Sanjay Mishra Birthday: অভিনয় ছেড়ে ধাবায় অমলেট বানানোর কাজ নিয়েছিলেন, পরিচালকের জোরাজুরিতে ফেরেন, বিদেশেও পুরস্কৃত সঞ্জয়
প্রায় তিরিশ বছরের অভিনয় জীবন। মূল চরিত্র পেয়েছেন হাতেগোনা কয়েকটি। বাকি ছবিতে পার্শ্বচরিত্র হয়েই রয়ে গিয়েছেন। কিন্তু সঠিক অর্থে বলিউডে ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ যদি কাউকে বলা যায়, তিনি বলেন অভিনেতা সঞ্জয় মিশ্র।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appশুধুমাত্র অভিনয় ক্ষমতার জোরেই দর্শকের মন জয় করেছেন সঞ্জয়। তাঁর কমিক টাইমিং-এর সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন না অনেকেই। নাম না জানলেও, তাঁর মুখ চেনেন না এমন মানুষের সংখ্যা কম। আজীবন লড়াই করে এই প্রাপ্তি তাঁর। জন্মদিনে অভিনেতা সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে রাখুন।
বিহারের দ্বারভাঙায় জন্ম সঞ্জয়ের। কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকে কর্মরত ছিলেন তাঁর বাবা শম্ভুনাথ মিশ্র। সঞ্জয়ের পিতামহ ছিলেন জেলাশাসক। সেই পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা সঞ্জয় পড়াশোনায় আগ্রহী ছিলেন না। বারাণসীর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্র।
এর পর দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় সুযোগ পান সঞ্জয়। তথাকথিত পড়াশোনায় মন ছিল না সঞ্জয়ের। দশম শ্রেণিতে দু’বার ফেল করেন তিনি। বরাবরই অভিনয়, সিনেমাই তাঁকে টানত বলে জানিয়েছেন। দিদাকে দেখেই তিনি অনুপ্রাণিত হন। কারণ সঞ্জয়ের দিদা পটনা রেডিও স্টেশনে গান গাইতেন। ছুটিতে সেখানে গেলে তিনিও রেডিও স্টেশনে দিদার সঙ্গী হয়ে যেতেন।
১৯৯১ সালে মুম্বইয়ে পা রাখেন সঞ্জয়। টুকরো টাকরা কাজ পেলেও, ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত লাইটিং, আর্ট ডিরেকশন এবং ক্যামেরার কাজ করেই রোজগার করতেন। সেই সময় শুধুমাত্র বড়াপাও খেয়ে দিন কাটত বলেও জানিয়েছেন।
১৯৯১ সালে ‘চাণক্য’ নামের একটি টেলিভিশন সিরিজে সুযোগ পান সঞ্জয়। কিন্তু প্রথম দিনেই লজ্জায় প্রায় মাটিতে মিশে গিয়েছিলেন। কারণ তাঁর অভিনয় মনে ধরেনি পরিচালকের। ২৭টি শট বাতিল হওয়ার পর ২৮তম বার তাঁর অভিনয় পছন্দ হয় পরিচালকের।
১৯৯৫ সালে পূর্ণদৈর্ঘ্যের হিন্দি ছবিতে প্রথম সুযোগ। শাহরুখ খান অভিনীত ‘ওহ্ ডার্লিং! ইয়ে হ্যায় ইন্ডিয়া’ ছবিতে ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করেন সঞ্জয়। কিন্তু ১৯৯৯ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপের একটি বিজ্ঞাপনে ‘অ্যাপল সিংহ’ চরিত্রই পরিচিত দেয় সঞ্জয়কে।
এর পর ২০০৫ সালে ‘বান্টি অউর বাবলি’ সঞ্জয়ের কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এর পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একে একে ‘অল দ্য বেস্ট’, ‘ধামাল’, ‘গোলমাল’ ছবিতে কাজের সুয়োগ পান। টেলিভিশনে ‘অফিস অফিস’ তাঁকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে।
‘অফিস অফিস’-এ কাজ করার সময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সঞ্জয়। পাকস্থলীর সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়। শোনা যায়, তাঁর পেটের ভিতর থেকে ১৫ লিটার পুঁজ বার করেছিলেন চিকিৎসকেরা। এর ১৫ দিনের মাথায় সঞ্জয়ের বাবা মারা যান।
বাবার মৃত্যুর পর আর মুম্বই ফিরতে চাননি সঞ্জয়। ঋষিকেশে চলে যান। একটি ধাবায় অমলেট বানানোর কাজ নেন। সেখানে তাঁকে দেখে চিনতে পারেন লোকজন। তাতেও মন গলেনি সঞ্জয়ের। পরিচালক রোহিত শেট্টিই তাঁকে বলিউডে ফিরে আসতে কার্যত বাধ্য করেন।
বড় বাজেটের চেয়ে কম বাজেটের ছবিই বেশি পছন্দ সঞ্জয়ের। ছবির দৌলতে দেশ ঘুরে দেখাও পছন্দ তাঁর। হিন্দি ছাড়াও ভোজপুরি, পাঞ্জাবী, তেলুগু এবং তামিল ছবিতেও অভিনয় করেছেন। ‘আঁখোঁ দেখি’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান। ‘মাসান’ ছবির জন্য ইন্ডিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল লস অ্যাঞ্জেলস-এও পুরস্কৃত হন। ‘জলি এলএলবি’ ছবিতে মাত্র একরাতে নিজের চরিত্রের শ্যুটিং সারেন। ‘বাদশাহো’ ছবির শ্যুটিংয়ের সময় দাদা কোমায় চলে যান। তা জেনেও শ্যুটিং চালিয়ে যান সঞ্জয়।
ড্রামা স্কুলে পড়ার সময় প্রথম বার বিয়ে করেন সঞ্জয়। কিন্তু সেই বিয়ে টেকেনি। তাই দ্বিতীয় বিয়েতে আপত্তি ছিল। মায়ের জোরাজুরিতে দেখেশুনে ২০০৯ সালে ফের বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ছবি তোলা এবং রান্নার শখও রয়েছে সঞ্জয়ের। আচারি মাটন এবং পেপার চিকেন তাঁর পছন্দের। ‘পিঙ্ক ফ্লয়েড’-এর গান পছন্দ করেন।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -