Rupali Ganguly: 'অনুপমা'র মতো 'বেচারি' নন রূপালী, বাস্তবে অন্যের সংসার ভেঙেছেন? নায়িকার বিরুদ্ধে সরব সৎ মেয়ে
বাবা ছিলেন পরিচালক। সিনেমায় নায়িকা হয়েছেন তিনিও। বাংলা, হিন্দি, দুই ভাষাতেই কাজ করেছেন। কিন্তু সাফল্য পান টেলিভিশনে। 'সারাভাই ভার্সেস সারাভাই' এবং সর্বোপরি 'অনুপমা', বাঙালি অভিনেত্রী রূপালী গঙ্গোপাধ্যায়কে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে। মহিলাদের আপনজন হয়ে উঠেছেন তিনি। কিন্তু এবার বিতর্কে রূপালী নিজেই। তাঁর দিকে আঙুল তুলে অনেকেই সিরিয়াল ছেড়েছেন। এবার রূপালীর সৎ মেয়েই তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appস্বামী অশ্বিন কে বর্মা, ছেলেকে নিয়ে সংসার রূপালীর। অশ্বিনকে বিয়ে করার জন্য বহু বছর অপেক্ষা করতে হয় তাঁকে, অনেক ঝড়-ঝাপটা পোহাতে হয় বলে আগে অনেকবার মুখ খুলেছেন রূপালী। এমনকি তিনি যাতে অভিনয় করতে পারেন, তার জন্য অশ্বিন ছেলে-সংসার সামলেছেন, নিজের কেরিয়ারের সঙ্গে আপস করেছেন বলেও জানিয়েছেন। কিন্তু এবার রূপালীর বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুললেন তাঁর সৎ মেয়ে, অশ্বিনের আগের পক্ষের সন্তান এষা বর্মা।
সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন এষা। তাঁর দাবি, সিরিয়ালে নিপীড়িত নারীর চরিত্রে অভিনয় করেন রূপালী। স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, পরিবারের লাঞ্ছনার শিকার মহিলার ভূমিকায় অভিনয় করে পুরস্কার পেয়েছেন রূপালী, প্রতিপত্তি হয়েছে তাঁর। কিন্তু বাস্তবে রূপালী অন্যের সংসার ভেঙে নিজে সুখী হয়েছেন। একজন বাবাকে তাঁর সন্তানের থেকে আলাদা রেখেছেন।
সংবাদমাধ্যমে এষা বলেন, আমি ভেঙে পড়েছিলাম। স্কুলে গিয়েও কাঁদতাম। কারম একজন মহিলা হঠাৎ আমাদের জীবনে প্রবেশ করেন, আমার মা-বাবার বিয়ে ভেঙে দেন, আমার মাকে মারধরও করেন উনি। শেষ পর্যন্ত ওঁকে জিতে যেতে দেখে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছিল। শুধু রূপালীর দিকে আঙুল তুলছি না আমি, আমার বাবারও দোষ দেখি আমি। বাবাও শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চালানো এক ব্যক্তি। প্রথমবার মুখ খোলার পর ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমি। আমাকে পোস্ট তুলে নিতে বলে বাবা।
এষা জানিয়েছেন, তাঁর যখন দু'বছর বয়স, রূপালী এবং অশ্বিনের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। তাঁর যখন ১৩ বছর বয়স, বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান অশ্বিন। আমেরিকায় তাঁদের বাড়িতেও যাতায়াত ছিল রূপালীর, এমনকি সেখানে তাঁর মা-বাবার ঘরেই রূপালী রাতে ঘুমাতেন। রূপালী তাঁর মায়ের গয়নাও চুরে করেন বলে দাবি এষার।
রূপালীর আগে আরও দু'বার বিয়ে করেন অশ্বিন। প্রথম বিয়ে নিয়ে তেমন কিছু জানা যায় না। ১৯৯৭ সালে প্রাক্তন মিস কর্নাটক, স্বপ্না কে বর্মাকে বিয়ে করেন তিনি। আমেরিকার নিউ জার্সিতে মেয়েকে নিয়ে সংসার পাতেন তাঁরা। ২০১৩ সালে রূপালী এবং অশ্বিন বিয়ে করেন। সে বছর ২৫ অগাস্ট তাঁদের ছেলে জন্ম নেয়। এষার দাবি, বাবা তাঁদের ছেড়ে চলে যাওয়ার পর, রোজগারের জন্য নানা রকমের কাজ করেন তাঁর মা। একাধিক পার্টটাইম কাজ নেন। একাহাতে তাঁকে বড় করেন।
এষা জানিয়েছেন, তাঁর চেয়েও অনেক কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে তাঁর মাকে। বাবা অত্যাচার করেছেন, রূপালীও অত্যাচার করেছেন। মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাঁকে। মাথার উপর থেকে ছাদ চলে যায় তাঁদের। সম্পত্তির দলিল পর্যন্ত পাল্টে নিজের নামে সব করিয়ে নেন রূপালী। এত অন্যায়ের পরও রূপালীকে জিতে যেতে দেখতে হচ্ছে তাঁদের। রূপালী তাঁকেও নির্যাতন করেছেন বলে দাবি করেছেন এষা।
অশ্বিন এবং রূপালীর সঙ্গে এষার একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে হাসিমুখেই দেখা যায় সকলকে। যদিও এষার দাবি, তিনি বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় জোরাজুরি করেই ওই ছবি তোলানো হয় তাঁকে। সেই ছবি যে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া হবে, তা আঁচ করতে পারেননি তখন।
এষার বক্তব্য, দু'জনেরই সমান দোষ দেখি আমি। কিন্তু একটা কথা না বলে পারছি না। রূপালী নিজেকে যেভাবে তুলে ধরেন সকলের সামনে, নারীর অধিকার নিয়ে যে বড় বড় কথা বলেন, 'অনুপমা'য় যে চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি, বাস্তবে তার সঙ্গে মেলানো যায় না তাঁকে। সিরিয়ালে ওঁর স্বামী অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে, ওঁকে ঠকায়। কিন্তু বাস্তবে উনি নিজে সংসার ভেঙেছেন। উনি আমার বাবাকে ডিভোর্স পেপার ধরানোর নির্দেশ দেন। বাবা ভারতে পালিয়ে যেতেন ওঁর সঙ্গে থাকার জন্য।
অশ্বিন 'বাইপোলার' বলেও দাবি করেন এষা। কখনও রেগে থাকতেন, কখনও ওঁকে দেখলে ভয় হতো, কখনও আবার ভাল থাকতেন। তাঁর দাবি, অশ্বিন তাঁকে অবহেলা করেছেন বলেও দাবি এষার। তাঁর দাবি, স্বপ্নাকে দু'বার ডিভোর্স পেপার ধরান অশ্বিন। তার পর কিছু না বলেই ভারতে পালিয়ে যান। রূপালীর সঙ্গে বিয়ের খবর প্রকাশ হতেই বিষয়টি স্পষ্ট হয় তাঁদের কাছে।
এষার এই দাবি ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি রূপালী। তবে এষা যে তাঁর মেয়ে, তা মেনে নিয়েছেন অশ্বিন। তাঁর দাবি, আগের পক্ষের দুই মেয়ে আছে তাঁর। মা-বাবার বিচ্ছেদ নিয়ে তাঁদের মনে ক্ষোভ থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অশ্বিন।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -