Sonu Sood on Covid19: অক্সিজেন প্ল্যান্টের ব্যবস্থা, করোনা আক্রান্তদের এয়ারলিফ্ট.. ২০২১ সালেও সোনু সুদ 'মসিহা'ই
তিনি করোনাকালের 'মসিহা'। সোনু সুদ। বলিউডের খলনায়ক এখন বাস্তবে অনেকেই কাছেই নায়ক। অক্সিজেন, বেড, রেমডিসিভির, চিকিৎসা, খাবার, পরিবহণ... মুশকিল আসান সোনু সুদ। সাহায্যের আবেদন এলেই যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন তিনি। সম্প্রতি নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। সেরেও উঠেছেন। কিন্তু থেমে থাকেনি তাঁর সাহায্য। করোনা পরিস্থিতিতেও ক্রমাগত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন তিনি। একেবারে প্রথম বছরের মতই দ্বিতীয় বছরে মানুষের স্বার্থে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তিনি। এই ৫ মাসে করা সোনুর কোন কোন কাজ দাগ কেটেছে মানুষের মনে। দেখে নেওয়া যাক।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appকরোনা আক্রান্তদের সাহায্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে যোগানের ব্যবস্থা করতে ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশ থেকে অক্সিজেন প্ল্যান্ট আনছেন সোনু সুদ। দিল্লি ও মহারাষ্ট্র সহ দেশের সর্বাধিক করোনা বিধ্বস্ত রাজ্যগুলিতে অনন্ত চারটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর পরিকল্পনা করেছেন সোনু সুদ। তিনি বলেছেন, অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাবে বহু মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। আমরা অক্সিজেন সিলিন্ডার হাতে পেয়েছি এবং সেগুলি লোকজনকে দেওয়া হচ্ছে। এই অক্সিজেন প্ল্যান্টগুলি থেকে হাসপাতালগুলিতে সরবরাহের পাশাপাশি অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলি ভর্তি করা যাবে। এর ফলে কোভিড আক্রান্ত রোগীদের জন্য সেগুলি কাজে আসবে।'
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও সেখানে সোনু সুদ তুলে ধরেছিলেন এক গভীর সমস্যার কথা। দেশে ক্রমশই গুরুতর হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। অনেকেই ভাইরাস প্রকোপে হারিয়েছেন প্রিয়জনকে। এদের মধ্যে রয়েছে শিশুরাও। তাঁদের কথা উঠে এল সোনু সুদের কথায়। ভিডিওতে সোনু বলছেন, ' আমি আজ সরকার ও যাঁরা সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে চান এমন মানুষদের কাছে একটা অনুরোধ করতে চাই। আমরা দেখেছি, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনেকেই তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়ে ফেলেছেন। কেউ মা কে হারিয়েছে, কেউ বাবা কে। কেউ আবার উভয়কেই। এদের মধ্যে কারও বয়স ৮, কারও ১২ বা তারও কম। আমার বার বার মনে হয় এই সমস্ত শিশুদের ভবিষ্যতের কী হবে?' সোনু আরও যোগ করেল, 'আমার মনে হয়, এমন একটি নিয়ম হওয়া উচিত যাতে এই সমস্ত শিশুদের পড়াশোনা নিখরচায় হয়। সরকারি, বেসরকারি যে যেই বিদ্যালয়েই পড়ুক না কেন তাঁদের পড়াশোনা নিখরচায় হোক। এমনকি মেডিক্যাল থেকে শুরু করে তাদের ক্ষেত্রে যে কোনও ক্ষেত্রেই শিক্ষায় অর্থ খরচ হওয়া উচিত নয়।'
অন্য একটি ভিডিও শেয়ার করে সোনু বলেছেন, 'রোজ প্রায় গড়ে সাড়ে তিনশো জন মানুষকে হারিয়ে ফেলছি আমরা। আমি সমস্ত সরকারের কাছে হাত জোড় করে আবেদন করছি, এই পরিস্থিতিতে অন্তত শেষকৃত্যের টাকা সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হোক। এতে যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁরা অন্তত শান্তিতে শেষ বিদায়টুকু জানাতে পারবেন। সেইসময় টাকার কথা ভাবতে হবে না।' শ্মশান বা কবরস্থানে জায়গার অপ্রতুলতার কথাও ভিডিওর মধ্যে তুলে ধরেন সোনু।
অভিনেতা সোনু সুদ এক রিয়েলিটি শো-র বিচারক। সেখানেই এক প্রতিযোগী কাতর স্বরে তাঁর গ্রামের কথা জানিয়েছিলেন সোনুকে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় লকডাউন ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। করোনার শৃঙ্খল ভাঙতে যা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হলেও দিন-আনি, দিন-খাই লোকেদের বাস যে নিমাচ গ্রামে, সেখানকার লোক পড়েন চরম সমস্যায়। দু-বেলা দু'মুঠো খেতে পর্যন্ত তারা পাচ্ছেন না বলে সোনুর কাছে কান্নায় ভেঙে পড়েন রিয়েলিটি শো-র প্রতিযোগী উদয়। যিনি নিজেও পেশায় দিনমজুর। যার পরই সোনু তাঁকে জানান, 'উদয় আমি তোমার মাধ্যমে তোমার সমস্ত গ্রামবাসীকে বলতে চাই ওখানে একমাস, দু'মাস, ছ'মাস যতদিনই লকডাউন হোক না কেন, সকল গ্রামবাসী যাতে রেশন পায় সেই ব্যবস্থা আমি করব। গ্রামবাসীদের চিন্তা করতে বারণ করো। তোমার গ্রামের কেউ অভুক্ত থাকবে না, সে লকডাউন যতদিনই চলুক না কেন।'
সম্প্রতি কোভিড আক্রান্ত এক রোগীকে এয়ারলিফ্ট করে নাগপুর থেকে হায়দরাবাদ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করলেন সোনু। ২৫ বছরের কোভিড আক্রান্ত ভারতীকে সোনুর সাহায্য নিয়েই নাগপুরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, ভারতীর ফুসফুসের যত্ন নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে। চিকিৎসার জন্য তাঁকে হায়দরাবাদ নিয়ে যেতে পারলে ভালো হয়। তখনই ফের ঝাঁপিয়ে পড়েন সোনু। অন্য কোনও যানবাহনে ভারতীকে হায়দরাবাদ নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাতে অনেকটা সময় লাগত। ভারতীর জরুরি ছিল একমো সাপোর্ট।আগে থেকেই হায়দরাবাদের হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে সেই ব্যবস্থা করে ফেলেন সোনু। এরপর এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করো ভারতীকে নিয়ে যাওয়া হয় হায়দরাবাদে। যদিও দুর্ভাগ্যবশত বাঁচানো যায় নি ভারতীকে।
একইভাবে সোনু সুদ ঝাঁসি থেকে এয়ারলিফ্ট করে হায়দরাবাদে পৌঁছে দিলেছিলেন করোনা আক্রান্তকে। করোনা আক্রান্ত কৈলাস অগ্রবাল ঝাঁসির বাসিন্দা। করোনার উপসর্গ দেখা দিতেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানকার হাসপাতালে জানানো হয়, চিকিৎসার জন্য আরও উন্নত পরিকাঠামো প্রয়োজন তাঁর। অর্থাৎ বড় হাসপাতাল। কৈলাসের পরিবার অনেক হাসপাতাল ঘুরেও খালি পাননি কোনও বেড। স্থানীয় এমএলএর কাছে গিয়েও কোনও ফল হয়নি। এরপরেই ট্যুইটারে সোনু সুদের দ্বারস্থ হল তাঁরা। আবেদনের কথা সোনুর কাছে পৌঁছলে তিনি খবর নিয়ে জানতে পারেন, রোগীর অবস্থা সংকটজনক। তখনই হায়দরাবাদের অ্যাপোলো হাসপাতালে ওই রোগীর জন্য আইসিইউ বেডের ব্যবস্থা করেন তিনি।' সমস্যার শেষ হয়নি এখানেই। সংকটজনক রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে এতটা রাস্তা নিয়ে আসা অসম্ভব। উপায় একমাত্র এয়ারলিফট। অথচ গোটা ঝাঁসিতে কোথাও বিমানবন্দর নেই। ঝাঁসিতেই পৌঁছে গিয়েছিল সোনুর টিম। তাঁরাই গোয়ালিয়র নিয়ে যায় ওই রোগীকে। সোনু বলছেন, 'সবচেয়ে সমস্যার কাজ ছিল সব জায়গা থেকে অনুমতি নিয়ে, নিয়ম মেনেও কতটা তাড়াতাড়ি রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়।'
এবার টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটারের পাশে দাঁড়ালেন বলিউড হাঙ্ক সোনু সুদ। টুইটারে ৬৫ বছরের আত্মীয়ের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার চেয়েছিলেন রায়না। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ট্যাগ করে এই বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। যা দেখে উত্তর দেন সোনু। রায়নাকে জানান, ১০ মিনিটের মধ্যেই অক্সিজেন পৌঁছে যাচ্ছে।
তবে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানো থেকে শুরু করে বহু শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়া। ভবিষ্যতে সোনু সুদকে সম্ভবত সবচেয়ে জনদরদি অভিনেতা হিসাবেই মনে রাখবেন মানুষ
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -