Sarada Maa: তিনি 'সতেরও মা, অসতেরও মা', সারদা মায়ের ১৭০ তম জন্মতিথিতে অজানা তথ্য
আজ সারদা মায়ের ১৭০ তম জন্মতিথি। বাগবাজার মায়ের বাড়ি থেকে বেলুড়মঠ সর্বত্রই বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। ভোরবেলা বেলুড়ে মঙ্গলারতি দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর স্তব গান, বেদ পাঠ, ভজন, বিশেষ পুজো ও হোম হবে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appদিনভর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যারতি দিয়ে শেষ হবে সারদা মায়ের জন্মতিথি উৎসব। বাগবাজারে মায়ের বাড়িতেও সারাদিন ধরে চলবে বিশেষ পুজো।দুপুরে হোমের আয়োজন করা হয়েছে। করোনা-পর্বের বিধিনিধেষ না থাকায় এবার সারদা মায়ের জন্মতিথিতে বেলুড় ও বাগবাজারে সকাল থেকে ভক্ত সমাগম হয়েছে।
এই আবহে শ্রীশ্রীমায়ের জীবন ও বাণী নিয়ে স্বামী দেবরাজানন্দ মহারাজের একটি আলোচনা থেকে জেনে নেওয়া যাক মায়ের এক কাহিনী। সময়ের হিসেবে প্রায় ১০১ বছর আগের ঘটনা। জন্মতিথিতে মা তখন জয়রামবাটীতেই ছিলেন। তখন নতুন বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। ভক্তসমাগমও অনেক।
গোপেশ মহারাজ (স্বামী সারদেশানন্দ) শ্রী শ্রী মা'র সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে দেখেন তিনি সেখানে নেই। বাড়ির ভিতরে গিয়ে দেখলেন এক অদ্ভূত দৃশ্য। মা ধীর পায়ে পুকুর থেকে তোলা মাছ ধুয়ে রান্না করে সেজো মামির বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন। উৎসবের দিন, তিনি অন্তর্পত্নী তাঁর বিশেষ পথ্যের প্রয়োজন। সে খেয়াল সেদিন কারও নেই। অথচ মা কিন্তু খেয়াল করে সেই কাজটি নিজেই করছেন। সাক্ষাৎ জগদম্বা তিনি মানবরূপে এসেছেন, তিনি যেন সেই মানুষটি। বাড়ির বউ তাঁর ঠাকুরঝির জন্য রান্না করছেন।
আরেকটি ঘটনার কথা ব্যক্ত করেছিলেন গোপেশ মহারাজ নিজেই। শ্রী শ্রী মাতাঠাকুরানীর জন্মতিথি। দেশ দেশান্তরের ভক্তদের যাতায়াত লেগেই ছিল তখন জয়রামবাটীতে। নানা স্থান থেকে সাধু ভক্তের সমাগমও ছিল। উৎসবমুখর ছিল জয়রামবাটি।
মা বলেন, তাড়াতাড়ি করো সকলে, তোমাদের জলখাবার দিতে হবে। বেলা হয়ে যাবে। সমাগত ভক্তগণ আনন্দের সঙ্গে সেই প্রসাদ গ্রহণ করে কীর্তনে মেতে উঠলেন। এরপর দুপুরের আহারের পর্ব। মা সর্বদাই ছেলেদের আগে খাইয়ে দিয়ে তারপর নিজে বসতেন। যদিও সেদিন ভক্তদের ইচ্ছে ছিল মা আগে খাবেন, তারপর সকলে প্রসাদ নেবেন। একজন এগিয়ে সেই আকাঙ্ক্ষার কথা জানালেন। মা নীরবে সায় দিলেন।
নলিনীদিদির ঘরে তিনি ধীরে ধীরে যন্ত্রচালিতবৎ প্রবেশ করে করুণাদৃষ্টিতে সব দ্রব্য দেখলেন। এটা-ওটা একটু-আধটু খাইয়া এক ভক্তের মুখের দিকে তাকাইয়া কাতর স্বরে বলিলেন, ছেলেরা আগে না খাইলে তা গলা দিয়ে নিচে নামে না, যায় না। তাড়াতাড়ি তোমাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করো। এরপর হাতমুখ ধুয়ে দরজায় গোড়ায় ছেলেদের খাবার খাওয়া দেখতে থাকলেন মা। ঠান্ডা হল মায়ের প্রাণ।
গোপেশ মহারাজ লিখেছেন, যে আহাম্মক আজ অগ্রণী হইয়া মা-কে আগে আহার করতে সম্মত করিয়ে বিশেষ আত্মপ্রসাদ লাভ করিয়াছিল, এতক্ষণে তাঁর হুঁশ হইল যে কী কাজ করিলাম। মায়ের খাওয়া নষ্ট করিলাম। নিত্যকার মতো ছেলেদের খাওয়ারের পর মেয়েদের সহিত মা বসিলেই তো ঠিক হত। তিনি স্বস্তিতে খাইতে পারিতেন।
ঐশ্বর্যের দাস আমরা, এই মাধুর্য্য লীলার কথা কীরূপে বুঝিব। মা যে স্নেহপীযূষ মা, ভগবানভাবে সে কথা ভুলতে বসিয়াছি।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -