নয়াদিল্লি: না গায়ে ঢেলেছিলেন, না দিয়েছিলেন চুমুক। শুধুমাত্র ছোঁয়া লেগেছিল অ্যাসিডের। তাতেই বেঘোরে মৃত্যু হল এক মহিলার। অ্যাসিডর পাত্রের উপর পা পড়ে গিয়েছিল তাঁর। তরলের ছোঁয়া লেগেছিল পায়ের পাতায়। মাত্র পাঁচ দিনের মাথাতেই মৃত্যু হল ওই মহিলার। (China News)
চিনের পূর্বে অবস্থিত হাংঝৌ থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। ‘Bone Dissolving Water’ নামে পরিচিত হাইড্রোফ্লোরিক অ্যাসিডের ছোঁয়া লেগে মারা গিয়েছেন ৫২ বছর বয়সি ওই মহিলা, যাঁর পদবী Tu. (Viral News)
গত ৯ সেপ্টেম্বর পাহাড়ি এলাকায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন ওই মহিলা। সেই সময় পাহাড়ি রাস্তার ধারে পড়ে থাকা, একটি পুরনো পাত্র মাড়িয়ে ফেলেন। পাত্রটি এতটাই পুরনো ছিল যে মহিলার পা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভেঙে যায়। ভিতরে তরল অ্যাসিড ছিল কিছুটা। সরাসরি ওই অ্যাসিডের উপরই পা দিয়ে ফেলেন ওই মহিলা।
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ জানিয়েছে, অ্যাসিডের ছোঁয়া লেগে মহিলার পা ফুলে ঢোল হয়ে যায়। হাসপাতালে ভর্তি করলে দেখা যায় মাল্টিপল অর্গ্যান ফেলিওর হতে শুরু করেছে, পাশাপাশি ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্য়ালান্স গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছয়। তাঁকে বাঁচানোর আশা ছেড়েই দেন চিকিৎসকরা।
সেই অবস্থায় হাসপাতালে পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েন ওই মহিলা। শেষ পর্যন্ত হার্ট ফেলিওরে মারা যান তিনি। ওই মহিলার সন্তান বলেন, “জীবনে মিরাকল দেখার সৌভাগ্য় হল না। মা এমন ভাবে চলে গেল যে বিষয়টি বোধগম্যই হল না। এত দ্রুত ঘটল সবকিছু…।”
হাইড্রোফ্লোরিক অ্যাসিড একটি রঙহীন তরল। সেটি এতটাই ক্ষতিকারক যে সংস্পর্শে এলে ধাতু, কাচ সব গলে যায়। শিল্পক্ষেত্রে, দন্ত চিকিৎসার যন্ত্রপাতি থেকে জং তুলতে ওই তরল ব্যবহার করা হয়। সামান্য ছোঁয়া লাগলেও বিপদ হতে পারে। জামাকাপড়ে ছোঁয়া লাগলেও সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে নিতে হয়, চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়।
হাইড্রোফ্লোরিক অ্যাসিড ত্বক ফুটো করে কলা এবং হাড় গলিয়ে দেয়। সেই কারণেই এই অ্যাসিডকে ‘Bone Dissolving Water’ বলা হয়। ওই চিনা মহিলা যেখানে অ্যাসিডে পা দেন, সেখানে একটি আবাসন রয়েছে, যেটি ভাঙার কাজ চলছে। সেখান থেকে আরও দু’টি অ্যাসিডের পাত্র উদ্ধার হয়েছে। দেওয়াল পরিষ্কার করতে সেটি ব্যবহার করা হতো বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ।
ওই আবাসনের কর্মী Ai অ্যাসিডের পাত্র ফেলে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ২০১৫ সালে এলাকা ছাড়েন তিনি। কিন্তু এই ঘটনার পর তাঁকে আটক করা হয়েছে। দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য় সাত বছরের জেল পর্যন্ত হতে পারে তাঁর। অ্যাসিড বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা বসানোর দাবিও উঠছে সেখানে।