেজ তুলে চোঁচা দৌড়। 


উত্তরাখণ্ডের বাঘের সঙ্গে লড়াই


বয়স ১৭ হলেও সাহসের কমতি নেই। আর সেই সাহসে ভর করেই বাঘকে লড়াইয়ে পরাস্ত করেছিল অঙ্কিত। ঘটনাটি গত বছরের। স্কুল থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ফেরার সময় বাঘের কবলে পড়েছিল সে। কিন্তু কয়েক মুহূর্তেই বাঘকে ধরাশায়ী করে ফেলে অঙ্কিত। নিজের প্রাণ বাঁচায়। একইসঙ্গে বন্ধুদেরও বাঁচায় সে। কিন্তু এর জন্য মাসুলও গুনতে হয়েছে। বাঘের মুখ থেকে ফিরে এলেও অক্ষত ছিল না সে। 


ক্ষতবিক্ষত অঙ্কিতকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তাঁর বন্ধুরা


মাথার ত্বক উঠে গিয়েছিল অঙ্কিতের। বেরিয়ে এসেছিল খুলি। বাঘের কামড়ে ঝুলে পড়েছিল ডান কান। মুখ, গলা, ডান হাতসহ বেশ কিছু অঙ্গের ক্ষতি হয় অঙ্কিতের। তাঁকে বন্ধুরা কাছের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় প্রথমে। এর পর সেখান থেকে গুরুগ্রামের মণিপাল হাসপাতালে ট্রান্সফার করা হয়। সেখানেই তার অঙ্গগুলিকে মেরামত করতে শুরু করেন চিকিৎসকরা। প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়েছিল অঙ্কিতের। সেই অবস্থা সামাল দিয়ে কয়েক মাস ধরে চিকিৎসা চলে অঙ্কিতের। 


মাথার খুলি থেকে হাত, সব অঙ্গের চিকিৎসা


উত্তরাখণ্ডের রামনগরের বাসিন্দা অঙ্কিত। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে তাকে কাটাতে হয়েছে হাসপাতালেই। মণিপাল হাসপাতালেই তাঁকে প্লাস্টিক সার্জারি করে সুস্থ করে তোলা হয়েছে কিছুটা তবে এখনও অস্ত্রোপচার বাকি রয়েছে। কারণ সবকটি অঙ্গ আগের মতো এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসক।


কী জানাচ্ছেন চিকিৎসক


চিকিৎসক আশিষ ধিংড়া সংবাদমাধ্যম এএনআই-কে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মৃত্যু অবধারিত ছিল যেখানে, সেখানে উপস্থিত বুদ্ধি ও সাহসই বাঁচিয়ে দিল ছেলেটিকে। আপাতত চারটি ধাপে ছেলেটির চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। সাধারণ পথ দুর্ঘটনা হলে এই ধরনের রোগীর চিকিৎসাকরতে হয় বলে জানান আশিষ। তবে একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, বাঘ ও পথ দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার মধ্যে তফাত রয়েছে।


আরও পড়ুন - Offbeat News: মাইগ্রেনের প্রবল যন্ত্রণা, রোগীর সিটি-স্ক্যানের রিপোর্ট দেখে হতচকিত চিকিৎসকরা