Alexander The Great: সুবিশাল সাম্রাজ্য গড়তে গিয়ে মুখদর্শনই হয়নি সন্তানের, দিগ্বিজয়ী আলেকজান্ডারের ছেলেদের পরিণতিও হয় মর্মান্তিক
ইতিহাস এবং রাজনীতিতে আগ্রহ রয়েছে অথচ গ্রিক রাজা ‘আলেকজান্টার দ্য গ্রেট’-কে চেনেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ইতিহাসের এক বহুল সমালোচিত চরিত্র তিনি। সুদূর গ্রিস থেকে অবিভক্ত ভারতের পশ্চিম পর্যন্ত সাম্রাজ্য বিস্তারের অনন্য নজির রয়েছে তাঁর।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appবিতর্ক, সমালোচনা থাকবেই, কিন্তু বীরত্ব এবং সাহসিকতার সমার্থক হিসেবেও আলেকজান্ডারকে দেখেন ইতিহাসবিদদের একাংশ। তাই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, বিশেষ করে বংশধরদের নিয়ে কৌতূহল থাকাও স্বাভাবিক।
অলিখিত ভাবে যাঁর নামের পাশে ‘মহান’ শব্দটি জুড়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেই আলেকজান্ডারের সন্তানদের কীর্তি সম্পর্কেও জানার আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু খুব কম সংখ্যক মানুষই সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। ইতিহাসেও তেমন বিশদ বর্ণনা মেলে না। যেটুকু মেলে, তা অত্যন্তই মর্মান্তিক।
মাত্র ২০ বছর বয়সে ম্যাসিডোনিয়ার সিংহাসনে আরোহন করেন আলেকজান্ডার। তার পর মাত্র ১২ বছর বেঁচেছিলেন। তার মধ্যেই বলকান থেকে অধুনা পাকিস্তান পর্যন্ত সাম্রাজ্য বিস্তার করেন। তাঁর হাতে গড় ওঠা সাম্রাজ্যের জুড়ি আজও মেলেনি ইতিহাসে। কিন্তু আলেকজান্ডারের সন্তানরা সেই সাম্রাজ্য ভোগ করার সুযোগই পাননি।
মতান্তর থাকলেও, ইতিহাসে আলেকজান্ডারের দুই সন্তানের উল্লেখ পাওয়া যায়, দুই পুত্রসন্তানের। স্ত্রী রোকসানা জন্ম দেন ছেলে চতুর্থ আলেকজান্ডারের। প্রেমিকা বার্সিনের গর্ভে জন্মান ‘হেরাক্লিস অফ ম্যাসিডন’। রোকসানা ছিলেন মধ্য এশিয়ার ব্যাকট্রিয়ার সেনাকর্তার মেয়ে। যুদ্ধজয়ের পর রোকসানাকে বন্দি করেন আলেকজান্ডার। তার পর খ্রিস্টপূর্ব ৩২৭ সালে বিয়ে।
কিন্তু ছেলে চতুর্থ আলেকজান্ডারের মুখ না দেখেই খ্রিস্টপূর্ব ২৩২ সালে ব্যাবিলনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আলেকজান্ডার। তার চার বছর আগে জন্ম ‘হেরাক্লিস অফ ম্যাসিডন’-এর।আলেকজান্ডার তাঁর পিতা কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে যদিও। কারণ জীবিতকালে ‘হেরাক্লিস অফ ম্যাসিডন’-কে ছেলে বলে স্বীকৃতি দেননি আলেকজান্ডার। পরবর্তী কালে ‘হেরাক্লিস অফ ম্যাসিডন’-কে আলেকজান্ডারের ছেলে হিসেবেই গন্য করেন ইতিহাসবিদরা।
‘হেরাক্লিস অফ ম্যাসিডন’-এর পরিণতিও সুখকর হয়নি। তাঁকে বন্দি করেন পলিপারকন। ক্যাসান্ডারের সঙ্গে সেই সময় গোপন চুক্তি হয় তাঁর। চতুর্থ আলেকজান্ডারের মৃত্যুর কিছুদিন পরই ‘হেরাক্লিস অফ ম্যাসিডন’-কেও খুন করা হয়। ফলে যে গ্রিক সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আলেকজান্ডার, তা ভোগ করার সুযোগ পাননি তাঁর দুই সন্তানই।
শুধু তাই নয়, আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তাঁর দুই ছেলেকে সিংহাসনে বসানোয় ঘোর আপত্তি ছিল গ্রিক সেনারও। ইতিহাসবিদরা জানিয়েছেন, আলেকজান্ডারের স্ত্রী এবং প্রেমিকা, দু’জনই যেহেতু এশীয়, তাই তাঁদের গর্ভজাত সন্তানকে গ্রিক সাম্রাজ্যের অধিপতি স্বীকারে আপত্তি ছিল সকলের। তাই প্রস্তাব ওঠামাত্র বিদ্রোহ শুরু হয়। যে কারণে আলেকজান্ডারের সৎ ভাই আরিডিয়াস সিংহাসনে বসেন। জন্মের পর চতুর্থ আলেকজান্ডারকে রাজার সহযোগী ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু সিংহাসনে বসলেও, মানসিক ভাবে দুর্বল ছিলেন আরিডিয়াস। তাই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে সফল হননি তিনি। সাম্রাজ্যের দখল পেতে নিজেদের মধ্যে লড়াই শুরু করে দেন আলেকজান্ডারের সৈন্য-সামন্তরা। সেই আবহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন আলেরকজান্ডারের মা অলিম্পিয়াস। চতুর্থ আলেকজান্ডারের অভিভাবিকার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। সেনাপতি পলিপারকনের নেতৃত্বে আরিয়াডিউসকে বন্দি এবং হত্যা করান।
সেই সময় অলিম্পিয়াস এবং পলিপারকনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন আর এক সেনাকর্তা ক্যাসান্ডার। খ্রিস্টপূর্ব ৩১৬ সালে অলিম্পিয়াস এবং চতুর্থ আলেকজান্ডারকে বন্দি করেন তিনি। অলিম্পিয়াসকে হত্যা করান। ক্যাসান্ডারের হাতে বন্দি থাকেন চতুর্থ আলেকজান্ডার এবং রোকসানা। সেই অবস্থায় ম্যাসিডনের শাসনকার্য পরিচালনা করতে শুরু করেন ক্যাসান্ডার। কিন্তু সিংহাসন হারানোর ভয় তাড়া করে বেড়াচ্ছিল তাঁকে। তাতে খ্রিস্টপূর্ব ৩০৯ সালে তিনি কিশোর বয়সি চতুর্থ আলেকজান্ডার এবং রোকসানাকে হত্যা করান।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -