Jangal Mahal: রঙ-বেরঙের পাখনা মেলে অবাধ বিচরণ, ময়ূরময় এই গ্রাম এখন পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ
বনদফতরের ধারাবাহিক প্রচারে গ্রামবাসীরা সচেতন হতেই আউশগ্রামের জঙ্গলমহল এলাকার গ্রাম'হেদোগড়িয়া'এখন ময়ূর-ময়ূরীর অবাধ বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। যার টানে ভিড় জমাচ্ছেন দূরদূরান্তের পর্যটকরা। এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে প্রকৃতি বাঁচিয়ে ইকো-ট্যুরিজমের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appহেদোগড়িয়া গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলের মধ্যে ইতিউতি ঘুরে বেড়ায় ময়ূরের দল। কখনও আবার দলবেঁধে চলে আসে লোকালয়ে।ওদের একঝলক দেখতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন পর্যটকরা।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে,কয়েক বছর আগে আউশগ্রাম সংলগ্ন কাঁকসার দেউল এলাকায় পরীক্ষামূলক ভাবে কয়েকটি ময়ূর ছাড়া হয়েছিল। স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাদের বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে পারাতেই ময়ূরের বংশবিস্তার ঘটে।
সঠিক সংখ্যা না জানা গেলেও, প্রাথমিক অনুমান দেউল ও আদুরিয়া জঙ্গলকে কেন্দ্র করে ৩০ কিমি বৃত্তের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ৫০০ বেশী ময়ূর রয়েছে বলে বনদফতর সূত্রে খবর।
স্থানীয় সূত্রে খবর,আউশগ্রামের হেদোগরিয়া ছাড়াও প্রেমগঞ্জ, রাঙাখুলা,আদুরিয়া প্রভৃতি গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় বর্তমানে দলে দলে ময়ূর ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, দু'বছর আগে মাঝেমধ্যে চোখে পড়লেও এখন ঝাঁকে ঝাঁকে ময়ূর দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
এমনই আসা পর্যটক শ্রীলেখা রায় জানান,আউসগ্রামের জঙ্গলমহল এমনতেই আকর্ষনের জায়গা তার উপর উপরি পাওনা দলে দলে ময়ূরের দেখা পাওয়া। এটা দেখে খুবই ভাল লাগছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, 'আগে ময়ূরগুলি জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে লুকিয়ে বেড়াত। এখন মানুষের কাছাকাছি চলে আসছে। তবে আমরা স্থানীয়রা সবসময় খেয়াল রাখি। অপরিচিত কেউ এলে যাচাই করে দেখে নিই তারা চোরা শিকারি কিনা। বনবিভাগ থেকেও ময়ূরগুলির ওপর সবসময়ই নজর রাখা হয়। বনদফতরের কড়া নজরদারী ও গ্রামবাসীদের সচেতনার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
আউশগ্রামের জঙ্গলে ইন্ডিয়ান উলফ বা হেঁরোল, খরগোশ,অজগর, বনমুরগি, বনবিড়াল, থেকে শুরু করে প্যাঙ্গোলিন, সজারু প্রভৃতি প্রাণীও দেখা যায়। এইসব জীবজন্তুর সংখ্যাও এখন বেড়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর। তবে ময়ূর এখন পর্যটকদের কাছে বাড়তি আকর্ষণ।
বর্ধমানের ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন,'আউশগ্রামে ময়ূরের সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে। যদিও সঠিকভাবে গণণা এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এ ছাড়া জঙ্গলে আগুন লাগা যাতে বন্ধ হয় তার জন্য আমরা ধারাবাহিকভাবে প্রচার চালাচ্ছি। জঙ্গলের আগুনেই ময়ূরের ডিম নষ্ট হয়ে যায়। জঙ্গলে অন্যান্য জীবজন্তু রক্ষা পাচ্ছে। গ্রামবাসীদের সহযোগিতাও আমাদের কাছে একটা বাড়তি পাওনা। যার ফলে এই কাজ খুব সহজে করা যাচ্ছে।
প্রত্যন্ত জঙ্গলমহলে ময়ূরের টানে পর্যটকরা আসায় খুশি গ্রামবাসীরাও।প্রকৃতিকে বাঁচানোর মধ্য দিয়ে জঙ্গলমহলে হারিয়ে যাওয়া পশুপাখিদের আনাগোনায় খুশি তারা।এরসঙ্গে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে সম্ভবনাময় এই এলাকায় ইকোটুরিজম গড়ে তোলার দাবী স্থানীয়দের।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -