Durga Puja 2024: চতুর্ভুজে সন্তানদের রক্ষা, অভয়া রূপে উমার আরাধনা চাঁদপাড়ায়
ঢাকের বাদ্যি, মন্ত্রোচ্চারণ, ধুনোর গন্ধ, পুষ্পাঞ্জলি- উৎসবের মুডে রাজ্যবাসী। পুজোর আনন্দে মেতেছে বাংলা। শহর পেরিয়ে গ্রামেও পুজোর মেজাজ।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appথিম নয়, আছে সাবেকিয়ানা, ঐতিহ্য। পুরনো রীতি মেনে প্রতিবছর উমাবরণ। পরিবারের সদস্যদের এক হওয়ার সময়। পুজোর এই ক’টাদিন সবাই মিলে সামিল উৎসবে। মেতে ওঠা শারদ-আনন্দে। এমনই ছবি রামপুরহাটের চাঁদপাড়া গ্রামে।
বীরভূমের রামপুরহাট ব্লক ২-এ এই চাঁদপাড়া গ্রাম। এই পুজো চৌধুরী বাড়ির পুজো বলেই পরিচিত গ্রামে। প্রায় ৪০০ বছর আগে শুরু মা দুর্গার আরাধনা। উত্তরাধিকার সূত্রে বর্তমানে ঘোষ পরিবার এবং চৌধুরী পরিবারের একাংশ এই পুজোর দায়িত্ব সামলান।
গ্রামে মোট ১১টা বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। তার মধ্যে ৯টা পুজোয় মূর্তি থাকে। বাকি দুটোয় রয়েছে ঘট পুজোর রীতি। পারিবারিক এই পুজোয় মা দুর্গা অধিষ্ঠিত থাকেন কাটা চালিতে। সন্তানদের আগলে রাখেন চতুর্ভুজেই।
প্রতিমার গড়নে রয়েছে সাবেকিয়ানার ছোঁয়া। প্রতিবছর রথের দিনই ঢাকে কাঠি পড়ে যায়। বাড়ির মন্দিরেই তৈরি হয় ঠাকুর। রথের দিন থেকে একটু একটু করে হয় প্রস্তুতি।
কৃষ্ণপক্ষের নবমীতে হয় বোধন। সেদিন থেকে শুরু কল্পারম্ভ। রয়েছে পাঁঠাবলির রীতিও। বোধনের জন্য একটা ঘট আনা হয়। সেই ঘটেই শুরু হয় পুজো। এরপর ১৫ দিন এই ঘটেই হয় নিত্যপুজো। ষষ্ঠী থেকে হয় মূল পুজোর সূচনা। নিয়ম মেনে নবপত্রিকা স্নানও।
গ্রামে যে কটা বাড়িতে পুজো হয়, প্রত্যেক পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে এই নবপত্রিকা স্নানে অংশ নেন। সারাবছর না হলেও, পুজোর সময় কদমা তৈরি হয়। প্রতিদিনই থাকে লুচি ভোগ। অষ্টমীর দিন অন্ন খাওয়ার নিয়ম নেই।
তন্ত্র মতে হয় এই পরিবারের দুর্গাপুজো। ষষ্ঠীর রাত পেরিয়ে ভোরের দিকে হয় ষষ্ঠী পুজো। এরপর হয় নবপত্রিকা স্নান। সপ্তমীতে হয় পাঁঠাবলি। এরপর সপ্তমী, সন্ধি পুজো এবং নবমীতে পাঁঠাবলি দেওয়ার রীতি আছে। দেওয়া হয় সাত মণ আতপ ভোগ।
বিসর্জনেও রয়েছে অভিনবত্বের নজির। দশমীতে পঞ্জিকা মেনে হয় দর্পণ বিসর্জন। প্রতিমা নিরঞ্জনের আগে গ্রামের মধ্যেই হয় জমকালো শোভাযাত্রা। গ্রামের ৯টা বাড়ির পুজোই তাতে সামিল হয়। শোভাযাত্রা শেষে একই পুকুরে হয় একে একে হয় প্রতিমা নিরঞ্জন।
ঘোষ পরিবারের সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ বলেন, প্রতি বছর শোভাযাত্রা শেষে হয় গ্রামের দেবতার পুজো। বছরের পর বছর এই নিয়ম চলছে। সেখানে আমাদের সঙ্গে অংশ নেয় মুখোপাধ্যায় পরিবারও। ওই পুজোতেও পাঁঠাবলি দেওয়া হয়। ওই পুজো শেষে শিব মন্দিরে প্রণাম করি আমরা। সবশেষে হয় অপরাজিতা পাঠ। ওই পাঠ শেষ হলে তারপর শুরু হয় আমাদের বিজয়া দশমী।''
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -