Delhi MCD Results 2022: সকাল থেকে সমানে সমানে টক্কর, মর্যাদার লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী কেজরী
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ইঙ্গিত ছিলই। কিন্তু প্রত্যাশা ছাপিয়ে গেল আম আদমি পার্টি। ১৫ বছর পর বিজেপি-কে উৎখাত করে দিল্লি পৌরসভার দখল নিল তারা।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appদুপুর ১.৩০টার সময় ২৫০ ওয়ার্ডের দিল্লি পৌরসভার ১৩৪টিতে এগিয়ে ছিল আপ। জয় নিশ্চিত হয়ে যায় ১২৬ আসনে। এগিয়ে ছিল আরও ১০ ওয়ার্ডে। অর্থাৎ মোট ওয়ার্ডের অর্ধেকের বেশি আসনই তাদের দখলে চলে গিয়েছে। বিজেপি-র জয় নিশ্চিত হয়েছে ৯৭ ওয়ার্ডে। কিছু আসনে এগিয়েও রয়েছে তারা। সেই অনুযায়ী ১০০-র কোঠা পেরিয়ে যেতে পারে তারা। তাদের ধারেকাছেও নেই কংগ্রেস। ৯ ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে তারা। এগিয়ে রয়েছে আরও ৩টি ওয়ার্ডে।
বেশ কিছু বুথফেরত সমীক্ষায় আপের জয়ের ইঙ্গিত যদিও আগেই মিলেছিল। ১৫৫ ওয়ার্ড তাদের দখলে যেতে পারে, এমন ইঙ্গিতও দেয় কেউ কেউ। এর আগে, ২০১৭ সালে তৎকালীন ২৭২টি ওয়ার্ডের ১৮১টিতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। ৪৮টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছিল আপ। ৩০টি ওয়ার্ডে জিতে তৃতীয় হয় কংগ্রেস।
বুধবার সকালে গণনা শুরুর পর থেকেই উৎসবের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় আপের কার্যালয়গুলিতে। বেলা বাড়ার সঙ্গে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে যেমন জয়ের খবর আসতে থাকে, ততি ঢোল, কাঁসরের শব্দ শোনা যায় আপের কার্যালয়গুলিতে। নীল-হলুদ বেলুন, আবিরে শুরু হয় উচ্ছ্বাস। বাবা-মায়ের কোলে চেপে নকল গোঁফ লাগানো, গলায় মাফলার পরা কেজরিওয়াল-বেশী একরত্তিদের আনাগোনাও বাড়ে।
তবে জয় সহজ ছিল না আপের জন্য। সকাল থেকে বিজেপি-র সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলেছে তাদের। প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধান বাড়লে নিজের বাসভবনে জরুরি বৈঠক ডাকেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাতে যোগ দেন মণীশ সিসৌদিয়া, রাঘব চাড্ডারা। এমনকি পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মানও যোগ দেন ওই বৈঠকে।
বিগত ২৪ বছরে দিল্লিতে সরকার দখল করা হয়নি বিজেপি-র। তবে কংগ্রেস এবং পরবর্তী কালে আপ আমলেও, দিল্লিতে বিগত ১৫ বছর ধরে পৌরসভা ছিল তাদের দখলে। ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৭০টির মধ্যে ৬৭ আসনে আপ জয়ী হলেও, দু’বছরের মাথায় ২০১৭-র পৌরসভা নির্বাচনেও জয়ী হয় বিজেপি।
এই মুহূর্তে দিল্লিতে বিধানসভায় ক্ষমতায় রয়েছে আপ। আবার কেন্দ্রে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। ফলে দুই দলই দিল্লির প্রশাসনের সঙ্গে জড়িয়ে। তবে দিল্লি পৌরসভা আপের কাছে মর্যাদার লড়াই ছিল। কারণ ১০ বছর আগে পৌরসভাকে তিন ভাগে ভাগ করা হলেও, মেয়াদের আগে বিজেপি-র কার্যকাল শেষ হলে পৌরসভার পুনর্বিন্যাস করা হয়। প্রায় ১ হাজার ৩০০ প্রার্থী এই পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এ বারের পৌর নির্বাচনে দুই দলই প্রচারে কোনও খামতি রাখেনি। একদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত দিয়ে কিছু সংখ্যক বস্তির মানুষজনকে ফ্ল্যাটে পুনর্বাসন দেওয়ার ব্যবস্থা করে বিজেপি। দলের হয়ে প্রচারে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও।
এক বছর আগে থেকে প্রচার শুরু করে দেয় আপ-ও। মূলত আবর্জনা, দূষণের মতো সমস্যা ছিল তাদের নির্বাচনী ইস্যু। বিজেপি যেখানে ‘ডাবল ইঞ্জিন’ তত্ত্ব সামনে রেখে এগোয়, আপ কেজরিওয়ালের প্রশাসনিক বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে তুলে ধরে।
নির্বাচনী প্রচারে সকলের আশ্রয়, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি দেয় বিজেপি। দুর্নীতির প্রশ্নে আপ, কংগ্রেসকতে এক আসনে বসায় তারা। কিন্তু কেজরিওয়ালের যুক্তি ছিল, কেন্দ্রীয় সংস্থা নামিয়ে, অপপ্রচার চালিয়ে, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কৃতিত্বকে এ ভাবে কালিমালিপ্ত করা যাবে না।
বিগত কয়েক বছরে দিল্লিতে আপ যত শক্তি বাড়িয়েছে দিল্লিতে, ততই শিকড় আলগা হয়েছে কংগ্রেসের। পূর্ব দিল্লি নিয়ে এ বার কিছুটা আশা ছিল তাদের। কিন্তু ২০১৯ সালে শীলা দীক্ষিতের মৃত্যুর পর এখনও হৃত জায়গা পুনরুদ্ধারে কোনও আশাই দেখতে পাচ্ছে না তারা। বরং এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ই তার প্রমাণ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -