প্রায় ৩০০ বছরের রীতি, এই গ্রামে দড়ি দিয়ে বেঁধে আরাধনা হয় দেবী দুর্গার
কথিত আছে সন্ধ্যা প্রদীপ দেখাতে আসা এক গৃহবধূকে ভক্ষণ করেছিলেন মা দুর্গা। এই বিশ্বাসেই আজও মা দুর্গাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় বীরভূমের বানিওর গ্রামে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appএই পুরনো রীতির ওপর ভর করেই আজও চলে আসছে সেই প্রথায প্রাচীন রীতির কোনও নড়চড় হয়নি তিন শতাধিক বছরের এই পুজোয়।
হিন্দু প্রধান গ্রামে নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের বানিওর গ্রাম। ওই গ্রামেই বসবাস করতেন জমিদার রত্নেশ্বর রায়চৌধুরী। জানা যায়, দীর্ঘদিন নিঃসন্তান ছিলেন তিনি। এরপর তিনি মায়ের কাছে মানত করেন। বিশ্বাস মা দুর্গার আশির্বাদে জমিদার রত্নেশ্বর রায়চৌধুরীর পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
এরে পরেই ১৭১৫ সালে বানিওর গ্রামে পুজো শুরু করেন তিনি। প্রাচীন রীতি মেনে বোধন থেকেই মায়ের ঘট পুজো শুরু হয়ে যায়। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী চার দিন রীতি মেনেই পুজো হয়।
দশমীর দিন আমাদের বির্সজন করা হয় না একাদশী দিন সকালে বির্সজন হয়। পুজো চার দিন রায়চৌধুরী পরিবারে, আত্মীয়স্বজন সকলে এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া সারেন।
রায়চৌধুরী পরিবার বংশধর পার্থ রায়চৌধুরী জানান, এখানে মা’কে পাটের দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। দড়ি বাঁধা অবস্থায় পুজো হয় মায়ের।
কথিত আছে, পুজোর সময় কোন এক বছর গ্রামের এক গৃহবধূ সন্ধ্যা প্রদীপ দেখাতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর মায়ের মুখে গৃহবধূর কাপড়ের এক টুকরো অংশ দেখা যায়।
এরপর গ্রামের মানুষ মাকে মানুষখাকি বলতে শুরু করে। তারপর থেকেই জন্য দড়ি দিয়ে বাঁধার রীতি চালু হয়েছে। এখনও মনে করা হয় দেবী মা বাঁধা না থাকলে বাইরে বেরিয়ে ফের কোনও মেয়েকে খেয়ে ফেলতে পারেন।
সেই রীতি মেনেই একজন লোকও নিয়োগ করা হয়েছে মূর্তি বেঁধে রাখার কাজে। তাঁরাই বংশ পরম্পরা মা দুর্গাকে দড়ি বেঁধে রাখেন।
তার কাজ হল দড়ি বাঁধা ও বাঁধন খোলা। দড়ি বাঁধার জন্য মূর্তির পিছনে একটি গর্ত করা হয়েছে। সেই গর্তে খুঁটি পুঁতে রাখা হয়েছে। মা দুর্গাকে সেই খুঁটি এবং জানালা ও অন্যান পিলারে বেঁধে রাখা হয়।
ষষ্ঠীর দিন ঘটস্থাপনের আগে বাঁধা হয়। দশমীর দিন খোলা হয়। সেই রীতি এখনও চলে আসছে। নলহাটি বানিওর গ্রামে রায়চৌধুরী বাড়ির পূজো দেখতে গ্রামের মানুষ ছাড়া ভীড় জমায় আশে পাশে গ্রামের মানুষ ও।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -