Ashok Kumar Birthday: প্রযোজকের স্ত্রী পালালেন নায়কের সঙ্গে, ল্যাব থেকে ডাক পড়ল শ্যুটিংয়ে, সেই অশোককুমারই বলিউডের ‘দাদামণি’
পর্দায় তিনি আবির্ভূত হওয়া মানেই চোখ আটকে যাওয়া দর্শকের। তাঁর হাত ধরেই হিন্দি চলচ্চিত্রে গ্ল্যামারের সংযুক্তি ঘটেছিল বলে মনে করেন ফিল্ম বোদ্ধারা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিভা খুঁজে বার করে বড় পর্দায় মেলে ধরেছিলেন তিনি। তাই প্রিয়জন তো বটেই, মায়ানগরীর কাছে আজও তিনি ‘দাদামণি’।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appবৃহস্পতিবার জন্মবার্ষিকী অশোক কুমারের। আসল নাম কুমুদলাল গঙ্গোপাধ্যায়। ১৯১১ সালের ১৩ অক্টোবর বিহারের ভাগলপুরে জন্ম। বাবা ছিলেন আইনজীবী। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন বড়। বোন সতীদেবীর বিবাহ হয় শশধর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তার পর ১৬ বছরের ছোট ভাই কল্যাণ, সিনেমাপ্রেমীরা তাঁকে চেনেন অনুপকুমার নামে। সকলের ছোট আভাস, কিংবদন্তি কিশোরকুমার।
তবে বয়সে সকলের থেকে বড় হলেও, চার ভাইবোনের মধ্যে অশোককুমারের আয়ু ছিল সকলের চেয়ে বেশি। চোখের সামনে ভাই-বোনেদের চলে যেতে দেখেছিলেন। ১৯৮৭ সালে নিজের জন্মদিনে ছোটভাই কিশোরের মৃত্যুর পর, জন্মদিন পালন বন্ধ করে দেন।
বাবা চেয়েছিলেন বড় ছেলে তাঁর মতোই আইনজীবী হোন। সেই মতো কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি করেন। কিন্তু পরীক্ষায় ফেল করেন অশোককুমার। .বাবার ভয়ে বাড়ি ফেরেননি। পরের পরীক্ষা পর্যন্ত মুম্বইয়ে বোনের বাড়িতে ছিলেন কয়েক মাস। সেই সময় হাতখরচের টাকা তুলতেই শশধরের বম্বে টকিজে ল্যাব সহকারির কাজ জোটে। তাতেই সিনেমার প্রতি আকর্ষণ জন্মায়।
কিন্তু ছেলের সিনেমার জগতে বিচরণ মেনে নিতে পারেননি অশোককুমারের বাবা। তাতে মধ্যস্থতা করতে হয় শশধরকে। প্রথম পাঁচ বছর ল্যাব সহকারির কাজেই খুশি ছিলেন অশোককুমার। একটি দুর্ঘটনাই তাঁকে অভিনয়ে নামতে বাধ্য করে। বম্বে টকিজের ‘জীবন নাইয়া’ ছবির শ্যুটিং চলছিল।
সেই সময় নায়ক নাজম-উল-হাসান অভিনেত্রী দেবিকা রানিকে নিয়ে পালিয়ে যান। দেবিকা রানির স্বামী হিমাংশু রাই ছিলেন বম্বে টকিজের মালিক। পরে দেবিকা রানি স্বামীর কাছে ফিরে আসেন। কিন্তু নাজমকে আর নায়ক করতে রাজি হননি হিমাংশু। তাতেই কুমুদলাল থেকে অশোককুমার হয়ে বড়পর্দায় অবতরণ ঘটে ‘দাদামণি’র।
হিন্দি চলচ্চিত্র দুনিয়া অশোককুমারের মতো বহুমুখী প্রতিভা খুব কমই দেখেছে। নায়ক থেকে খলনায়ক, অথবা পার্শ্বচরিত্র, সব চরিত্রেই সাবলীল। প্রথম হিট ছবি ‘অচ্ছুত কন্যা’। ভারতীয় চলচিত্রের প্রথম অ্যান্টি হিরো অশোককুমার। জ্ঞান মুখোপাধ্যায়ের ‘কিসমত’ ছবিতে পকেটমারের চরিত্রে অভিনয়। ওই ছবি প্রথম ভারতীয় ছবি, যা এক কোটি টাকার বেশি ব্যবসা করে।
সুদীর্ঘ কেরিয়ারে ‘চল চল রে নওজওয়ান’, ‘শিকারি’, ‘সাজন’, ‘মহল’, ‘মশাল’, ‘সংগ্রাম’-এর মতো ছবি উপহার দিয়েছেন। বম্বে টকিজের প্রযোজকও হন পরে। ‘জিদ্দি’ ছবি বলিউডকে উপহার দেয় দেব আনন্দ, প্রাণের মতো অভিনেতা।
‘নীলকমল’ এবং ‘মহল’ ছবিতে রাজ কপূর এবং মধুবালার সঙ্গেও দেশকে পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। পরে টেলিভিশনেও ‘হম লোগ’ সিরিয়ালে দেখা যায় অশোককুমারকে।
দেশ-বিদেশ থেকে অজস্র সম্মান এবং পুরস্কার পেয়েছেন অশোককুমার। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ভারত সরকারের ‘পদ্মশ্রী’, ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান। এ ছাড়াও দাদাসাহেব ফালকে, সঙ্গীত নাটক অকাডেমি, জাতীয় পুরস্কারও রয়েছে ঝুলিতে। ২০০১ সালের ১০ জিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বাবা-মায়ের পছন্দ করা পাত্রী শোভার সঙ্গে বিয়ে হয় অশোককুমারের। তাঁদের তিন ছেলেমেয়ে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -