EPFO Investment: আদানির দুই সংস্থায় EPFO-র টাকা! ফের প্রশ্নের মুখে সরকার, 'মোদানি' তোপ বিরোধীদের
ভারতী জীবন বিমা। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পর এ বার এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশনের বিনিয়োগ ঘিরে বিতর্ক। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পরও আদানি গোষ্ঠীতে EPFO-র তরফে বিনিয়োগ অব্যাহত বলে অভিযোগ। আদানি গোষ্ঠীর দুই সংস্থা, আদানি পোর্টস এবং আদানি এন্টারপ্রাইজেস-এ EPFO-র বিনিয়োগ চলছে বলে খবর।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appচলতি সপ্তাহেই বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে EPFO-র বৈঠক চলছে। সেখানে চলছে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা। তার মধ্যেই আদানি গোষ্ঠীতে বিনিয়োগের খবর সামনে এল। এমনকি এ বছর সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠী থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা EPFO-র নেই বলে জানা গিয়েছে।
সংগঠিত কর্মক্ষেত্রে যুক্ত প্রায় ২৮ কোটি ভারতীয়ের সঞ্চয় রয়েছে EPFO-তে। সেই টাকা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে। ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সাধারণ মানুষের সেই টাকা থেকে ১.৫৭ লক্ষ কোটি বিনিময় ব্যবসা তহবিল অর্থাৎ এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডস-এ বিনিয়োগ করেছিল EPFO, যা কিনা সরাসরি ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি ৫০ এবং বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে সংযুক্ত।
২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে আরও ৩৮ হাজার কোটি টাকা বিনিময় ব্যবসা তহবিলে EPFO-র তরফে বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে খবর। সব মিলিয়ে ২.৫৪ লক্ষ কোটির বিনিয়োগের কথা জানা যাচ্ছে। আদানি গোষ্ঠীর দুই সংস্থা, আদানি পোর্টস এবং আদানি এন্টারপ্রাইজেস-এর স্টকেই সেই টাকা মূলত বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে খবর।
জালিয়াতি, কারচুপির ভূরি ভূরি অভিযোগে বিদ্ধ আদানি গোষ্ঠী। তার জেরে শেয়ার বাজারে তাদের পতন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই আবহে LIC, SBI-এর পাশাপাশি EPFO-কে নিয়েও আশঙ্কা দেখা দেয়। তাই কোথায়, কত বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা নিয়ে স্বচ্ছতার দাবি ওঠে। সেই আবহে আদানি গোষ্ঠীতে EPFO-র বিনিয়োগের বিষয়টি সামনে এল।
সোমবার থেকে EPFO-র বৈঠকে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। কেন্দ্রীয় শ্রম এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু EPFO-র ট্রাস্টিদের দাবি, আদানি গোষ্ঠীতে বিনিয়োগের বিষয়ে কিছুই জানা নেই তাঁদের। সরকারি বিধি-নিয়ম মেনেই বিনিয়োগ হয়েছে এবং কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা সংগঠনের খাতে প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের কথা জানা নেই বলেও জানানো হয়।
কিন্তু হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টেরও পরও কেন আদানি গোষ্ঠীতে বিনিয়োগ হয়ে চলেছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কংগ্রেসের তরফে বিষয়টিকে ‘আদানিমহাস্ক্যাম’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের দাবি, এখনও আদানি গোষ্ঠীতে বিনিয়োগ করে চলেছে EPFO. অথচ ট্রাস্টিরা তার বিন্দুবিসর্গও জানেন না।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘LIC-র টাকা আদানিকে! SBI-এর টাকা আদানিকে! EPFO-র টাকাও আদানিকে! ‘মোদানি’র পর্দাফাঁসের পরও সাধারণ মানুষের অবসরকালের টাকা আদানির সংস্থায় কেন বিনিয়োগ করা হচ্ছে? প্রধানমন্ত্রীজি, না কোনও জবাব, না কোনও তদন্ত‘ এত ভয় কিসের?’
উদ্ধব ঠাকরে শিবিরের শিবসেনা সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘সংস্থায় মোটা টাকা বিনিয়োগকারী যারা রয়ে গিয়েছে, তারা হল, সরকার ব্যাঙ্ক, অবসরকালীন তহবিল। জীবন বিমা। মানুষের পরিশ্রমের টাকা কোথায় যাচ্ছে!’
সূত্রের খবর, আদানি এন্টারপ্রাইজে ছ’মাস হল বিনিয়োগ করছে EPFO. তাই সেখানে বিপদের ঝুঁকি তুলনামূলক কম। কিন্তু বছরের পর বছর আদানি পোর্টে যে বিনিয়োগ হয়ে আসছে, তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। সরকারি আধিকারিকদের মতে, আদানি পোর্টে বিনিয়োগে ২০১৬ সালে টাকা হারানোর ঝুঁকি ছিল ১০ শতাংশ। ২০১৭-র মে মাসে তা বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পর বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই। শেয়ার বাজারে যে হারে আদানির স্টকের দাম পড়ছে, তাতে আগামী দিনে প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হারে আরও প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞরা।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -