Exit Poll 2024
(Source: Poll of Polls)
Rajpath History: ঔপনিবেশিকতার অবসান, স্বাধীন ভারতের জন্ম ,বহু ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী, দিল্লির রাজপথ এখন ‘কর্তব্য পথ’
শুধু সংসদভবন চত্বরের রূপরেখা বদলই নয়, দিল্লির ঐতিহাসিক রাজপথও যে মুছতে চলেছে, তার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল কয়েক দিন আগেই। বুধবার তাতে সরকারি সিলমোহর পড়ল। রাজপথের নাম বদলে রাখা হল ‘কর্তব্য পথ’।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appব্রিটেনের রাজা পঞ্চম জর্জের সম্মানে নামাঙ্কিত রাজপথ ঔপনিবেশিক শাসনকালের প্রতীক এবং তা থেকে স্বাধীনতার পথে ফিরতেই এমন পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে সরকার। কিন্তু শুধুই ঔপনিবেশিকতার প্রতীক নয়, শতায়ু রাজপথের সঙ্গে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জড়িয়ে ভারতের ইতিহাস।
ইংরেজদের আমলে রাজপথের নাম ছিল ‘কিংসওয়ে’। ১৯২০ সালে এডউইন লুটিয়েন্স এবং হার্বার্ট বেকার নামের দুই স্থপতি তার নির্মাণ করেন। রাইসিনা হিলের রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বিজয় চক হয়ে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এই রাজপথ।
রাজপথের দু’পাশে সবুজ ঘাসের গালিচা, টলটলে জলের খাল, সারি সারি গাছ, এ যাবৎ লুটিয়েন্স দিল্লির অতি পরিচিত দৃশ্য। ১৯১১ সালে কলকাতা থেকে দিল্লিতে রাজধানী সরিয়ে যাওয়ার পর রাজপথ নির্মাণে হাত দেয় তৎকালন ইংরেজ শাসক। ওই একই সময় দিল্লি সফরে আসেন ব্রিটেনের রাজা পঞ্চম জর্জ। এর পর একে একে গড়ে ওঠে প্রশাসনিক ভবনগুলি।
১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হিন্দি তর্জমায় ‘কিংসওয়ে’র নাম হয় রাজপথ। ইংরেজ শাসকের তৈরি ওই রাজপথেই বিগত ৭৫ বছর ধরে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ হয়ে এসেছে, যা ঔপনিবেশিক নির্মাণের উপর স্বাধীতা প্রাপ্তির উদযাপন হিসেবেই এতকাল তা দেখা হতো।
স্বাধীনতার পর পরই রাজপথের আশেপাশের কয়েকটি ভবন নিয়ে হাসপাতাল তৈরির ভাবনা ছিল। সেই নিয়ে জওহরলাল নেহরুকে চিঠিও লেখেন মহাত্মা গাঁধীর অনুগামী সুশীলা নায়ার। তবে জাঁকজমক নয়, সবকিছু ছিমছাম হতে হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
পরবর্তী কালে সর্বসম্মতিতে রাজপথে প্রজাতন্ত্র দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঔপনিবেশিক শাসনের ক্ষতের উপর দাঁড়িয়ে, রক্ত দিয়ে অর্জিত গণতন্ত্রের উদযাপন, অতীতের সঙ্গে বর্তমানের সেতুবন্ধনই ছিল লক্ষ্য।
অন্যায়, অবিচার, শোষণের বিরুদ্ধে, ন্যায় বিচারের দাবিতে আন্দোলনের ক্ষেত্র হিসেবেও রাজপথ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ১৯৮৮ সালের কৃষি আন্দোলন থেকে, নির্ভয়াকাণ্ডের পর গণ আন্দোলন, সর্বোপরি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কেন্দ্রস্থলও হয়ে ওঠে রাজপথ।
সেই রাজপথেরই নাম পাল্টে রাখা হল ‘কর্তব্য পথ’। ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা’ প্রকল্পের আওতায় বদলে ফেলা হয়েছে তার খোলনলচে। আলাদা ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা’ অ্যাভিনিউও গড়ে তোলা হয়েছে।
যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, ইতিহাস মুছে ফেলতেই এমন পদক্ষেপ কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের। ২০১৪-র আগের সবকিছুই বর্তমান সরকার মুছে ফেলতে চায় বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -