Kodak History: সবার আগে আবিষ্কার, তাও গুরুত্ব দেননি কর্মীকে, এক ভুলেই দেউলিয়া হয়ে যায় Kodak
ক্যামেরা এবং কোডাক, পরস্পরের সমর্থক হয়ে উঠেছিল এক সময়। ক্যামেরা বলতে কোডাক বুঝতেন সকলে। কিন্তু এক ভুলে ব্যবসায় ভরাডুবি হয় তাদের।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appকর্পোরেট সংস্থাগুলি অনেক ক্ষেত্রে নিজেই নিজের পায়ে কুড়ুল মারে। কোডাকের ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটে বলে ‘দ্য ডিসিশন লুম: আ ডিজাইন ফর ইন্টাব়্যাকটিভ ডিসিশন-মেকিং ইন অর্গানাইজেশন্স’ বইয়ে লিখেছেন কোডাকের প্রাক্তন আধিকারিক ভিন্স বারব্বা।
১৯৭৩ সালে কোডাকে যোগ দেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার স্টিভ স্যাসন। ১৯৭৫ সালে ডিজিটাল ক্যামেরা তৈরি করেন তিনি। ৫০ মিলি সেকেন্ড ছবি এবং ২৩ সেকেন্ডে ভিডিও রেকর্ডিং সম্ভব হয় সেই ক্যামেরায়।
কোডাক কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের আবিষ্কার যখন তুলে ধরেন স্যাসন। সেই সময় কী প্রতিক্রিয়া ছিল সংস্থার, তা পরবর্তী কালে সকলের সামনে আনেন তিনি। স্যাসনের দাবি, কোডাক কর্তৃপক্ষ ফিল্ম ছাড়া ছবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁকে বলা হয়, “বেশ মিষ্টি ব্যাপার। কিন্তু কাউকে এসব বোলো না।”
সেই সময় কোডাক কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল ক্যামেরার গুরুত্ব বোঝেননি এবং সেটা বোঝার মতো দূরদর্শিতা তাঁদের ছিল না বলে শোনা যায়। ফলে স্যাসনের আবিষ্কারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এমনিতে প্রযুক্তির জগতে বরাবর মাইলফলক তৈরির পক্ষে ছিল কোডাক। কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তি যে পরবর্তী কালে বাজার দখল করতে চলেছে, তা আন্দাজ করতে পারেননি কোডাক কর্তৃপক্ষ।
১৯৮১ সালে কোডাকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বাজারে Sony-র আবির্ভাব ঘটে। বাজারে ইলেকট্রনিক ক্যামেরা নিয়ে আসে তারা। তাতে কোডাকের অন্দরেও শোরগোল পড়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সমীক্ষা শুরু হয়। ওই সমীক্ষায় দু’টি বিষয় উঠে আসে। প্রথমটি হল, খারাপ খবর, অর্থাৎ ভবিষ্যতে কোডাকের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে ডিজিটাল ফোটোগ্রাফি। ভাল খবর উঠে আসে যে, ছবির জগতে ডিজিটাল বিপ্লব ঘটলেও, তাতে এখনও সময় আছে যথেষ্ট।
কিন্তু তার পরও যে ১০ বছর সময় ছিল, তাতে ডিজিটাল ফোটোগ্রাফির বিকল্প গড়ে তুলতে সফল হয়নি কোডাক। ১৯৮৫ সালে কোডাকের চাকরি ছেড়ে দেন ভিন্স। তার পর ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারে হাত দিলেও, কোডাক মূলত ফিল্মের উপরই নির্ভর ছিল।
১৯৮৯ সালে স্যাসন এবং রবার্ট হিলস মিলে DSLR ক্যামেরা তৈরি করেন। মেমরি কার্ড ব্যবহার করা হয় তাতে। কিন্তু তাতেও কোডাক কর্তৃপক্ষ খুশি হননি। স্যাসনের তৈরি ডিজিটাল ক্যামেরার পেটেন্ট-বাবদ কোডাক মোটা টাকা আয় করলেও, নিজেদের পণ্য হিসেবে বাজারে সেটি ছাড়তে রাজি হননি তাঁরা।
২০০৯ সালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা স্যাসনকে ন্যাশনাল মেডেল অফ টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন পুরস্কার প্রদান করেন। আমেরিকা সরকার বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার এবং উদ্ভাবকদের যে পুরস্কার দেয়, তার মধ্যে এই মেডেল সবচেয়ে সম্মানজনক।
কিন্তু কোডাক স্যাসনকে যেমন প্রাপ্য সম্মান দেয়নি, তেমনই তাঁর আবিষ্কারকেও গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। ফলে মাত্র কয়েক বছরেই কোডাকের একচ্ছত্র আধিপত্যে ভাগ বসায় Sony এবং অন্য সংস্থাগুলি। ২০১২ সাল নাগাদ বাজাররে দখলই হারায় কোডাক। যে কারণে ২০১২ সালে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে কোডাক।।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -