Prosenjit Chatterjee Exclusive: দেড় বছর শ্যুটিং বন্ধ, অবসাদ গ্রাস করছিল: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়
করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে টলিউড। একের পর এক ছবির কাজ শেষ করছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। দেড় বছর পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা কেমন? এবিপি লাইভের সঙ্গে অকপট আড্ডায় মজলেন টলিউডের 'ইন্ডাস্ট্রি' প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appপ্রায় ২ বছর পর ফের ক্যামেরার সামনে। করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে একের পর এর ছবির শ্যুটিং শেষ করছেন তিনি। লাইটস, ক্যামেরা অ্যাকশান শুনে কেমন লাগছে? প্রসেনজিৎ বললেন, 'গত দেড় বছর শ্যুটিং ছাড়া থাকাটা খুব কঠিন ছিল। আমি এমনই একটা মানুষ, যে প্রায় ৪০ বছর ধরে কেবল শ্যুটিং করে আসছি। এটার বাইরে আমি আর কিছু জানি না, পারিও না।'
প্রসেনজিৎ আরও বলেন, 'গত দেড় বছরে শ্যুটিং ছাড়া যেন ডিপ্রেশানে চলে যাচ্ছিলাম। আমি খুব বেছে ছবি করি, তাই রোজ শ্যুটিং করতে হয়। তবে শ্যুটিংয়ের আগের পরের প্রস্তুতি, সবার সঙ্গে মেশা.. বাড়িতে থেকেছি কতক্ষণ! তারপর আস্তে আস্তে সুরক্ষাবিধি মেনে শ্যুটিং শুরু হল।'
কেবল টলিউডে নয়, মুম্বইতেও ওয়েব সিরিজের শ্যুটিং সারছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বললেন, 'শুধু কলকাতা নয়, বম্বেতেও আমার একটা কাজ চলছে। কাজ ভালো হলে শ্যুটিং, মেকআপ, স্টুডিও, স্টুডিও চা বুম্বাদার খুব ভালো লাগে এটা সবাই জানে।'
হিন্দি ওয়েবসিরিজে কাজ করছেন তিনি। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির ওয়েব প্ল্যাটফর্মগুলি নিয়ে কী ভাবেন তিনি? প্রসেনজিৎ বলছেন, 'বাংলায় খুব কম প্ল্যাটফর্ম থাকলেও সেগুলো সবাই খুব ভালো কাজ করছে। এই প্ল্যাটফর্মগুলোর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল অনেক নতুন অভিনেতা অভিনেত্রী থেকে শুরু করে পরিচালকেরা সুযোগ পাচ্ছেন। এটা শুধু কলকাতায় নয়, মুম্বইতেও।'
প্রসেনজিৎ আরও বলেন, 'টিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য একজন মারাঠি অভিনেতাও গোটা দেশে তারকা হয়ে যাচ্ছে। অনেক বাঙালি তারকাদের নামে মুম্বইতে ফ্যানস ক্লাব রয়েছে। সেটা শুধুমাত্র ওটিটির দৌলতেই সম্ভব। তাঁর মধ্যে অন্যতম একজন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। ওকে বলাতে ও বিশ্বাস করেছি।'
সিনেমার পর্দাকে কী কখনও চ্যালেঞ্জ করবে ওটিটি? প্রসেনজিৎ বলছেন, 'সিনেমাহল সবসময়েই থাকবে। তবে ওটিটিতে অন্যরকম কাজ হচ্ছে আর সেগুলো যে মানুষ দেখছেন, এই বিষয়টা আমার বেশ ভালো লাগছে।'
কেবল ওয়েব প্ল্যাটফর্ম নয়, করোনা পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়া মানুষের জীবনের সঙ্গে যেন কয়েকগুণ জড়িয়ে গিয়েছে। বুম্বাদার ক্ষেত্রেও কি অবস্থাটা একইরকম? অভিনেতা বলছেন, 'আমি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে যেতে চাই না।'
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে কতটা অকপটে মেলে ধরতে পারেন প্রসেনজিৎ? অভিনেতা বলছেন, 'তবে আমি উত্তম জ্যেঠুর ওই কথাটা এখনও বিশ্বাস করি, 'পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে পেট্রোল নিস না। কারণ আমরা তো স্বপ্ন বিক্রি করি। সিনেমা একটা ইলিউশান। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি যদি খুব গল্প বলতে শুরু করি বা ছবি পোস্ট করতে শুরু করি.. আজকাল দর্শকরা, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মরা খুব স্পর্শকাতর। তারা তো আগে থেকেই গল্পটা বুঝে যাবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি কতটা বলব আর কতটা বলব না সেটা আমি নিজে ঠিক করব। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্তমানে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাউকে ছোট করার জন্য নয়। আমি হাত জোড় করে আবার বলছি, সোশ্যাল মিডিয়া কাউকে ছোট করার প্ল্যাটফর্ম নয়, এটা নিজেকে প্রকাশ করার জায়গা।''
গোটা কেরিয়ার জুড়ে একের পর এক ব্লকবাস্টার,মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ছবি। তবু কোনও ছবির অফার ছাড়ার আফশোস রয়েছে অভিনেতার? প্রসেনজিৎ বলছেন, 'ছবির অফার ছাড়ার আফশোস কখনও করিনি। বম্বের খুব বড় ছবি, সুপারহিট ছবিও আমি করে উঠতে পারিনি। সেটা হিসেবের ভুল বা সময়.. তার জন্য কখনও আফশোস করিনি। কেবল এখন নয়, অল্প বয়সেও কখনও আফশোস করিনি। কারণ আমার গর্ব হয় যে কেবল বাংলা ছবিতে অভিনয় করে আমি এমন একটা জায়গায় নিজেকে নিয়ে গিয়েছি, যেখানে ১০টা মানুষকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে যাওয়া হলে আমি তার মধ্যে একজন হই। ভাবতে ভালো লাগে আমি রাজ্য, আমার ভাষার প্রতিনিধিত্ব করি। কেবল বাংলা ছবিতে ভর করেই আমায় ভারতবর্ষের মানুষ চেনেন।'
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -