Nancy Tyagi: করোনায় UPSC স্বপ্নের বিসর্জন, সেলাই মেশিনকে সম্বল করেই Cannes-এ ঐশ্বর্যা-কিয়ারাকে মাত এই মেয়ের
বিদেশি আদব কায়দা ঠিক আসে না তাঁর। কথাবার্তায় এখনও গ্রাম্য টান রয়েছে যেমন, সারল্যের ছাপ রয়েছে চেহারায়। তাই বলে আত্মবিশ্বাস টাল খায়নি। তাই কান চলচ্চিত্র উৎসবের (Cannes Film Festival) রেড কার্পেটে হিন্দিতেই গড়গড় করে কথা বলে গেলেন। দেশ-বিদেশের তাবড় তারকাদের মাঝে তাই আলাদা করে নজর কাড়লেন ন্যান্সি ত্যাগী। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appবয়স সবে ২০ পেরিয়েছে ন্যান্সির। কিন্তু Gen-Zদের কাছে অতি পরিচিত নাম তিনি। ন্যান্সির কর্ম পরিচিতি হল, তিনি একজন ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সার। উপলক্ষ্য অনুযায়ী জামাকাপড়, সাজগোজের টিপস দেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ডিজাইনার পোশাক পরতে অভ্যস্ত তারকাদের জামাকাপড়ের সাশ্রয়ী বিকল্পের সন্ধানও দেন। নিজেহাতে তৈরি করেন নজরকাড়া পোশাক। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
কান চলচ্চিত্র উৎসবেও সেভাবেই নজর কাড়লেন ন্যান্সি। নিজের তৈরি করা বল গাউন পরেই Cannes-এর লাল গালিচায় পা রাখেন ন্যান্সি। তবে কোথাও নার্ভাস দেখায়নি তাঁকে। আবার অতি উৎসাহিতও হয়ে পড়েননি। সামনে থেকে ইংরেজিতে প্রশ্ন এলে, নিজের গ্রাম্য হিন্দি ভাষাতেই কথা বলেন তিনি। মাঝে থেকে মধ্যস্থতা করেন একজন দোভাষী। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
ন্যান্সি জানিয়েছেন, ১০০০ মিটার কাপড় কিনে এনে ২০ কেজি ওজনের বল গাউনটি নিজেহাতেই তৈরি করেছেন তিনি। ৩০ দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে গোলাপি রঙের গাউনটি গায়ে চাপানোর উপযুক্ত হয়। নিজের মন-প্রাণ একেবারে ঢেলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু Cannes-এর মঞ্চে পৌঁছে বুঝতে পারছেন, পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
দেশ-বিদেশের নামী তারকাদের সঙ্গে Cannes-এর রেড কার্পেটে হাঁটার সুযোগ পেয়ে আপ্লুত ন্যান্সি। তাঁর কথায়, “আমি আপ্লুত, আনন্দিত। এত ভালবাসা এবং সমর্থন পেয়ে কৃতজ্ঞ। স্বপ্ন সত্যি হল আমার। আপনাদের সমর্থন আমাকে যতটা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে, আশাকরি আমার সৃজনশীলতা ততটাই মুগ্ধ করবে আপনাদের।” ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
বলিউড তারকা এবং অন্য সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারদেরও প্রশংসা কুড়িয়েছেন ন্যান্সি। অভিনেত্রী তথা সোশ্যাল মিডিয়া তারকা কুশা কপিলা লেখেন, ‘Cannes তোমার চেয়ে ভাল কাহিনি পায়নি। কাঁপিয়ে দিয়েছো’। অভিনেত্রী ভূমি পেডনেকর ন্যান্সিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
২১ বছর বয়সি ন্যান্সির জন্ম উত্তরপ্রদেশের বরনাবায়। স্কুলের পাট চুকিয়ে দিল্লি এসেছিলেন ন্যান্সি। লক্ষ্য ছিল UPSC পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করা। কিন্তু বাবার সায় ছিল না তাতে। তাই বাবার কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পাননি ন্যান্সি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
ওই কঠিন সময়ে ন্যান্সির পাশে ছিলেন তাঁর মা। একসঙ্গে দিল্লি চলে আসেন ন্যান্সি, তাঁর মা এবং ভাই। দিল্লিতে একটি কারখানায় মজুর হিসেবে কাজে যোগ দেন ন্যান্সির মা। ন্যান্সি জানিয়েছেন, দিনের শেষে যখন বাড়ি ফিরতেন তাঁর মা, কয়লার কালি লেগে থাকত তাঁর শরীরে। কিন্তু মেয়ের স্বপ্নপূরণে সব কষ্ট স্বীকার করে নিয়েছিলেন তাঁর মা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
বেশ কিছুদিন এভাবে চললেও, করোনার সময় লকডাউন কার্যকর হলে, বিপাকে পড়েন ন্যান্সি এবং তাঁর মা। আমদানি যেটুকু ছিল বন্ধ হয়ে যায়। ন্যান্সির ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। শুধুমাত্র টাকা রোজগারের জন্যই সেই সময় অনলাইন কনটেন্ট তৈরিতে মন দেন ন্যান্সি। কিছু টাকা জোগাড় করে ক্যামেরা, আলো এবং ফোন কেনেন। সম্বল বলতে ছিল একটি সেলাই মেশিন। সেটিকে কাজে লাগিয়ে নিজের হাতের কাজ, নিজের তৈরি জামাকাপড় সকলের সামনে তুলে ধরতে শুরু করেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
প্রথম প্রথম নিজের তৈরি জামা নিজেই পরে দেখাতেন ন্যান্সি। পরে অনলাইন কেনা পোশাকও পরে দেখাতে শুরু করেন। কিন্তু তাতে প্রথম দেড় বছর তেমন সাড়া মেলেনি। বরং গায়ের চাপা রং, রোগা-পাতলা চেহারার জন্য কটাক্ষের শিকার হতে হয় তাঁকে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
এর পর তারকাদের ডিজাইনার পোশাক অনুকরণের ভাবনা মাথায় আসে তাঁর। বলিউড তারকারা যে মহার্ঘ ডিজাইনার পোশাক পরতেন, দিল্লির অলিগলি থেকে একই রকমের কাপড় কিনে এনে রেপ্লিকা তৈরি করতে শুরু করেন। দেওয়ালে শাহরুখ খানের পোস্টার এবং সামনে সেলাই মেশিনে পোশাক বানাতে ব্যস্ত ন্যান্সির সেই ভিডিওগুলি নজর কাড়তে শুরু করে সকলের। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। Cannes-এ নিজের তৈরি যে পোশাক পরে গিয়েছেন ন্যান্সি, সেটিও তাঁর নিজের তৈরি, দিল্লির অলিগলি থেকে কেনা কাপড় দিয়েই তৈরি। তাই ন্যান্সিকে ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন সকলে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে সংগৃহীত।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -