Cyrus Mistry Profile: হাতে ধরে কাজ শিখিয়েছিলেন রতন টাটা, দুর্ঘটনায় মৃত্যু সাইরাস মিস্ত্রির
শরীর তখনও নুয়ে পড়েনি। তার আগেই উত্তরাধিকার ঠিক করে ফেলেছিলেন রতন টাটা। সেই মতো নিজেই হাতেধরে খুঁটিনাটি শিখিয়েছিলেন। কিন্তু নিশ্চিন্ত অবসরযাপনের স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। চার বছরের মাথায় সাইরাস মিস্ত্রিকে সরিয়ে ফের হাল ধরতে হয় রতন টাটাকেই।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appতার পর দীর্ঘ আইনি লড়াইও চলেছে। সেই থেকে প্রায় একদশক হতে চলল, এখনও ন্যুজ শরীরে টাটার সাম্রাজ্য চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন রতন টাটা। সাইরাসের সঙ্গে আর কখনও মুখোমুখি হয়েছেন কি না জানা নেই। কিন্তু আর যে দেখা হবে না, তা নিশ্চিত হয়ে গেল। কারণ পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সাইরাসের। বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর।
২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন সাইরাস। রতন টাটার জায়গায় কার্যতই উত্তরাধিকার যায় শাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠীর কর্ণধার, পালোনজি মিস্ত্রির ছোট ছেলে সাইরাসের হাতে। তার আগে টাটায় ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। প্রায় এক বছর রতন টাটা নিজে তাঁকে সংস্থা পরিচালনা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি কাজ শিখিয়েছিলেন।
লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজ অফ সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড মেডিসিন থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সাইরাস। ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করেছেন লন্ডন বিজনেস স্কুল থেকে। ১৯৯১-এ শাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়ার পর আরও বাড়িয়েছেন ব্যবসা। টাটা সন্সের পর্ষদেও শামিল ছিলেন তিনি।
সাইরাস বিদায় নিয়ে টাটার যুক্তি ছিল, টাটা গোষ্ঠী ব্যবসা করে না। বরং বৃহত্তর পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে এগনোর পক্ষপাতী। কিন্তু সাইরাস পাই-পয়সা ছাড়তে নারাজ ব্যক্তি, যা টাটা গোষ্ঠীর মূল্যবোধের পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, সাইরাস বোর্ডের গোপন তথ্য ফাঁস করে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। সাইরাস ক্ষমার অযোগ্য বলে জানায় টাটা।
সাইরাসের আগে বরাবর টাটাদের হাতেই টাটা গোষ্ঠীর দায়িত্ব থেকেছে। একমাত্র ব্যাতিক্রম ছিলেন নৌরজি সাকলাতওয়ালা, যাঁর পদবী টাটা ছিস না। তবে সম্পর্কে জামশেদজি নওরোজির ভাগ্নে ছিলেন তিনি। তবে পারিবাবিক ভাবে সাইরাসও টাটাদের ঘনিষ্ঠ। সাইরাসের বোনের স্বামী নোয়েল টাটা। তার পরও মাত্র চার বছরই টাটায় সাইরাস জমানা স্থায়ী হয়।
২০১৬ সালে সাইরাসকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত করে টাটা। অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে ফিরিয়ে আনা হয় সেই রতন টাটাকেই। গোড়ার দিকে শোনা যায়, সাইরাসের হাতে ব্যবসার হাল তথৈবচ হয়ে পড়ে। কেউ কেউ আবার বলেন, প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্ব বেধেছে।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে জানা যায়, দায়িত্ব হাতে পেয়ে ইন্দোনেশিয়ায় কয়লাখনিতে টাটার ৩০ শতাংশ মালিকানা বিক্রি করে দেন সাইরাস। উত্তরপ্রদেশের ইউরিয়া কারখানা, দক্ষিণ আফ্রিকার টেলিকম সংস্থা নিউটেল-এর অংশীদারিত্বও বিক্রি করে দেন তিনি। ঋণের ভার কমাতেই একের পর এক সংস্থার অংশীদিত্ব বিক্রি করছেন বলে যুক্তি দিলেও, তা মনুঃপুত হয়নি বোর্ডের কারও।
২০১৬ সালে ওয়েল্সপান সৌরক্ষেত্রে কেনার চুক্তিই কাল হয়ে দাঁড়ায়। রতন টাটার অনুমতির তোয়াক্কা না করেই সাইরাস ওই চুক্তি স্বাক্ষর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরই বোর্ডে প্রবেশ ঘটে অজয় পিরামল, বেণু শ্রীনিবাসনের, সাইরাসকে না জানিয়েই। টাটা ট্রাস্ট সংস্থার ৬৬ শতাংশের অংশীদার, যার চেয়ারম্যান রতন টাটা। সাইরাসের কাজকর্মে তিনি অসন্তুষ্ট ছিলেন।
শোনা যায়, শান্তিপূর্ণ ভাবে, সম্মানের সঙ্গে সাইরাসকে সরে যেতে বলা হলেও, তিনি রাজি হননি। তাতেই বোর্ডের নয় সদস্যের ভোটাভুটিতে ছয় সদস্যই সাইরাসকে সরানোর পক্ষে ভোট দেন। এর পর তাঁকে সরানোর ঘোষণা করা হয়। এর পর যদিও আইনি রাস্তা ধরেন সাইরাস। তার পর দীর্ঘ আইনি লড়াই চললেও, টাটায় আর ফেরা হয়নি সাইরাসের। যদিও টাটা সন্সের প্রায় ১৮.৫% অংশীদারি নির্মাণ সংস্থা শাপুরজি-পালোনজি গোষ্ঠীর।
সাইরাস বিদায় নিয়ে টাটার যুক্তি ছিল, টাটা গোষ্ঠী ব্যবসা করে না। বরং বৃহত্তর পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে এগনোর পক্ষপাতী। কিন্তু সাইরাস পাই-পয়সা ছাড়তে নারাজ ব্যক্তি, যা টাটা গোষ্ঠীর মূল্যবোধের পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, সাইরাস বোর্ডের গোপন তথ্য ফাঁস করে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। সাইরাস ক্ষমার অযোগ্য বলে জানায় টাটা।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -