Sandhya Mukhopadhyay Demise: পঞ্চভূতে বিলীন শরীর, চিরকালের জন্য ছুটি নিলেন গীতশ্রী
তারার দেশে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সুরের জগত চিরদিনের জন্য হারাল রামধনু রঙ। চিরকালের মত ছুটি নিলেন গীতশ্রী।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In App। রবীন্দ্রসদন থেকে কেওড়াতলা পর্যন্ত শেষযাত্রায় অনুরাগীদের সঙ্গে পা মেলালেন মুখ্যমন্ত্রী। পা মিলিয়েছিলেন অসংখ্য অনুরাগীও।
পূর্ণ মর্যাদায় গীতশ্রীকে চিরবিদায়। রবীন্দ্রসদনে শেষশ্রদ্ধা জানালেন শিল্পী থেকে রাজনীতিকরা।
পূর্ণ মর্যাদায় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। প্রয়াত গীতশ্রী কেওড়াতলা মহাশ্মশানে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে গান স্যালুটে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পিস ওয়ার্ল্ড থেকে মরদেহ রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমি হয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রবীন্দ্রসদনে।
বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রবীন্দ্র সদনে শায়িত থাকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মরদেহ। রবীন্দ্রসদনে শেষ শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
রুপোলি পর্দায় স্বপ্নের তুলিতে রামধনু আঁকত তাঁর গান, তাঁর সুর। কিংবদন্তি শিল্পী কিন্তু শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখছিলেন ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁ সাহেবের কাছ থেকে। সব ধরণের সঙ্গীতেই ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে যেন রঙ হারাল সুরের জগৎ।
আজ শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের (Sandha Mukherjee)। তাঁকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সঙ্গীতশিল্পী সুরজিৎ বলছেন, 'গতকাল খবরটা যখন পেলাম, প্রথমেই মায়ের কথা মনে হল। ছোটবেলায় রান্না করতে করতে মা একের পর এক গাইতেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গান। এমনকি তিনি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গলা নকল করারও চেষ্টা করতেন। সেইসব শুনে শুনেই আমরা বড় হয়েছি। গীতশ্রীর গোটা জীবনটা গান নিয়েই কেটে গেল। তবে কেবল গান বা অধ্যাবসায় নয়, শেখবার ছিল ওঁর জীবনযাত্রাও। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে উনি যে কথা বলতেন, তা সবার থেকে আলাদা। আমাদের আগের প্রজন্মের এই মানুষগুলো হারিয়ে গেল।'
এবিপি আনন্দর অনুষ্ঠানে এসে সঙ্গীতশিল্পীর সঙ্গে কাটানো বিশেষ মুহূর্তের কথা ভাগ করে নিলেন সঙ্গীতশিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায় (Raghav Chatterjee)। রাঘব বলছেন, বাড়ি থেকে বেশি বেরতেন না সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandha Mukherjee)। কথা হত ফোনে ফোনে। রাঘব বলছেন, 'আমার আর সন্ধ্যাদির মধ্যে যোগসূত্র ছিল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় খেয়াল, ঠুংরি, দাদরা থেকে শুরু করে ছবির গান, সবকিছুকেই নিজের মতো করে গেয়েছেন। এত মিষ্টি গলা আর এত বৈচিত্র্য ওনার মতো মানুষের পক্ষেই সম্ভব। সমস্ত গানকে অনুভব করে গাইতেন উনি। আমার সঙ্গে মূলত রাগ রাগিনী নিয়ে কথা হত। উনি আমায় শোনাতেন কী কী বন্দিশ উনি শুনেছেন। ওনার কথা আমার কাছে বেদবাক্যের মত ছিল। উনি ফোন করে বলতেন, তুই এই রাগটা জানো? কী কী রাগের কী কী বন্দিশ জানো আমায় শোনাও। দিদি ফোন করলেই আমি হাতে সময় নিয়ে, হারমোনিয়াম নিয়ে বসতাম। যে কোনও সময় উনি গান শুনতে চাইবেন। ওনাকে দিদি বলতাম কিন্তু আমার মায়ের থেকেও বড় ছিলেন উনি।'
দীর্ঘ জীবন, বয়স ছাপ ফেলেছে শরীরে। কিন্তু গলা, সেই কিশোরীর মত সুলোলিত, কোমল। কেবল অনুশীলন নাকি ঈশ্বরের কৃপা? সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কথা মনে করলে এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করে আম আদমি থেকে শুরু করে সঙ্গীতজগতের মনেও। এবিপি আনন্দের অনুষ্ঠানে এসে কিংবদন্তি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত (Swagatalaxmi Dashgupta)। এবিপি আনন্দর অনুষ্ঠানে এসে স্বাগতালক্ষ্মী বলছেন, 'অনুশীলন আমিও করি আমার ছাত্র-ছাত্রীরাও করে। কিন্তু সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ঈশ্বর প্রদত্ত, ঈশ্বর নির্বাচিত। কেবল অনুশীলন করে এই ক্ষমতা পাওয়া যায় না। দীর্ঘ জীবন ধরে মানুষকে সুরে ডুবিয়ে রাখার জন্যই উনি পৃথিবীতে এসেছিলেন। আমার সঙ্গে ওনার যখনই কথা হয়েছে, সবসময় অনুশীলনের ওপর জোর দিতেন উনি। বলতেন অনুশীলন ছাড়া বিকল্প নেই।'
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -