নয়াদিল্লি: দিনে দিনে আরও খামখেয়ালি হয়ে উঠছে প্রকৃতি। তাপমাত্রার পারদ বেড়ে চলেছে উত্তরোত্তর। গলে যাচ্ছে হিমবাহ, আন্টার্কটিকার বরফ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রকোপে দমবন্ধ পরিস্থিতি এশিয়া জুড়ে। সেই আবহেই এবার বেনজির দৃশ্য সামনে এল। লাগাতার পারদ চড়তে থাকার ফলে পড়শি দেশে যানবাহনও ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করেছে। রাস্তাঘাটে নামালেই ফুলেফেঁপে যাচ্ছে চারচাকার গাড়ি। গাড়ির দরজা, জানলা, বনেট ফুলে বৃহৎ বুদবুদের আকার ধারণ করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি এবং ভিডি ছড়িয়ে পড়েছে। (Viral News)
পড়শি দেশ চিনেই এই অবাককাণ্ড ঘটছে বলে খবর। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি এবং বিডিও সামনে এসেছে, তাতে কোনও গাড়ির সামনের অংশ বেলুনের মতো ফুলে উঠেছে। কোনও কোনও গাড়ির দরজা ফুলে উঠেছে দুই দিক থেকে। তীব্র গরমেই গাড়িগুলির এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে যেমন, তেমনই বিষয়টি নিয়ে হাসিঠাট্টাও শুরু হয়েছে। টিকা-টিপ্পনি উড়ে আসছে অনেকের কাছ থেকেই। (China Pregnant Cars)
স্ফীতোদর গাড়িগুলিকে দেখে বিদ্রুপ করে কেউ কেউ লিখেছেন, 'হেসে উড়িয়ে দেওয়ার মতো বিষয় নয়। চিনে গাড়িও আজকাল গর্ভবতী হয়ে পড়ছে'। কেউ কেউ লিখেছেন, 'এর চেয়ে ভাল বর্ণনা হতে পারে না। একমত না হয়ে পারছি না। সন্তানরূপে গাড়িগুলি যদি আরও গাড়ির জন্ম দেয়, সেক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ারই কথা নয়'। কিন্তু গরমে গাড়ির স্ফীতোদর গজায় কী করে, তাও বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই।
এ নিয়ে যে তত্ত্ব সামনে এসেছে, তা হল, যে গাড়িগুলির স্ফীতোদর চোখে পড়ছে, সেগুলি স্থানীয় চিনা সংস্থার তৈরি। গাড়িগুলির উপর ঝকঝকে রংয়ের প্রলেপ থাকে। সেই রং যাতে নষ্ট না হয়, তার উপর একধরনের আঠা লেপে দেওয়া হয়। তাপমাত্রা অতিরিক্ত হওয়ার ফলে সেই রংসমেত সেই আঠাই ফুলে উঠছে। কারও কারও মতে, সস্তার আঠা লাগানোর ফলেই এমন অবস্থা। শুধু চিনা সংস্থার তৈরি গাড়ি নয়, দামি বিদেশি গাড়ির উপর লেপে দেওয়া ওই আঠাও ফুলে উঠেছে বলে জানা গিয়েছে।
তবে এর জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। লাগাতার গত তিন মাস ধরে তাপপ্রবাহ চলছে চিনে। তাপমাত্রা লাগাতার ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর রয়েছে। দেশের প্রায় ২৬০টি এলাকায় তাপপ্রবাহ চলছে। এই তীব্র দহনের জেরেই আঠা বুদবুদের আকারে গাড়ি থেকে উঠে আসছে বলে জানা গিয়েছে। সেই দৃশ্য সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তবে নেটিজেনদের একাংশ হাসি-মস্করা করলেও, বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের বলে মত বিশেষজ্ঞদের।