15 years of 26/11 Attacks: ফাঁসি হয়েছে শুধু কসাভের, তার পর থেকে তারিখ আর তারিখ, দেড় দশক পর কোথায় দাঁড়িয়ে ২৬/১১ তদন্ত
নয় নয় করে দেড় দশক পার। ২০১২ থেকে ২০২৩, কিন্তু ২৬/১১ মুম্বই হামলার ক্ষত এখনও দগদগে। বিশেষ করে প্রিয়জনকে হারিয়েছিলেন যাঁরা, বিচারের আশায়, সব অপরাধীর শাস্তির আজও দিন কাটছে তাঁদের।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In App২৬/১১ মুম্বই হামলার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে চলতি বছরই কিছুটা এগিয়েছে মুম্বই পুলিশ। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত, কানাডার ব্যবসায়ী তাহাবুর রানাকে প্রত্যর্পণে উদ্যোগী হয়েছে তারা।
এখনও পর্যন্ত ২৬/১১ মুম্বই হামলা সংক্রান্ত একটি মামলার বিচারই সম্পন্ন হয়েছে। জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার হওয়া আজমল কাসভের ফাঁসি হয়েছে ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর। তাহাবুরকে ভারতে আনা গেলে, পৃথক শুনানি শুরু হবে।
আর এক অভিযুক্ত, জাইবুদ্দিন আনসারি ওরফে আবু জুন্দলের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তগ্রহণও এখনও আটকে রয়েছে। হামলার রাতে পাকিস্তানের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা থেকে ১০ জনকে নিয়ে মুম্বই শহরে ঢোকা, সবকিছুর হোতা এই জাইবুদ্দিন।
১৫ বছর আগে, হামলার রাতে অত্যন্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন মুম্বই পুলিশে কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর তুকারাম ওম্বলে। খালি হাতে কসাভের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন তিনি। নিজে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেলেও, আশেপাশের মানুষের গায়ে গুলি লাগতে দেননি। তুকারাম কসাভের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ানোতেই, কসাভকে জীবিত অবস্থায় বাগে আনার পরিকল্পনায় সফল হন তুকারামের সহকর্মীরা।
হামলার পর পর একাধিক মামলা দায়ের করেছিল মুম্বই পুলিশ। প্রত্যেক থানার এক্তিয়ার অনুযায়ী পৃথক মামলা দায়ের হয়েছিল। পরে জানা যায়, পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা হামলার ষড়যন্ত্র রচনা করে। এর পর সামগ্রিক ভাবে মুম্বই পুলিশের অপরাধদমন শাখা তদন্তভার গ্রহণ করে।
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই মামলায় প্রথম চার্জশিট জমা পড়ে।১১ হাজার পাতার চার্জশিটে ২ হাজার সাক্ষীর উল্লেখ করা হয়। অভিযুক্ত হিসেবে ৩৫ জনের উল্লেখ ছিল, যার মধ্যে নাম ছিল হাফিজ সইদেরও। কসাভ এবং দুই ভারতীয়কে গ্রেফতার করা হয়।
মুম্বই হামলায় আইনজীবী উজ্জ্বল নিকমকে সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগ করে মহারাষ্ট্র সরকার। গোড়ার দিকে কোনও আইনজীবী কসাভের হয়ে মামলা লড়তে রাজি হননি। তাতে আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
২০০৯ সালে শুনানি শুরু হয়। ২০১০ সালের ৩ মে খুন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা-সহ একাধিক ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় কসাভকে। গ্রেফতার হওয়া বাকি দু’জন খালাস পেয়ে যান।
এর পর, ২০১০ সালের ৬ মে কসাভকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানা বিশেষ আদালতের বিচারপতি এমএল তহলিয়ানি। ২০১১ সালে বম্বে হাইকোর্ট এবং ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশ বহাল রাখে। কসাভের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতিও।
কসাভের শুনানি চলাকালীনই, ২০১২ সালে জাইবুদ্দিন আনসারি ওরফে আবু জুন্দলকে গ্রেফতার করার কথা আদালতে জানায় পুলিশ। জানানো হয়, ভারতীয় নাগরিক জবিউদ্দিন কসাভকে হিন্দি শেখান। কসাভই জেরায় সেকথা জানিয়েছে।
২০১২ সালের অক্টোবর মাসে জবিউদ্দিনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে আসে আরও ১২ জন পাকিস্তানি নাগরিকের। কসাভের ফাঁসির পর, তার কুঠুরিতেই রাখা হয় জবিউদ্দিনকে। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে একাধিক বার আদালতের দ্বারস্থ হন আনসারি। অনির্দিষ্ট কালের জন্য জেলে আটকে রাখা, মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ তুলে অনশনেও বসেন।
২০১৫ সালে জবিউদ্দিনের শুনানি শুরু হয়। তিনি আবু জুন্দল নন বলে জানান জবিউদ্দিন। ২০১৫ সালে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত, মার্কিন নাগরিক ডেভিড হেডলির ক্ষমাভিক্ষার আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। মুম্বই হামলায় রেইকির কাজ হেডলি করেছিলেন বলে জানা যায়। বর্তমানে আমেরিকার জেলে ৩৫ বছরের সাজা কাটাচ্ছেন হেডলি। তাঁকে প্রত্যর্পণ করার আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে।
২০১৬ সালে আনসারির বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দেন হেডলি। কিন্তু বম্বে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর, ২০১৮ সাল থেকে আনসারির বিরুদ্ধে মামলার শুনানি স্থগিত রয়েছে। এ বছর অক্টোবর মাসে রানার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা পড়ে। বর্তমানে আমেরিকায় আটক হয়ে রয়েছেন রানা। তাঁকে প্রত্যর্পণের আর্জিও আটকে রয়েছে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -